আমাদের কথা
রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন দু’টি সহযুক্ত আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান। সারা পৃথিবীতে বিবিধ জনসেবা ও সমাজসেবা মূলক কাজে প্রতিষ্ঠান দু’টি নিয়োজিত আছে; কোনোরকম রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক চরিত্র থেকে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন সম্পূর্ণ মুক্ত। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসী ও গৃহী মানুষেরা বিশ্বাস করেন – জীবের মধ্যেই শিবের অধিষ্ঠান। এই বিশ্বাসকেই মন্ত্র করে তাঁরা সারা বিশ্ব জুড়ে নানা কাজের মাধ্যমে জাত-পাত-ধর্ম নির্বিশেষে জীবের সেবা করে চলেছেন।
আমাদের – আদর্শ
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের আর্দশের উৎস প্রাচীন ভারতের উপনিষদের বাণী, যাকে শ্রীরামকৃষ্ণ নিজের জীবনে প্রতিফলিত করে আধুনিক যুগের উপযোগী করে তুলেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ এই নতুন ‘ফলিত বেদান্ত’-কে ছড়িয়ে দেন সারা বিশ্বে, এবং রামকৃষ্ণ আন্দোলনের সূচনা হয়। এই আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য হল, এটি আধুনিক – যা একে বর্তমান কালের উপযোগী করে তুলেছে; এটি সর্বজনীন, যা একে সমগ্র মানবজাতির কাছে বরণীয় করেছে; এবং এটি ব্যবহারিক দিক থেকে নির্মেদ ও বাস্তবমুখী, যা একে প্রতিদিনের জীবনের অংশ করে নেওয়ার পক্ষে সহজ করেছে। রামকৃষ্ণ-ভাবাদর্শের মূল কথাগুলি এই:
আমাদের অনুপ্রেরণা
আমাদের সকল অনুপ্রেরণার উৎস, আমাদের সকল শক্তির উৎস, যার নিরন্তর আশীর্বাদ আমাদের পথ-শ্রীঠাকুর, শ্রী মা এবং স্বামীজী
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ
১৮৩৬ খ্রীষ্টাব্দের ১৮ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে ৯৭ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে কামারপুকুর গ্রামে শ্রী রামকৃষ্ণের জন্ম হয়। বাবা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় ও মা চন্দ্রমণি দেবী তাঁদের ভক্তিনিষ্ঠা ও সত্যপরায়ণতার জন্য সুপরিচিত ছিলেন, যদিও আর্থিক সচ্ছলতা তাঁদের ছিল না। শ্রীহরির আশীর্বাদে জন্ম বলে তাঁরা এই শিশুটির নাম রাখেন গদাধর।
শ্রী মা সারদা দেবী
১৮৫৩ সালের ২২ ডিসেম্বর, বাংলার বাঁকুড়া জেলার জয়রামবাটী গ্রামের এক নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ পরিবারে রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ও শ্যামাসুন্দরী দেবীর কোলে শ্রী সারদা দেবীর জন্ম হয়। বাবা রামচন্দ্র ও মা শ্যামাসুন্দরী তাঁদের পবিত্র ও দানশীল স্বভাবের জন্য সুপরিচিত ছিলেন। গ্রামের স্নেহময় পরিবেশে আনন্দে সারদা বড়ো হয়ে উঠতে থাকে।
স্বামী বিবেকানন্দ
১৮৬৩ খ্রীষ্টাব্দের ১২ জানুয়ারী, কলকাতার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে বিশ্বনাথ দত্ত এবং ভুবনেশ্বরী দেবীর কোলে স্বামী বিবেকানন্দ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নামকরণ করা হয়েছিল নরেন্দ্রনাথ – ছোট করে ডাকা হতো নরেন। বিশ্বনাথ দত্ত একজন সফল আইনজীবী ছিলেন। নরেন্দ্রনাথের বাবা ও মা দু’জনেই ছিলেন শক্তিশালী চরিত্রের অধিকারী এবং গভীর নীতিবোধসম্পন্ন।
আমাদের মূলমন্ত্র
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মূলমন্ত্র হল “আত্মনো মোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ” (নিজের মুক্তি ও বিশ্ব কল্যাণ)। স্বামী বিবেকানন্দ এই ধর্মের ব্যাখ্যা করেছিলেন।