শাঙ্করভাষ্য—‘যদস্য ব্রহ্মণো রূপম্‌’ ইতি পূর্বেণ সম্বন্ধঃ।নকেবলমধ্যাত্মোপাধিপরিচ্ছিন্নস্যাস্য ব্রহ্মণো রূপং ত্বমল্পং বেত্থ;

।।১৬।।[পূর্বানুবৃত্তি : ভাদ্র ১৪২৯ সংখ্যার পর] উপাধি সর্বদা পরিচ্ছিন্ন শাঙ্করভাষ্য—‘যদস্য ব্রহ্মণো রূপম্‌’ ইতি পূর্বেণ সম্বন্ধঃ। ন কেবলমধ্যাত্মোপাধিপরিচ্ছিন্নস্যাস্য ব্রহ্মণো রূপং ত্বমল্পং বেত্থ; যদপ্যধিদৈবতোপাধিপরিচ্ছিন্নস্যাস্য ব্রহ্মণো রূপং দেবেষু বেত্থ ত্বম্‌ তদপি নূনং দভ্রমেব বেত্থেতি মন্যেহহম্‌। যদধ্যাত্মং, যদধিদৈবং দেবেষু তদপি চোপা-ধিপরিচ্ছিন্নত্বাদ্দভ্রত্বান্ন নিবর্ততে। ব্যাখ্যা—“‘যদস্য ব্রহ্মণো রূপম্‌’ ইতি পূর্বেণ সম্বন্ধঃ”—বলছেন, মন্ত্রের ‘যদস্য’ অংশটি পূর্বের ‘ব্রহ্মণো রূপম্‌’—এর সাথে সম্বন্ধ হবে। বলছেন, ব্রহ্মের যে এই রূপ, সে কীরকম?—“ন কেবলমধ্যাত্মোপাধি-পরিচ্ছিন্নস্যাস্য ব্রহ্মণো রূপং ত্বমল্পং বেত্থ”—তুমি শুধু এই অধ্যাত্ম-পরিচ্ছিন্নাদি মানে দেহাদিতে পরিচ্ছিন্নরূপে যে-ব্রহ্ম, দেহাদির সঙ্গে অভিন্নরূপে যে-ব্রহ্ম সেই তাঁকেই অল্পরূপে জান—এরকম নয়; “যদপ্যধিদৈবতোপাধি-পরিচ্ছিন্নস্যাস্য ব্রহ্মণো রূপং দেবেষু বেত্থ ত্বম্‌ তদপি নূনং দভ্রমেব” অর্থাৎ অধিদৈবত উপাধি-পরিচ্ছিন্ন ব্রহ্মের যে-রূপ দেবতাদের ভিতরে তুমি দেখ অর্থাৎ জান, ‘তদপি’—সেটিও ‘নূনং দভ্রমেব বেত্থেতি মন্যেঽহম্‌’—অল্পই জান বলে মনে করি। অর্থাৎ ব্রহ্মকে পরিচ্ছিন্নরূপে তুমি জান, অপরিচ্ছিন্ন রূপে জান না। ‘যদধ্যাত্মং যদধিদৈবং তদপি চোপাধিপরিচ্ছিন্নত্বাৎ’—অধ্যাত্ম অর্থাৎ দেহাদিতে যেমন, সেরকম অধিদৈব অর্থাৎ দেবতাদের মধ্যেও যে ব্রহ্মের রূপ, সেটিও উপাধি-পরিচ্ছিন্ন। সুতরাং উভয় রূপই উপাধি-পরিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য ‘দভ্রত্বাৎ [ক্ষুদ্রত্বাৎ]’—ক্ষুদ্রতারূপ, অল্পত্বরূপ দোষ থেকে তা ‘ন নিবর্ততে’—নিবৃত্ত হচ্ছে না। ‘দভ্র’ মানে ক্ষুদ্র। দেহাদি-পরিচ্ছিন্নরূপে যেরকম ক্ষুদ্রতা থাকছে, অধিদেবতাদি-পরিচ্ছিন্নরূপেও সেরকম ক্ষুদ্রতা থাকছে। দভ্রত্ব, ক্ষুদ্রত্ব থেকেই যাচ্ছে। এখানে সসীমত্বই হলো অল্পত্ব। উভয় রূপই সসীম বলে দভ্র অর্থাৎ অল্প। নিরূপাধিক ব্রহ্ম সর্বদা অবিদিত শাঙ্করভাষ্য—যত্তু বিধ্বস্তসর্বোপাধিবিশেষং শান্তমনন্তমেকমদ্বৈতং ভূমাখ্যং নিত্যং ব্রহ্ম ন তৎ- সুবেদ্যমিত্যভিপ্রায়ঃ। ব্যাখ্যা—[তাহলে ব্রহ্মের কোন্‌ রূপটি অক্ষুদ্র অর্থাৎ অল্প নয়—এই প্রশ্নের উত্তরে ভাষ্যকার বলছেন] ‘যত্তু’—যেখানে ‘বিধ্বস্তসর্বোপাধিবিশেষং’—সর্ব উপাধি নাশ হয়ে গেছে, সর্ব উপাধির নিবৃত্তি হয়েছে; এবং যা ‘শান্তম্‌’—সর্ব বিক্রিয়ারহিত [শান্ত মানে সর্ব কল্পনারহিত, যেখানে সমস্ত তর্ক প্রতিহত হয়ে গেছে]; ‘অনন্তম্‌’—অন্তহীন, সীমাহীন [পরিচ্ছেদরহিত]; ‘একম্‌’—‘অদ্বৈতং’—দ্বৈতরহিত; ‘ভূমাখ্যং’—(ভূমা মানে অসীম, বৃহৎ) ভূমা নামক সেই ‘নিত্যং ব্রহ্ম’—নিত্য যে-ব্রহ্ম, [সেটিই হলো ব্রহ্মের অক্ষুদ্ররূপ]; ‘তৎ ন সুবেদ্যম্‌ ইতি অভিপ্রায়ঃ’—তা সুবেদ্য নয় [তোমার সুবেদ্য নয়, কারোরই সুবেদ্য নয়] অর্থাৎ তাঁকে তুমি জানতে পারবে না। তুমি দেহাদি-পরিচ্ছিন্নরূপে তাঁকে বলেছ কিন্তু উপাধির নিষেধরূপে, উপাধিনিরস্তরূপে যে-ব্রহ্ম বা আত্মা [যেটি অক্ষুদ্র] সেটি সুবেদ্য নয়—তাঁকে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in