‘উদ্বোধন’-এর গত মাঘ ১৪২৮ সংখ্যায় ‘ভারতীয় সংবিধান অলংকরণে শিল্পী নন্দলাল বসু’ রচনায় সারনাথে নির্মিত চতুর্মুখ সিংহের ভাস্কর্য বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। মূলত এটি ছিল অশোকের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি স্তম্ভ অনুশাসনের অন্যতম। এফ. ও. ওয়ের্টেল প্রথম এই স্থানে বেলেপাথর-নির্মিত এই স্তম্ভটি আবিষ্কার করেন। এতে সম্রাট অশোকের অনুশাসন খোদিত ছিল। তিনি প্রথমে এই স্তম্ভের শীর্ষদেশ দেখতে পান, যেখানে চারটি সিংহ পিঠোপিঠি অবস্থায় দেখা যায়। এদের মধ্যে প্রস্তরনির্মিত একটি বৃহৎ ধর্মচক্র ছিল। সিংহগুলি একটি ড্রামের ওপর দণ্ডায়মান—যে-ড্রামটিতে সিংহ, হস্তী, বৃষ ও অশ্বের অবয়ব খোদিত ছিল। এগুলি চারটি চক্রের ওপর র‌ক্ষিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শিলালেখটির একদম ওপরের পঙ্‌ক্তিটি ভগ্ন ও চতুর্থ পঙ্‌ক্তিটি ভীষণভাবে ‌ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়াও এই স্তম্ভটিতে রাজা অশ্বঘোষের একটি লেখ রয়েছে, যেটি অশোকের লেখটির শেষ পঙ্‌ক্তির সাথে একইসঙ্গে লিখিত। অশ্বঘোষের এই লেখটির ওপরে আদিগুপ্ত অ‌ক্ষরে আরো একটি বৌদ্ধ লেখ আবিষ্কৃত হয়েছে।

এতদ্ব্যতীত ৩২ পৃষ্ঠায় ‘The Union’-এর ভাষ্যে বোধিবৃ‌ক্ষতলে বুদ্ধদেবের সাথে তাঁর পঞ্চশিষ্যের কথা বলা হয়েছে। এঁরা হলেন মহানাম, কৌণ্ডিন্য (ভ্রমবশত লেখা কণ্ডিন্য), ভদ্দীয় (ভ্রমবশত লেখা ভদ্রজিৎ), বপ্প (ভ্রমবশত লেখা বাষ্প) ও অশ্বজিৎ। সারনাথে বুদ্ধদেব সর্বপ্রথম তাঁর বোধিজ্ঞানলব্ধ ফল তাঁর এই পঞ্চশিষ্যের কাছে প্রদান করেন, যা বৌদ্ধ ঐতিহ্যে ধর্মচক্রপ্রবর্তন-রূপে সমধিক পরিচিত।

ইন্দ্রনীল বড়ুয়া

কলকাতা-৭০০০১৫