পূর্ববঙ্গের (অধুনা বাংলাদেশ) ঢাকাস্থ ফরিদপুরের কবিরাজ কৃষ্ণচন্দ্র সেনের কনিষ্ঠ পুত্র রামপ্রসাদ কলকাতার মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করে ডাক্তারিতে মেতে যান স্বভূমিতে। পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হলেন ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র-দী‌ক্ষিত ভাব-কবি কালীনারায়ণ গুপ্তের কন্যা হেমন্তশশীর সঙ্গে। তাঁদের প্রথম সন্তান এবং একমাত্র পুত্র অতুলপ্রসাদের জন্ম ২০ অক্টোবর ১৮৭১।

পূর্ববঙ্গের (অধুনা বাংলাদেশ) ঢাকাস্থ ফরিদপুরের কবিরাজ কৃষ্ণচন্দ্র সেনের কনিষ্ঠ পুত্র রামপ্রসাদ কলকাতার মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করে ডাক্তারিতে মেতে যান স্বভূমিতে। পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হলেন ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র-দী‌ক্ষিত ভাব-কবি কালীনারায়ণ গুপ্তের কন্যা হেমন্তশশীর সঙ্গে। তাঁদের প্রথম সন্তান এবং একমাত্র পুত্র অতুলপ্রসাদের জন্ম ২০ অক্টোবর ১৮৭১। শিশুবেলা থেকেই তাঁর জীবন ছিল গীতিময়। মাতামহ কালীনারায়ণ এবং পিতা রামপ্রসাদের ব্রহ্মসংগীত সাধনাকালে গলা মেলাতেন বালক অতুলপ্রসাদ। মাঝে-মধ্যে সংগতও করতেন মৃদঙ্গে। গায়ক হিসাবে তাঁর খ্যাতি ছিল স্কুলে। জীবনের চোদ্দ-বসন্তে নাবালক-কলমে গান হয়ে উঠল ব্রহ্মচেতনা—এক আত্মীয়ার অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানে— “তোমারি উদ্যানে তোমারি যতনে উঠিল কুসুম ফুটিয়া। এ নব কলিকা হউক সুরভি তোমার সৌরভ লুটিয়া। প্রাণের মাঝারে নাচিছে হরষ সব বন্ধন টুটিয়া। আজি মন চায়, অঞ্জলি লয়ে ধাই তব পানে ছুটিয়া।... দীর্ঘায়ু হোক এ কোমল শিশু সকলের প্রেমে বাড়িয়া; সে জীবনে প্রভু, যেন কোথা কভু না যায় তোমারে ছাড়িয়া।” সেই শুরু। সূচনাকালেই অকালে প্রয়াত হন পিতা রামপ্রসাদ। মা আর তিন বোনকে সঙ্গী করে পরিবারভুক্ত হলেন দাদামশায়ের। তবে শুরুর যেমন শুরু থাকে তেমনি শুরু স্কুলজীবনে। ছাত্রদের প্রতি স্নেহপ্রবণ ছিলেন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান জনসন পোপ। তাঁর বদলিতে স্কুলের দায়িত্ব নেন বুথ সাহেব। গম্ভীর, রাশভারি, কঠোর বুথ ছিলেন পোপের সম্পূর্ণ বিপরীত। বিচিত্র অঙ্গভঙ্গি করে পড়াতেন ক্লাসে। তাঁর আচরণে মনো‌ক্ষুণ্ণ অতুলপ্রসাদ বন্ধুমহলে লিখলেন— “বুথের প্রধান কাজ অঙ্গভঙ্গি করা। গোলমালে অবস্থির ঘণ্টা হল সারা।। বিদ্যানিধি ডাক্তার রায় বলিতে অ‌ক্ষম। প্রসন্ন তাহাকে ভাবে সদা অনুপম।। সাহেবি ফ্যাসানে দ‌ক্ষ সারদারঞ্জন। বুক ফুলিয়ে হাঁটেন বাবু সূর্যনারায়ণ।।” শৈশবে অতুলপ্রসাদের কাব্যমননে মদত জুগিয়েছেন তাঁর সেজমামা গঙ্গাগোবিন্দ। নবাবপুরের নাট্যমঞ্চে সেজমামার সাহচর্যে জীবনের প্রথম নাটক দেখেন কালিদাসের শকুন্তলা। সেই শিশুমন ভারি হয়ে উঠেছে শকুন্তলার বেদনায়। দু-চোখ ভরে উঠেছেজলে। তাঁর উত্তরকালের গানে ছায়া পড়েছে সেই বেদনার— “বঁধু, ধরো ধরো মালা, পরো গলে, ফিরে দিয়ো না বনকুসুম ব’লে। কাঁটার ঘায়ে রাঙা হাতে ফুল তুলেছি আঁধারে দুঃখ-রাতে; তাহে গেঁথেছি বিজনে আঁখিজলে।” তাঁতিবাজারের নাট্যমঞ্চেও বহু নাটক...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in