বাংলা গীতিকাব্যের জগতে অতুলপ্রসাদ সেনের নাম স্মরণীয় হয়ে আছে। তাঁর জীবনের অনেকটা সময় বাংলার পরিমণ্ডলের বাইরে অতিবাহিত হলেও তাঁর সংগীত ও কবিতা রচনায় কোনো ছেদ পড়েনি। তিনি নিরলসভাবে তাঁর সৃজনশীলতাকে জাগরূক রেখে একদিকে যেমন বাংলা গীতিকাব্যকে সমৃদ্ধ করেছেন, তেমনি অন্যদিকে অশেষ মাধুর্য দান করেছেন।

বাংলা গীতিকাব্যের জগতে অতুলপ্রসাদ সেনের নাম স্মরণীয় হয়ে আছে। তাঁর জীবনের অনেকটা সময় বাংলার পরিমণ্ডলের বাইরে অতিবাহিত হলেও তাঁর সংগীত ও কবিতা রচনায় কোনো ছেদ পড়েনি। তিনি নিরলসভাবে তাঁর সৃজনশীলতাকে জাগরূক রেখে একদিকে যেমন বাংলা গীতিকাব্যকে সমৃদ্ধ করেছেন, তেমনি অন্যদিকে অশেষ মাধুর্য দান করেছেন। অতুলপ্রসাদের ব্যক্তিজীবনের দুঃখ ও যন্ত্রণা তাঁকে তীব্রভাবে পীড়িত করেছে। বিদ্যা, উপার্জন, সামাজিক সম্মান ও কবিত্বের স্বীকৃতি অতুলপ্রসাদ প্রভূতভাবে লাভ করলেও তাঁর পারিবারিক জীবন তাঁকে কখনো প্রার্থিত স্বস্তি ও শান্তি দিতে পারেনি। যন্ত্রণাদগ্ধ অতুলপ্রসাদ অজস্র গীতিকবিতা রচনা করে তাঁর অন্তরতর বেদনাকে পরমের কাছে নিবেদন করে উত্তরণের পথ খুঁজেছেন। তবে সেই প্রয়াস তাঁকে কতটা তৃপ্তি দিয়েছে তা অনুমান করা সহজসাধ্য নয়। কিন্তু তিনি নিরন্তর আত্মনিবেদনের পথে অগ্রসর হতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। অতুলপ্রসাদ সেন ১৮৭১ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকায় মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের লক্ষ্মীবাজারের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা রামপ্রসাদ সেন ও মাতা হেমন্তশশীর পুত্রসন্তানকে কালীনারায়ণ পরম কল্যাণময়ের করুণার প্রসাদ হিসাবে গ্রহণ করে তার নামকরণ করেন ‘অতুলপ্রসাদ’। রামপ্রসাদ সেন প্রথম জীবনে সংস্কৃত ও পারসি ভাষার চর্চা ও শিক্ষকতা করলেও তাঁর মন তৃপ্ত ছিল না। তিনি বিক্রমপুর থেকে কলকাতায় এসে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে পরিচিত হন। দেবেন্দ্রনাথের সহযোগিতায় রামপ্রসাদ কলকাতার মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং পরে ডাক্তারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত করেন। রামপ্রসাদ সেন ব্রাহ্মধর্ম প্রচারে নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন এবং একইসঙ্গে আর্তজনের পাশে থেকে তাদের সেবাদানে তৎপর হয়েছিলেন। প্রতিদিন ভোরে শয্যা ত্যাগ করে রামপ্রসাদ ঊষাবন্দনা করতেন, যা শিশু অতুলপ্রসাদকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। ১৮৮৪ সালে রামপ্রসাদ সেন পরলোকগমন করেন। ফলে বিধবা হেমন্তশশী পুত্র-কন্যাদের সঙ্গে নিয়ে পিত্রালয়ে অবস্থান করেন। তাঁর পিতা কালীনারায়ণ গুপ্ত প্রথম জীবনে বৈষ্ণবধর্মাবলম্বী হলেও পরে ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন। অবশ্য তিনি অন্যান্য ধর্মের ও জাতের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন, যা অতুলপ্রসাদের জীবনে ছায়া ফেলেছিল। কালীনারায়ণ কাউকে কিছু দিতে চাইলে অতুলপ্রসাদের হাত দিয়েই তা দান করতেন, ফলে অতুলপ্রসাদের মনে মানসিক উদারতার ভিত্তিভূমি...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in