যে অবলীলায় শ্রীরামকৃষ্ণ এই সংকেতগুলিকে ব্যবহার করেছেন, তাতে তাঁর

[পূর্বানুবৃত্তি : কার্তিক সংখ্যার পর]।। ৫।। সহজিয়াদের সাধনা বিষয়ে তত্ত্ববিদ সুধীর চক্রবর্তী জানাচ্ছেন : “‘অনুমান’ বলতে বোঝায় কৃষ্ণ রাধা গোলোক বৃন্দাবন মথুরা সখী এইসব, আর ‘বর্তমান’ মানে বাস্তব নরনারী, তাদের দেহ ও দেহধর্ম, কাম ও কাম থেকে উত্তরণ।”১৪২ যে অবলীলায় শ্রীরামকৃষ্ণ এই সংকেতগুলিকে ব্যবহার করেছেন, তাতে তাঁর সহজিয়া-মত সম্পর্কে যে স্পষ্ট ধারণা ছিল সেবিষয়ে সংশয় থাকে না। এই সম্প্রদায় সম্পর্কে তিনি বলেছেন : “যারা এ মতে সিদ্ধ হয়, তারা অন্য মতের লোকদের বলে ‘জীব’। বিজাতীয় লোক থাকলে কথা কবে না। বলে,—এখানে ‘জীব’ আছে। “ও-দেশে এই মতের লোক একজন দেখেছি। সরী (সরস্বতী) পাথর—মেয়েমানুষ। এ মতের লোকে পরস্পরের বাড়িতে খায়, কিন্তু অন্য মতের লোকের বাড়ি খাবে না। মল্লিকরা সরী পাথরের বাড়িতে গিয়ে খেলে তবু হৃদের বাড়িতে খেলে না। বলে ওরা ‘জীব’। (হাস্য) “আমি একদিন তার বাড়িতে হৃদের সঙ্গে বেড়াতে গিছলাম। বেশ তুলসী বন করেছে।” সহজিয়া সাধনা যে অত্যন্ত কঠিন তা শ্রীরামকৃষ্ণ বুঝেছিলেন। এই পথে অত্যন্ত সাবধানে থাকতে হয়, তাই কঠিন। সেকথাও তিনি বলেছেন : “বীরভাব বড় কঠিন। শাক্ত ও বৈষ্ণব বাউলদের আছে। ওভাবে ঠিক থাকা বড় শক্ত।”১৪৩ সহজিয়াদের মানুষ অবলম্বনে সাধনার কথা উল্লেখ করে শ্রীরামকৃষ্ণ তার বিপদের কথাও তুলে ধরেছেন : “বৈষ্ণবচরণকে জিজ্ঞাসা করাতে বললে, যে যাকে ভালবাসে, তাকে ইষ্ট বলে জানলে ভগবানে শীঘ্র মন হয়। ‘তুই কাকে ভালবাসিস?’ ‘অমুক পুরুষকে।’ ‘তবে ওকেই তোর ইষ্ট বলে জান্‌।’ ও-দেশে (কামারপুকুর, শ্যামবাজারে) আমি বললাম—‘এরূপ মত আমার নয়। আমার মাতৃভাব।’ দেখলাম যে লম্বা লম্বা কথা কয়, আবার ব্যাভিচার করে।”১৪৪ আবার এই পথে অনেকেই প্রকৃত আধ্যাত্মিকতার টানে না এসে হয় সংসার ফাঁকি দেওয়ার জন্য, নয়তো ইন্দ্রিয়ভোগ চরিতার্থতার চেষ্টা করে। শ্রীরামকৃষ্ণ বলছেন : “মা-বাপ কি কম জিনিস গা? তাঁরা প্রসন্ন না হলে ধর্মটর্ম কিছুই হয় না।… বাপ-মাকে ফাঁকি দিয়ে ছেলে মাগ নিয়ে, বাউল বৈষ্ণবী সেজে বেরয়।”১৪৫ শ্রীরামকৃষ্ণ সাধারণের পক্ষে এই সাধনা অনুমোদন করেননি, কারণ স্ত্রীলোক নিয়ে সাধনে পতনের সম্ভাবনাই বেশি। একদিন যখন নরেন্দ্রনাথ ঘোষপাড়া,...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in