শাস্ত্রে পূজার অনেক প্রকার সংজ্ঞা পাওয়া যায়। ভাবনোপনিষদ-এ রয়েছে—পূজকের নিজেকে দেবতার কাছে সমর্পণ-সম্বন্ধই পূজা।

পূজাশাস্ত্রে পূজার অনেক প্রকার সংজ্ঞা পাওয়া যায়। ভাবনোপনিষদ-এ রয়েছে—পূজকের নিজেকে দেবতার কাছে সমর্পণ-সম্বন্ধই পূজা। আবার মহানির্বাণতন্ত্র-এ সেবক এবং ঈশ্বরের ঐক্যকে পূজা বলা হয়েছে।১ পূজার উদ্দেশ্য শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় শ্রীভগবান বলেছেন—দ্রব্যময় যজ্ঞ থেকে জ্ঞানযজ্ঞ শ্রেয়স্কর। সকল কর্মই ব্রহ্মজ্ঞানে পরিসমাপ্ত হয়। যোগিনীতন্ত্র-এ বলা হয়েছে—পূজা প্রভৃতি কর্মের দ্বারা ভক্তিলাভ হয়। ভক্তির দ্বারা জ্ঞান অর্থাৎ ব্রহ্মজ্ঞান লাভ হয় এবং ব্রহ্মজ্ঞানেই মুক্তি হয়।২ পূজার প্রকারভেদ বিভিন্ন শাস্ত্রে অধিকারী, উদ্দেশ্য ইত্যাদির কারণে পূজার বিভিন্ন প্রকারভেদ লক্ষ্য করা যায়। দেবী ভাগবত-এ বাহ্য ও আভ্যন্তর—এই দুই প্রকার পূজার কথা বলা হয়েছে। বাহ্য পূজা আবার দুই প্রকার—বৈদিক এবং তান্ত্রিক। আভ্যন্তর পূজা দুই প্রকার—সাধারা এবং নিরাধারা। রুদ্রযামল বচনে দেখা যায় যে, তান্ত্রিক পূজার তিনটি বিভাগ করা হয়েছে। সেগুলি হলো নিত্য, নৈমিত্তিক এবং কাম্য। গন্ধর্বতন্ত্র-এ আবার নিত্য, নৈমিত্তিক এবং কাম্য পূজাকে যথাক্রমে সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক পূজা বলা হয়েছে। রুদ্রযামলে পূজার তিনটি ভেদ হলো—মানস, সাক্ষাৎ এবং বচোময়। মুণ্ডমালাতন্ত্র বচনে তিন প্রকার পূজা হলো—মানসী, অন্তর্যাগাত্মিকা এবং বাহ্যা। কেন পূজা করা উচিত স্মৃতিচিন্তামণি গ্রন্থে দেবীপুরাণ থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে—“কৃত্বৈবং পরমামাপুর্নির্বৃতিং ত্রিদিবৌকসঃ। এবমন্যৈরপি সদা দেব্যাঃ কার্য্যং প্রপূজনম্॥বিভূতিমতুলাং লব্ধুং চতুর্বর্গপ্রদায়িকাম্।” —“দেবগণ এই ভাবে দেবীর পূজা করিয়া, পরম সুখ (নিবৃত্তি) লাভ করিয়াছিলেন। এই ভাবে মনুষ্যগণও ধর্ম্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ এই চতুর্ব্বর্গ ফলপ্রদ এবং অতুল ঐশ্বর্য্য লাভের কারণে দেবীর পূজা করিবে।”৩ নিত্য ও কাম্য পূজা বিভিন্ন বাৎসরিক পূজানুষ্ঠানের মধ্যে নানা ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয় পূজা ঠিক ঠিক শাস্ত্রবিহিতভাবে সম্পন্ন করার জন্য। তার জন্যই প্রয়োজন সর্বতোভদ্রমণ্ডল-এর। সবার বিশেষ করে দৃষ্টি আকর্ষণ করে দুর্গাপূজায় যখন ঘটস্থাপন করা হয় এক-এক তিথিতে পূজার জন্য। স্মৃতিচিন্তামণি গ্রন্থে বলা হয়েছে—‘দুর্গাপূজা নিত্যা কাম্যা চ’৪—অর্থাৎ দুর্গাপূজা নিত্য ও কাম্য পূজা। গন্ধর্বতন্ত্র-এ বলা হয়েছে, যে-পূজা প্রতিদিন করতে হয়, তাকে বলে নিত্যপূজা। ঐ একই তন্ত্রে বলা হয়েছে—শ্রুতি-স্মৃতিবিহিত বিশেষ বিশেষ ফলপ্রাপ্তির জন্য যে-পূজা করা হয়, তাকে বলে কাম্যপূজা।৫ মণ্ডল কুলার্ণবতন্ত্র গ্রন্থে দীক্ষা সম্পর্কিত একটি শ্লোকে বলা হয়েছে— “মণ্ডলং কলসদ্রব্যশুদ্ধিগন্ধাষ্টকাদিকম্ ।দীক্ষাকামপ্রদানাদি...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in