শ্রীরামকৃষ্ণের সান্নিধ্যে আগত ভক্তিমতী মহিলাদের অন্যতমা হলেন কালীপদ ঘোষ ওরফে দানাকালীর কনিষ্ঠা ভগিনী মহামায়া মিত্র। বিশ্বচেতনায় শ্রীরামকৃষ্ণ গ্রন্থে
শ্রীরামকৃষ্ণের সান্নিধ্যে আগত ভক্তিমতী মহিলাদের অন্যতমা হলেন কালীপদ ঘোষ ওরফে দানাকালীর কনিষ্ঠা ভগিনী মহামায়া মিত্র। বিশ্বচেতনায় শ্রীরামকৃষ্ণ গ্রন্থে শ্রীরামকৃষ্ণের স্ত্রীভক্তমণ্ডলীর আলোকচিত্র সমাহারের মধ্যে মহামায়াদেবীর চিত্র লক্ষিত হয়। নির্মলকুমার রায় তাঁর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ-সংস্পর্শে গ্রন্থে মহামায়াদেবীর শ্রীরামকৃষ্ণ-সান্নিধ্য প্রসঙ্গ সংক্ষেপে বিবৃত করেছেন। বস্তুত, মহামায়াদেবীর সঙ্গে ঠাকুর ও মায়ের নিবিড় সংযোগ ছিল, উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে তাঁদের পারস্পরিক কথোপকথনের বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যায় না। নানা উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে মহামায়াদেবীর শ্রীরামকৃষ্ণ ও মাতৃ-সান্নিধ্য চিত্রিত করার প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে এই আখ্যানে। মহামায়াদেবীর প্রথম শ্রীরামকৃষ্ণ-দর্শন বড় বিচিত্র। ১৮৮৪ সালের নভেম্বর মাসের কোনো একদিন ঠাকুর অযাচিতভাবে কালীপদ ঘোষের সঙ্গে তাঁর শ্যামপুকুরের বাড়িতে (২০ শ্যামপুকুর স্ট্রিট) উপস্থিত হয়েছিলেন। কালীপদ যে-ঘরে ঠাকুরকে উপবেশন করান, সেই ঘরের দেওয়ালে বিভিন্ন দেবদেবীর তৈলচিত্র টাঙানো ছিল। ঠাকুর সেগুলি দেখে আনন্দিত হন এবং ভাবতন্ময় হয়ে তাঁদের স্তবগান করতে থাকেন। দেখতে দেখতে সেগুলি যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। কিছুক্ষণ কথাবার্তার পর ঠাকুর দক্ষিণেশ্বরে ফিরে যান। কালীপদ গাড়িতে তাঁর ফেরার ব্যবস্থা করেন। এই কালে তাঁর পরিবার-পরিজন শ্রীরামকৃষ্ণকে দর্শন এবং তাঁর চরণে প্রণিপাত করেন।১ বস্তুত, মহামায়াদেবীর এটি শ্রীরামকৃষ্ণকে দ্বিতীয়বার দর্শন। এর কিছুকাল আগে শ্রীরামকৃষ্ণ একদিন শ্যামপুকুর স্ট্রিট দিয়ে ঘোড়ার গাড়ি চেপে দক্ষিণেশ্বরে ফিরছিলেন। হঠাৎ কালীপদ ঘোষের বাড়ির কাছে তিনি চালককে কিছুক্ষণ থামতে বলেন এবং গাড়ির জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে কালীপদর বাড়িটি দেখেন। সেসময় ঘরের বারান্দায় কালীপদর বিধবা ভগিনী মহামায়াদেবী দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি এর আগে শ্রীরামকৃষ্ণকে দেখেননি। তিনি দেখলেন, এক ব্যক্তি ঘোড়ার গাড়ির জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে তাঁদের বাড়ির দিকে তাকিয়ে আছেন আর সেই ব্যক্তির চারদিক থেকে এক অস্বাভাবিক জ্যোতি বিচ্ছুরিত হচ্ছে। এ-সংবাদ তিনি তৎক্ষণাৎ বাড়ির লোকদের জানান। অবশেষে ১৮৮৪ সালের নভেম্বর মাসে ঠাকুর স্বয়ং সে-গৃহে পদার্পণ করলে মহামায়াদেবী বুঝতে পারেন, কিছুকাল আগে ঘরের বারান্দা থেকে যাঁকে দর্শন করেছেন তিনিই ইনি। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব যে সাধারণ মানুষ নন—এই প্রত্যয় তাঁর সেদিনই জন্মেছিল।২ দ্বিতীয় দর্শনকালে তিনি ঠাকুরের শ্রীচরণে মাথা রেখে প্রণিপাত জানান।...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
