বেদান্তে অদ্বৈত, বিশিষ্টাদ্বৈত, শুদ্ধাদ্বৈত, দ্বৈত, কেবলাদ্বৈত, অচিন্ত্য-ভেদাভেদ—এমন
বেদান্তে অদ্বৈত, বিশিষ্টাদ্বৈত, শুদ্ধাদ্বৈত, দ্বৈত, কেবলাদ্বৈত, অচিন্ত্য-ভেদাভেদ—এমন অনেক শাখা আছে। শৈবদের মধ্যে যাঁরা অদ্বৈতী, তাঁদেরও আবার মতবৈচিত্র আছে। মধ্যযুগে দক্ষিণভারতে যেসব শৈব সম্প্রদায়ের উদ্ভব ও বিকাশ হয়েছিল, তাদের অন্যতম হলো বীরশৈব বা লিঙ্গায়ৎ৷ অন্য প্রতিষ্ঠিত শৈব সম্প্রদায়ের তুলনায় এঁরা সম্ভবত নবীন; কারণ মাধবাচার্য সর্বদর্শনসংগ্রহ-এ নকুলীশ পাশুপত এবং আগমান্ত শৈবমতের কথা বলেছেন, অথচ বীরশৈবমত বলেননি। আচার্য শঙ্কর, আনন্দগিরি বা বাচস্পতি মিশ্রের রচনাতেও এঁদের উল্লেখ দেখা যায় না। বীরশৈবরা মূলত শক্তিবিশিষ্টাদ্বৈতবাদে বিশ্বাসী, তবে তাঁরা যে-তত্ত্বটি স্বীকার করেন তার পাঁচটি পরিচয় আছে—শিবাদ্বৈত, দ্বৈতাদ্বৈত, বীরশৈব, বিশেষাদ্বৈত এবং শক্তিবিশিষ্টাদ্বৈত। শক্তিবিশিষ্টাদ্বৈত হলো কর্মপ্রধান। নিষ্কাম কর্মে বিশ্বাসী এঁদের পথকে বীরধর্ম বা বীরমার্গ বলা হয়। এই সম্প্রদায়ের নাথের পরিচয় এইরকম—শক্তিবিশিষ্ট জীব এবং শক্তিবিশিষ্ট শিবের সামরস্য বা পরস্পর একাকার হওয়া। “শক্তিশ্চ শক্তিশ্চ শক্তী, তাভ্যাং বিশিষ্টৌ জীবেশৌ শক্তিবিশিষ্টৌ তয়োরদ্বৈতং শক্তিবিশিষ্টাদ্বৈতম্।”১ এঁরা শরীরে শিবলিঙ্গ ধারণ করেন বলে এঁদের বলা হয় লিঙ্গায়ৎ। ‘ভারশিব’ বলেও একটা সামাজিক পরিচয় এঁদের ছিল। এই ধারার পরিচিত আচার্য হলেন ‘বসব’। এই শব্দটি সংস্কৃত বৃষভ শব্দের কানাড়ি প্রতিরূপ। তিনি বাগেবাড়ি-নিবাসী কর্ণাটকি ব্রাহ্মণ। পিতার নাম মাদিরাজ। খুব কম বয়সেই বসবের মধ্যে অপ্রাকৃত শক্তি প্রকাশিত হয়। নিজে কোনো বই লেখেননি, তবে তাঁর বলা কথা এবং প্রবচন বীরশৈব ধারায় সুপরিচিত হয়ে আছে। কোনো কোনো বিদ্বান মনে করেন, এই বিশেষ শৈব ধারাটির উদ্ভব খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর দু-এক শতাব্দী আগেই হয়েছিল। তারপর কিছুকাল এই মত অস্তমিত থাকে; বসব আবার এই শ্রদ্ধাকে সমাজে সক্রিয় ও পরিচিত করেন। লিঙ্গায়ৎ সম্প্রদায়ের সৃষ্টি ও বিস্তৃতির প্রথম পর্বে পাঁচজন গুরুর উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল; তাঁরা হলেন—বিশ্বারাধ্য, রেবণসিদ্ধ, মরুলসিদ্ধ, একোরাম ও পণ্ডিতারাধ্য। এঁদের সময়ে এই মত আগমান্ত শৈব বা শুদ্ধ শৈবদের মতোই সৌম্য পর্যায়ের ছিল, পরে ব্যাখ্যাকাররা স্থল, অঙ্গ, লিঙ্গ—এই নামগুলির প্রচলন করেন। তখন এই সম্প্রদায়ের প্রধানদের ‘লিঙ্গী’ বলা হতো, আর তাঁদের অনুচরদের পরিচয় ছিল লিঙ্গায়ৎ। লিঙ্গীদের দুটি ধারা—আচার্য এবং পঞ্চম। উপরি-উক্ত পাঁচজন প্রাচীন গুরুর বিষয়ে বিশ্বাস হলো—এঁরা মহাদেবের পাঁচটি...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹120/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
