শ্রীরামকৃষ্ণ সকলের কল্যাণের জন্য জগৎকে যে আধ্যাত্মিক ভাব দিয়েছিলেন তাকে দৃঢ়ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং সর্বসাধারণের মধ্যে বিতরণ করতে স্বামীজীর চেষ্টার অন্ত ছিল না। তিনি জানতেন, শিকাগোর ধর্মমহাসভায় তাঁর আবির্ভাব এবং ভারত-প্রত্যাবর্তনের সূত্রে যে ভাবান্দোলনের তরঙ্গ উঠেছে, তার প্রাবল্য বেশিদিন মানুষের মনে স্থায়ী হবে না। তাকে চিরজাগ্রত রাখতে হলে একটি প্রবল মাধ্যম প্রয়োজন, যার ভিতরে সেই শাশ্বত ভাব ও ভাষা ‘বহুজনহিতায় বহুজনসুখায়’ জীবন্ত হয়ে উঠবে এবং মানব-মনে আনবে চিরশান্তির চেতনা।

শ্রীরামকৃষ্ণ সকলের কল্যাণের জন্য জগৎকে যে আধ্যাত্মিক ভাব দিয়েছিলেন তাকে দৃঢ়ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং সর্বসাধারণের মধ্যে বিতরণ করতে স্বামীজীর চেষ্টার অন্ত ছিল না। তিনি জানতেন, শিকাগোর ধর্মমহাসভায় তাঁর আবির্ভাব এবং ভারত-প্রত্যাবর্তনের সূত্রে যে ভাবান্দোলনের তরঙ্গ উঠেছে, তার প্রাবল্য বেশিদিন মানুষের মনে স্থায়ী হবে না। তাকে চিরজাগ্রত রাখতে হলে একটি প্রবল মাধ্যম প্রয়োজন, যার ভিতরে সেই শাশ্বত ভাব ও ভাষা ‘বহুজনহিতায় বহুজনসুখায়’ জীবন্ত হয়ে উঠবে এবং মানব-মনে আনবে চিরশান্তির চেতনা। সেজন্য স্বামীজী চেয়েছিলেন অন্যান্য ভাষার মতো বাঙলা ভাষাতেও একটি পত্রিকা প্রকাশিত হোক, যার মাধ্যমে বাংলার ঘরে ঘরে শ্রীরামকৃষ্ণের ভাব ও বাণী পৌঁছাতে পারবে। পত্রিকা প্রকাশের আগ্রহ অনেককাল আগেই স্বামীজী মনে মনে পোষণ করছিলেন। শিকাগো থেকেই স্বামীজী আলাসিঙ্গাকে এক পত্রে তার কিছুটা আভাস দিয়েছিলেন। ১৮৯৫-এর ৬ মে স্বামীজী আলাসিঙ্গাকে লেখেন: “এখন একখানা কাগজ কোনরূপে বার করতে খুব ঝোঁক হয়েছে আমার।” তাঁর এই সত্যসঙ্কল্প বাস্তবে রূপায়িত হয়েছিল ‘ব্রহ্মবাদিন' পত্রিকা (১৮৯৫-এর ১৪ সেপ্টেম্বর) প্রকাশের মাধ্যমে। শিকাগোর ধর্মমহাসম্মেলন তথা পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে বেদান্ত প্রচারের ফলে স্বদেশ ও বিদেশে বেদান্ত সম্বন্ধে একটা নতুন ধারণার সৃষ্টি হয়েছিল। এই ধারণাকে আরও স্থায়ী ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা এবং ব্যাপকভাবে প্রচার করার জন্য বিদেশী অনুরাগী ও এদেশের অনেকের কাছেই যে একটি ইংরেজী মুখপত্র খুব প্রয়োজনীয় ছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই। ‘ব্রহ্মবাদিন’ ছিল খুব উচ্চাঙ্গের দার্শনিক পত্রিকা। স্বামীজী সেজন্য অপেক্ষাকৃত সহজ আরও একটি ইংরেজী পত্রিকা প্রকাশের কথা ভেবেছিলেন। সেই ভাবনার ফলশ্রুতি ‘প্রবুদ্ধ ভারত’ পত্রিকা, যার আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল ১৮৯৬ খ্রীস্টাব্দের জুলাই মাসে। কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণ যে-ভাষায় কথা বলেছেন, যে-ভাষায় তিনি নিজের ভাব সকলের কাছে প্রকাশ করেছেন—সেই ভাষায় একটি পত্রিকার প্রয়োজনীয়তা স্বামীজী বিশেষ করে উপলব্ধি করতে থাকেন। তাছাড়া একসময় শ্রীরামকৃষ্ণ বঙ্গদেশে তাঁর সাধনভূমির সন্নিকটে গঙ্গার কাছে থাকার কথা স্বামীজীকে বলেছিলেন। সুতরাং বাংলার গঙ্গাতীরেই যে শ্রীরামকৃষ্ণ-ভাবান্দোলনের প্রাণকেন্দ্র গড়ে উঠবে, তাও স্বামীজী জানতেন। সুতরাং আনুষ্ঠানিকভাবে সঙ্ঘপ্রতিষ্ঠার পর সঙ্ঘের একটা বাঙলা মুখপত্র প্রকাশের জন্য তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। স্বামীজী...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in