ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামের ইতিহাসে ১৯২৯ সালের মধ্যরাত্রিতে লাহোরে অনুষ্ঠিত

উদ্বোধন-এর গত ভাদ্র ১৪৩২ সংখ্যার ‘আলোকপাত’ বিভাগে ‘মহাত্মা ও লবণ : গান্ধি ভাবনার লাবণ্য’ শিরোনামিত প্রবন্ধটিতে অধ্যাপক অরুণাংশ মাইতি ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামের এক অনন্য কাহিনি পাঠকদের উপহার দিয়েছেন। উপস্থাপিত বিষয়ে দু-একটি প্রসঙ্গের উল্লেখ করার আবশ্যকতা বোধ করছি। ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামের ইতিহাসে ১৯২৯ সালের মধ্যরাত্রিতে লাহোরে অনুষ্ঠিত জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশন ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সেই অধিবেশনে কংগ্রেসের নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের ঐকমত্যে ভারতে ঔপনিবেশিক শাসনমুক্ত পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় এবং ১৯৩০-এর ২৬ জানুয়ারি সারা ভারতব্যাপী স্বাধীনতা দিবস পালনের সংকল্প গৃহীত হয়। এই দাবিকে রূপ দেওয়া এবং আন্দোলনকে সংগ্রামের পথে পরিচালিত করার নেতৃত্ব ন্যস্ত হয় জাতীয় নায়ক মহাত্মা গান্ধির ওপর। প্রায় পঞ্চাশ বছরব্যাপী অহিংস সত্যাগ্রহের পথে সংগ্রাম পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বুঝেছিলেন, জনসাধারণকে গণসংগ্রামের অঙ্গীভূত করতে হলে চাই সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম। সেই দৃষ্টিতে আন্দোলনকে যথার্থভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি বদ্ধপরিকর হন। অবিলম্বে ভারতের কোটি কোটি নরনারী শুনল নেতার সংগ্রামী আহ্বান—সর্বাপে‌ক্ষা পীড়াদায়ক লবণ আইন অমান্যের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা-সংগ্রামের উদ্বোধন হবে। ১৯৩০ সালের লবণ আইন ভঙ্গ করার আদর্শটা তাই বিদ্রোহের প্রতীক হয়ে দাঁড়াল। ক্রমশ তা সারা দেশে বিস্ফোরণের কাজ করল। জাতি জেগে উঠল ১৯৪২-এর ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে। ব্রিটিশ শক্তির শতাব্দী-প্রাচীন অহংকার—“The sun never sets on the British Empire” কাচের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল। ১৯৩০ সালে লবণ আইন অমান্যের উদ্দেশে আরবসাগর উপকূলে ডাণ্ডি যাত্রার প্রাক্কালে ভারতীয় জনগণের প্রতি মহাত্মা গান্ধির আহ্বানবাণীটি আজও আমাদের রক্তে আগুন জ্বালায়। সেটির উল্লেখ করে আমার এই পত্রটি শেষ করি—আজ ভারতের আত্মমর্যাদা বস্তুত ভারতের জীবনমরণ সত্যাগ্রহীর হস্তধৃত একমুষ্টি লবণের মধ্যে স্থিত হয়ে আছে। সেই হাত যদি ভেঙে দেওয়া হয়, সত্যাগ্রহী কখনো তার করধৃত সেই লবণ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেবে না। শৈলেন্দ্রনাথ মাইতিএগরা, পূর্ব মেদিনীপুর-৭২১৪২৯

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹120/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in