ঋগ্বেদের সময় থেকে জনপ্রিয় যান হচ্ছে রথ। রথের বাহন পালটেছে, আরোহী পালটেছে,
ঋগ্বেদের সময় থেকে জনপ্রিয় যান হচ্ছে রথ। রথের বাহন পালটেছে, আরোহী পালটেছে, কিন্তু রথের জনপ্রিয়তা একটুও কমেনি। প্রাচীনকালে কৃষিভিত্তিক সমাজে বলদ বা অশ্বচালিত যান খেতের ফসল গোলায় নিয়ে আসার জন্য ব্যবহৃত হতো। ফসল আনার সােথ সাথে মানুষও এই যানে চলাচল শুরু করল। যাত্রিবাহী গাড়ি (রথ) দু-চাকার জায়গায় চার চাকার হওয়ায় ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠল। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যাতায়াতের জন্য একমাত্র যান ছিল গোরুর গাড়ি। শ্রীমা গো-যানের সাহায্যে জয়রামবাটী থেকে কোয়ালপাড়া বা অন্যান্য জায়গায় যাতায়াত করতেন। ঋগ্বেদের যুগে রথ ছিল ধন-সম্পদ ও ঐশ্বর্যের প্রতীক। রথ যদি সোনার হতো, তাহলে মালিকের সম্মান সবচেয়ে বেশি। যুদ্ধে জয়লাভের জন্য এবং ক্ষেত্রবিশেষে শত্রুদের ধন-সম্পত্তি লুঠের কাজে রথ ব্যবহৃত হতো। ঋগ্বেদের শেষ পাদে দেখতে পাই, যুদ্ধে শত্রুদের ওপর জয়লাভের জন্য এবং দ্রুতগামী যান হিসাবে রথের সমাদর এই কালে খুব বেশি ছিল। রথের ভিতর অস্ত্রশস্ত্র রাখারও ব্যবস্থা ছিল। যুদ্ধক্ষেত্রে দেবরাজ ইন্দ্রকে রথে করে আসার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে—এমন মন্ত্রও দেখতে পাই। রথের ভিতর সাধারণত তিনটি স্তম্ভ (Pillar) এবং রথের উপরিভাগে সুদৃশ্য কারুকার্য-খচিত রুপো বা ঐরকম দামি ধাতু দিয়ে মোড়া থাকত। চারদিকে ঢাকা রথের ভিতরে দামি বস্ত্রাদির ব্যবহার প্রচলিত ছিল। রথ নির্মাণে খদির, শাল্মলী বা শিংশপা কাঠ ব্যবহৃত হতো। রথের দৌড় প্রতিযোগিতা ঋগ্বেদের যুগে খুবই জনপ্রিয় ছিল। রথের চালকদের দৈহিক শক্তি ও রথ চালানোর কৌশলের পাশাপাশি ইন্দ্রের কাছে প্রার্থনাও করতে হতো। বিজয়ীদের পুরস্কারের ব্যবস্থাও ছিল। রামায়ণের সময়ে আমরা রাবণের যুদ্ধরথের বিস্তৃত বিবরণ পাই। আটটি শক্তিশালী অশ্বে টানা রাবণের রথ সুন্দর ও দামি বস্ত্রে আচ্ছাদিত; মুক্তা প্রভৃতি দামি রত্নে ও ছোট ছোট ঘণ্টার (kinkinis) জালে সুসজ্জিত। পৌরাণিক যুগে বিভিন্ন দেবতার রথ ভিন্ন ভিন্ন রকমের ছিল। ভবিষ্যপুরাণ-এ সূর্যের রথের বর্ণনা এরকম—রথের একটি চাকা ও পাঁচটি শলাকা (spoke) আর সবই সোনালি রঙের। অশ্বগুলি মনের মতো দ্রুতগামী। চন্দ্রদেবতার রথের চাকা তিনটি, দশটি অশ্বের সঙ্গে যুক্ত। অশ্বগুলির গাত্রবর্ণ শঙ্খের মতো...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
