১৯ আশ্বিন ১২৮২, সোমপ্রকাশ পত্রিকা : “আজি সোমপ্রকাশ একটী দারুণ শোকসংবাদ লইয়া পাঠকগণের সমক্ষে উপনীত হইতেছে। বাবু প্যারীচরণ সরকার ১৬ই আশ্বিন দেহত্যাগ করিয়াছেন। বঙ্গদেশ আর একটী রত্নহারা হইলেন

নিবন্ধের শিরোনামটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অত্যন্ত প্রচলিত একটি গান থেকে উদ্ধৃত। বাস্তবে নদী আবার হারিয়ে যায় নাকি? এককথায় উত্তর—হারায়। আ‌ক্ষরিক অর্থেই বৈদিক নদী ‘সরস্বতী’ হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে মরুবালুরাশিতে। আমরা তাকে খুঁজে বের করি বেদ থেকে, রামায়ণ থেকে, মহাভারত থেকে, সাহিত্য থেকে, ইতিহাস থেকে, ভূগোল থেকে। আর অবশ্যই জনশ্রুতি থেকে। সরস্বতী নদীর সন্ধানে : যাত্রা শুরু ১৮১২ সালে। ঐ বছর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লেফ্টন্যান্ট কর্নেল জেম্‌স টডকে রাজপুতানা রাজ্যে তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধি (Political Agent) করে পাঠিয়েছিল। রাজপুতানার রাজদরবারে রাজ-অতিথি হয়ে উপস্থিত থেকে টডের কাজ ছিল রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের প্রতি ল‌ক্ষ্য রাখা এবং কোম্পানিকে নিয়মিত ‘খবর’ সরবরাহ করা। কিন্তু সে আর কত‌ক্ষণের কাজ! তাই তাঁর বিস্তৃত অবসর সময়ে তিনি ক্রমে আগ্রহী হয়ে উঠলেন সমগ্র রাজপুতানার বিচিত্র ইতিহাস, রাজকাহিনি, লোকগাথা এবং তার আকর্ষণীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিষয়ে। তাঁর পর্যবে‌ক্ষণ দুই খণ্ডে গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হলো—Annals and Antiquities of Rajasthan শিরোনামে। এই গ্রন্থে তিনি বর্ণনা করেছেন—সমগ্র মরুস্থলী জুড়ে রয়েছে বিস্তৃত বালিয়াড়ি, তারই মধ্যে উঁচু সমতল জায়গায় যেখানে তুলনামূলকভাবে বালির পরিমাণ কম, সেখানে খুব অল্প সংখ্যক মানুষ নিয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ছোট শহর বা জনবসতি। তিনি আরো পর্যবে‌ক্ষণ করেছিলেন, মরুস্থলীর উত্তরাংশে জনবসতি কমে যাওয়ার কারণ হলো ঘগ্গর নদীর মরুবালুরাশিতে শুকিয়ে যাওয়া। এটা তিনি শুনেছিলেন রাজপুতদের গাওয়া একটা লোকসংগীত থেকে, যেটা এখনো গাওয়া হয়। এই গানে বর্ণনা করা হয়েছে—মরুভূমিতে ‘হক্‌রা’ নদী শুকিয়ে যাওয়াতে রাজপুতানার ঐ অংশের মানুষজন অন্যত্র চলে যায়। উল্লেখ্য, ‘ঘগ্গর’ এবং ‘হক্‌রা’ আদতে একই নদীর দুটি নাম।১ (এই ‘ঘগ্গরা’ নদী বর্তমানে ভারত-পাক সীমান্তবর্তী অনুপগড় পেরিয়ে ‘হক্‌রা’ নামে আব্বাস দুর্গ, ম্যারট ও দেরাওয়ার দুর্গ বরাবর প্রবাহিত হয়ে একসময় হারিয়ে গেছে চোলিস্তান মরুভূমিতে। চোলিস্তান মরুভূমি হলো থর মরুভূমির পশ্চিম অংশ, যা বর্তমানে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে কখনো কখনো এই নদীর জলধারা হনুমানগড়েও এসে পৌঁছাত। কিন্তু বর্তমানে কেবলমাত্র বর্ষার ঋতুতে নদীর ঊর্ধ্ব ধারাতে কিছুটা জলপ্রবাহ দেখা যায়। বাকি...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in