আমার বাবার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা ছিল বেলুড় মঠ। যেকোনো অনুষ্ঠানেই বাবা
আমার বাবার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা ছিল বেলুড় মঠ। যেকোনো অনুষ্ঠানেই বাবা আমাকে ও মেজো বোনকে নিয়ে সেখানে যেতেন। বাবা তাঁর গুরুদেব স্বামী শঙ্করানন্দজীর কাছে একদিন প্রার্থনা জানান আমাদের দীক্ষাদানের জন্য। সব কথা আজ মনে না থাকলেও মনে আছে—মহারাজ বলেছিলেন : “দুই মেয়ের তো বিয়ে হবে, এবার ওদের জন্য কিছু জমাও।” মঠে যেতে যেতে স্বামী শঙ্করানন্দজীর সেবক নন্দী মহারাজের স্নেহদৃষ্টিতে পড়ে গেলাম। মঠে স্বামীজীর বাড়ির একতলার সিঁড়িতে বসে গঙ্গা দেখতাম। সেবক মহারাজ প্রসাদ এনে বলতেন : “তাড়াতাড়ি খেয়ে নে। তোদের বাবা দেখলে অনেক কিছু বলবেন।” আমরাও আপ্লুত হয়ে প্রসাদ খেতাম। কখন নন্দী মহারাজ আসবেন, অপেক্ষার অন্ত থাকত না। বাবা দেখতে পেলেই মহারাজকে বলতেন : “কেন আমার মেয়েরা বিশেষ সমাদর পাবে?” অবশেষে প্রেসিডেন্ট মহারাজ স্বামী শঙ্করানন্দজী আমাদের কৃপা করলেন। তখন একজন করে দীক্ষা হতো। ঘরে ঢুকে নির্দিষ্ট আসনে বসলাম। আসন পাতাই ছিল। কথামৃত পড়ি কি না জানতে চাইলেন। জিজ্ঞেস করলেন : “ঠাকুর, মা, স্বামীজী কাকে ভাল লাগে বেশি?” অক্লেশে বলে দিলাম—মা। গুরুদেব ধ্যানস্থ হয়ে গেলেন। তাঁর দিকে তাকিয়ে রইলাম একদৃষ্টে। শেষে ইষ্টের হদিশ পেলাম। তাঁর পরের কথাগুলো এখনো কানে মধুবর্ষণ করে চলে। হৃদয় জুড়ে মন্ত্র পেলাম। তৈলধারার মতো মন্ত্র জপ করতে বললেন। জপের আসনটি যেন নির্দিষ্ট থাকে। আঙুল ধরে ধরে করজপ দেখিয়ে দিলেন। স্নেহের স্পর্শে আমার পরলোকগতা মায়ের অভাব যেন মুহূর্তে দূর হয়ে গেল! এর পরে বাবার এক বিরাট দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁকে অতি কষ্টে ভরতি করানো হয় নাকতলায় স্বামী প্রেমানন্দজীর ভাগনি চারুশীলাদেবীর প্রতিষ্ঠিত আশ্রমে। নানা সাধু-সন্ন্যাসী ঐ আশ্রমে আসতেন। একজনের কথা বলতে ইচ্ছা করছে— স্বামী সম্বুদ্ধানন্দজী। বড় মজার মানুষ ছিলেন! চেহারা বেশ ভারী। চক দিয়ে লিখতেন ‘ত’ অক্ষরটি, পরে তার চারপাশে গোল করে দাগ কেটে বলতেন : “ত প্যাঁচ খা।” না বুঝে আমরা হাসতাম। এখন ভাবি—ঐ ‘প্যাঁচ খা’ কী সংসারের প্যাঁচ? এবার ভরত মহারাজের কথা বলি। স্বামীজীর বাড়ির দোতলায় ইজিচেয়ারে গঙ্গার দিকে মুখ করে মহারাজ বসতেন। বাবা...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹120/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
