না, ভূত বিশ্বাস করি না। আজকের যুগে ওসব সেকেলে বাজে কথা কি বিশ্বাস করা যায়? যা চোখে দেখা যায় না তাকে বিশ্বাসও করা চলে না। এমন কথা

না, ভূত বিশ্বাস করি না। আজকের যুগে ওসব সেকেলে বাজে কথা কি বিশ্বাস করা যায়? যা চোখে দেখা যায় না তাকে বিশ্বাসও করা চলে না। এমন কথা আমাদের চেনাজানা অনেকেই বেশ জোর দিয়ে বলে থাকে। কিন্তু সত্যিই যদি চোখে যা দেখিনি তা অবিশ্বাস করতে হয় তাহলে তো ভূত ব্যতিরেকে আরো অনেক কিছুকেই অবিশ্বাস করতে হয়। যেমন আমাদের প্রপিতামহের পিতা। অনেকের বাড়িতে হয়তো তাঁর একটা ফটো পর্যন্ত নেই। তবে কি তিনি ছিলেন না বলে ধরে নেব? কিংবা করোনা ভাইরাস। তাকেও তো চোখে দেখিনি। আবার এমন অনেক কিছুই আছে, যার কেবল ছবিই দেখেছি। যেমন আমাজনের জঙ্গল, ডাইনোসর বা রবীন্দ্রনাথ। তাও এসবের অস্তিত্ব সন্দেহাতীত। তাই একথা ভুল যে, আমরা যারা নিজেদের প্রখর যুক্তিবাদী বলে প্রতিপন্ন করতে চাই এবং চাক্ষুষ জ্ঞান ছাড়া আর কিছুই মানি না—নানান কারণে আমরা এমন অনেক কিছুর অস্তিত্বই মেনে নিই যা আমাদের প্রত্যক্ষ ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞান-বহির্ভূত। প্রামাণ্য জ্ঞানের ভিত্তি, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ জ্ঞানের তুলনামূলক বিচার, বিশ্বাসের সামাজিক আধার ইত্যাদি অনেক জটিল বিষয় এই তর্কটির মধ্যে নিভৃত রয়েছে। তবে সেসব তর্কের জট ছাড়ানো আপাতত আমাদের উদ্দেশ্য নয়, বরং এই তর্কটি কোথায় এবং কীভাবে উত্থাপিত হয়েছে সেদিকেই আমি পাঠক-পাঠিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এই প্রখর যুক্তিতর্কটি ব্যক্তিগত মস্তিষ্কপ্রসূত নয়, কিংবা কোনো গুরুগম্ভীর দার্শনিক কেতাব থেকেও আহরিত নয়। এটির সূত্র হলো রাজশেখর বসুর রচিত একটি ভূতের গল্প—‘মহেশের মহাযাত্রা’।১ কেবল উদাহরণগুলি যৎসামান্য বদলে নেওয়া হয়েছে। প্রবীণ-নবীন মিলিয়ে অনেক বাঙালি পাঠক-পাঠিকাই ভূতের গল্প পড়তে ভালবাসেন। তবে তাঁদের মধ্যে কেউ এইসব গল্পে গূঢ় দার্শনিক তত্ত্বের হদিস করেন কি না সন্দেহ। বেশির ভাগ পাঠকই মনে করেন, ভূতের গল্প হলো এক ধরনের লঘুসাহিত্য, হয়তো শিশুসাহিত্য। মাঝে-মধ্যে পড়তে ভাল লাগে কিন্তু তার থেকে শেখার বা তা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামানোর তেমন কিছু নেই। বরং অনেকের মনে আবার এক ধরনের দ্বিধাও কাজ করে। ভূত, দৈব ইত্যাদি অতিপ্রাকৃতিক বিষয় বিশ্বাস না করেও...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in