শ্রীরামকৃষ্ণ সম্বন্ধে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন—তিনি ‘ভাবরাজ্যের সম্রাট’, তাঁর অনন্ত ভাবের কোনো ইয়ত্তা করা যায় না। তাই শ্রীরামকৃষ্ণের

শ্রীরামকৃষ্ণ সম্বন্ধে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন—তিনি ‘ভাবরাজ্যের সম্রাট’, তাঁর অনন্ত ভাবের কোনো ইয়ত্তা করা যায় না। তাই শ্রীরামকৃষ্ণের অনুধ্যান ভক্ত সাধকের অন্তরে যখন দিবানিশি চলতে থাকে, তখন তার অপার আনন্দ হৃদয়কে অভিভূত করে তোলে, তাঁর সাধ জাগে সেই অফুরন্ত অমৃতের আস্বাদ লাভ করুক ভক্তজন। সেই প্রেরণা থেকেই স্বামী বিষ্ণুদেবানন্দ আমাদের উপহার দিয়েছেন ওহে জ্যোতির্ময় গ্রন্থখানি। ভক্তপ্রবর অ‌ক্ষয়কুমার সেনের শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ-পুঁথি অবলম্বনে ইতিপূর্বে তাঁর রচিত দুখানি গ্রন্থ ভক্তসমাজে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে। এই পর্বে তাঁর আলোচনার পরিসর নির্দিষ্ট হয়েছে পুঁথির তৃতীয় খণ্ডে বর্ণিত ‘দেশে আগমন’ থেকে ‘কেশবের শক্তিরূপ-দর্শন’ পর্যন্ত। এটি পয়ার ছন্দে লিখিত পুঁথির নিছক গদ্যরূপ নয়, বরং বলা যেতে পারে—লতানে গাছ যেভাবে ঋজু বটবৃ‌ক্ষকে জড়িয়ে ক্রমশ উঠতে থাকে, তার সৌন্দর্য চারিদিকে মেলে ধরে আমাদের মনকে আকৃষ্ট করে, এ-গ্রন্থখানি ঠিক তেমনই। কোনো সাহিত্যিক গুণপনা প্রদর্শন নয় কিংবা তত্ত্বের কচকচিও নয়—একেবারে আলোচনার ভঙ্গিতে গল্পের ছলে লেখক তাঁর ভাবনার শাখা-প্রশাখাকে বিস্তার করেছেন আকর গ্রন্থটিকে অবলম্বন করেই। আলোচনা প্রসঙ্গে রামায়ণ, ভাগবত, গীতা, কথামৃত, লীলাপ্রসঙ্গ ইত্যাদি গ্রন্থ থেকে মাঝে মাঝেই চয়ন করেছেন বেশ কিছু মর্মস্পর্শী ঘটনা। ফলে আলোচনাটি বড় মধুর হয়ে উঠেছে। সুন্দর কাগজে বড় হরফে ছাপা এই গ্রন্থখানি পাঠ করে ভক্তগণ শ্রীরামকৃষ্ণ-ভাবগঙ্গায় অবগাহন করার সুযোগ পাবেন, নিঃসন্দেহে তা তৃপ্ত করবে সমস্ত অন্তঃকরণকে। গ্রন্থের শুরুতে লেখক সন্ন্যাসী তাঁর একান্ত অনুভবের কথা আমাদের জানিয়েছেন—“জীবনে কখনও কখনও এমন সময় আসে, এমন মুহূর্তের সন্ধান মেলে, যখন কথা মুখ থেকে বেরোলেই মনে হয়, এই অপরূপ মুহূর্তটির জাদু বোধহয় কেটে যাবে …। হৃদয়ের মণিকোঠায় এক অব্যক্ত ঐশ্বরীয় আনন্দের ঢেউ যেন ওপরের দিকে ধাক্কা দেয়। সেটাকে একটু প্রশ্রয় দিলেই প্রেমাশ্রু হয়ে চোখ দিয়ে গড়িয়ে সব ভাসিয়ে দেবে।” গ্রন্থখানি লেখকের এই অনুভবেরই বাঙ্ময় প্রকাশ।

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in