সপ্তম শতকে অদ্বৈতবাদী শঙ্করাচার্যের জগন্নাথধামে আগমনের পর খ্রিস্টীয়

[পূর্বানুবৃত্তি : আষাঢ় সংখ্যার পর]।।২।। সপ্তম শতকে অদ্বৈতবাদী শঙ্করাচার্যের জগন্নাথধামে আগমনের পর খ্রিস্টীয় একাদশ শতকে বিশিষ্টাদ্বৈতবাদী রামানুজাচার্য পুরুষোত্তমক্ষেত্রে আগমন করেন। এই মধ্যবর্তী সময়ে ওড়িশায় ব্রাহ্মণ্যধর্মের পুনরাভিষেক ঘটেছে এবং সামাজিক ক্ষেত্রে জগন্নাথ-মন্দিরের পূজারিগণের প্রভাব ও মর্যাদা উভয়ের বৃদ্ধি ঘটেছে। জগন্নাথদেবের সেবাসৌষ্ঠবের ঔজ্জ্বল্যসাধনে দারুব্রহ্মের মাহাত্ম্যপ্রচারে রামানুজের প্রভাব শ্রীক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। মন্দিরের নিকটে তাঁর প্রতিষ্ঠিত মঠ ‘শ্রীরামানুজকোট’ নামে প্রসিদ্ধ। পুরুষোত্তমক্ষেত্রে রামানুজপন্থী বৈষ্ণব মঠ রয়েছে অনেকগুলি, তাঁদের মধ্যে সর্ববৃহৎ ‘এমার মঠ’ সমস্ত বৈষ্ণব মঠের মধ্যে ঐশ্বর্য ও গৌরবে নিঃসন্দেহে অন্যতম শ্রেষ্ঠ। এর অপর নাম ‘শ্রীরাজগোপাল মঠ’ বা ‘শ্রীনিবাসকোট’। জগন্নাথ-মন্দিরের সিংহদ্বারের দক্ষিণ-পূর্বদিকে কালিকাদেবীসাহিতে অবস্থিত এই মঠের নামকরণের পিছনে এক ইতিহাস আছে। রামানুজাচার্যের প্রিয় শিষ্য ছিলেন গোবিন্দ—তামিলে যঁার সন্ন্যাসনাম ‘এম্বারুমানার’। ‘এম্বার’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ ‘মন্নাথ’। এই ‘এম্বার’ থেকেই ‘এমার’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি; সুতরাং রামানুজপন্থীরা গোবিন্দের নামানুসারে এই মঠের নামকরণ করেছেন বোঝা যায়। ১৮৮৮-র নভেম্বরে শ্রীশ্রীমায়ের সঙ্গে পুরীধামে পৌঁছে স্বামী ব্রহ্মানন্দজী ও স্বামী তুরীয়ানন্দজী এই এমার মঠে অবস্থান করে মাধুকরীর মাধ্যমে দিনযাপন এবং কঠোর কৃচ্ছ্রসাধন ও তপস্যা করেন। এর পূর্বে ১৮৮৭-তে স্বামী প্রেমানন্দজী, স্বামী সারদানন্দজী ও স্বামী অভেদানন্দজী পদব্রজে পুরীধামে পৌঁছে এই মঠেই অবস্থান করেন। রামানুজপন্থী মঠগুলির মধ্যে এমার মঠ ছাড়াও জগন্নাথ-মন্দিরের দক্ষিণদ্বারের সম্মুখে বালিসাহিতে অবস্থিত দক্ষিণপার্শ্ব শ্রীরামদাস মঠ ও দক্ষিণপার্শ্ব শ্রীরাঘবদাস মঠ এবং শ্রীমন্দিরের উত্তরদ্বারের সম্মুখে অবস্থিত উত্তরপার্শ্ব মঠ ও তার সন্নিকটস্থ ত্রিমালী মঠ ও রেব্‌সা মঠ উল্লেখযোগ্য। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, স্নানযাত্রার সময় জগন্নাথ ও সুভদ্রার হস্তী বেশ রাঘবদাস মঠ থেকে আনা হয়। কালিকাদেবীসাহিতে রয়েছে রামানুজপন্থী সমাধি মঠ। প্রাচীন বৈষ্ণব সাধক জয়রামদাস দ্বাদশীর দিন সমাধিমগ্ন হয়ে পরবর্তী দশমী পর্যন্ত এখানে সমাধিস্থ থাকতেন। দোলমণ্ডপসাহির সিদ্ধমঠ, কুণ্ঢেইবেণ্টসাহির পণ্ডিত মঠ, বালিসাহির জিয়রস্বামী মঠ, মার্কণ্ডেশ্বরসাহির কেট্‌কী মঠ রামানুজের দর্শনাবলম্বী। এছাড়া শ্রীক্ষেত্রে রামানুজপন্থী আরো দুটি মঠ রয়েছে, যেগুলি গৃহস্থ মঠাধীশগণের দ্বারা পরিচালিত। বালিসাহিতে অবস্থিত এই মঠ-দুটি হলো নৃসিংহাচারী মঠ ও বেঙ্কটাচারী মঠ। কথিত আছে, দাক্ষিণাত্যে রামানুজাচার্য প্রতিষ্ঠিত আটটি ‘গাদি’র মঠাধীশগণের পাঁচজন বিরক্ত ও...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in