সেই ঘটনা তো বহুবার আলোচিত হয়েছে। পূর্ববঙ্গের এক ভক্ত সুরেন্দ্রনাথ রায় শ্রীশ্রীমাকে চিঠিতে লিখেছিলেন তাঁর অসুস্থতার কথা। শেষনিঃশ্বাস ত্যাগের আগে একটিবার শ্রীশ্রীমায়ের দর্শনাকাঙ্ক্ষী তিনি। শ্রীশ্রীমা নিজের একটি ফটো এবং একবছরের বাঁধাই করা উদ্বোধন পাঠিয়ে দিয়ে জানিয়েছিলেন যে, ভয় নেই, অসুখ সেরে যাবে। সুরেন্দ্রবাবু যেন ফটোখানি দেখেন ও উদ্বোধন পাঠ করেন।

সেই ঘটনা তো বহুবার আলোচিত হয়েছে। পূর্ববঙ্গের এক ভক্ত সুরেন্দ্রনাথ রায় শ্রীশ্রীমাকে চিঠিতে লিখেছিলেন তাঁর অসুস্থতার কথা। শেষনিঃশ্বাস ত্যাগের আগে একটিবার শ্রীশ্রীমায়ের দর্শনাকাঙ্ক্ষী তিনি। শ্রীশ্রীমা নিজের একটি ফটো এবং একবছরের বাঁধাই করা উদ্বোধন পাঠিয়ে দিয়ে জানিয়েছিলেন যে, ভয় নেই, অসুখ সেরে যাবে। সুরেন্দ্রবাবু যেন ফটোখানি দেখেন ও উদ্বোধন পাঠ করেন। উদ্বোধন শ্রীশ্রীমায়ের বাণীশরীর। যখন উদ্বোধন পত্রিকায় কর্মরত ছিলাম, তখন ততটা অনুভব না হলেও সময়ের দূরত্বে এসে এখন তার কিছুটা মর্মগত হয়েছে। একটা অদৃশ্য শক্তি যে শুধু আমাকে নয়, সকল সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী ও কর্মিবৃন্দকে সবরকমের অকল্যাণ থেকে সুরক্ষিত রাখত—এখন তা বেশ মনে হয়। ভুলভ্রান্তি যে হতো না, তা নয়। মানুষের ভুল করা স্বাভাবিক। শ্রীশ্রীচণ্ডীতে তাই বলা হয়েছে—‘ভ্রান্তিরূপেণ সংস্থিতা’। কিন্তু ‘ক্ষমারূপধারিণী মা’ যে কেবল সেই ভ্রান্তিকে উপেক্ষা বা ক্ষমা করতেন তা শুধু নয়, ঐ ভ্রান্তির কারণে পরবর্তী সময়ে যদি কোনো অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়—সেটিও সযত্নে নিবারণ করতেন। সকলেই তো মায়ের সন্তান। সারকথা হলো—সন্তানের জন্য মায়ের কৃপাবর্ম ত্রিকাল-অবাধিত অর্থাৎ অতীতে ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। মায়েরই আশ্বাস স্মর্তব্য—“বিধিরও সাধ্য নাই আমার ছেলেদের রসাতলে ফেলে।” ছাত্রাবাসের অভিজ্ঞতা যাঁদের আছে, তাঁরা মনে হয় সকলেই আমার সঙ্গে সহমত হবেন যে, ছাত্রাবাসে থাকাকালীন মাঝে মাঝে খেয়াল হয়—মা (গর্ভধারিণী) অনেক দূরে বাড়িতে আছেন। কিন্তু গ্রীষ্মাবকাশে বা অন্য ছুটিতে বাড়ি ফিরে গেলে ঐ ‘মাঝে মাঝে মনে পড়া’ ব্যাপারটা আর থাকে না। একটা স্বতঃস্ফূর্ত অনুভব হয়—‘মা তো আছেনই’। বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার ব্যাপার সেখানে থাকে না। অন্তরের অন্তস্তলে মায়ের উপস্থিতিটাই মনে একটা নিভৃত আনন্দের স্রোত বজায় রাখে। ছোটবেলায় জয়রামবাটীতে গেলেও অনেকের মতো আমারও ঐরকম একটা অনুভব হতো৷ মাকে আলাদা করে মনে করার কোনো প্রয়োজন তখন অনুভব করতাম না। বাগবাজারে মায়ের বাড়ি বা উদ্বোধন কার্যালয়ে যাঁরা থাকেন, আমার বিশ্বাস, তাঁদেরও এরকম একটা স্বতঃস্ফূর্ত অনুভব হয়। এ যেন এক অনন্ত ভরসা। তার সঙ্গে একথাও মনে হতো যে, আমার কোনোপ্রকার হীনকর্ম বা চিন্তা...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in