দোলপূর্ণিমা আগত। বাংলার ঘরে, বিশেষ করে বৈষ্ণব ঘরানায় দোলযাত্রায় ‘বিদেশিনী’ নিবেদিতা কিভাবে গৃহীত হয়েছিলেন তার একটি অনবদ্য চিত্র পাই বিশিষ্ট লেখিকা সরলাবালা সরকারের (১৮৭৫—১৯৬১) লেখায়। তিনি পিতৃকুলের দিক থেকে ছিেলন বাংলা ভাষায় প্রথম আত্মজীবনী আমার

দোলপূর্ণিমা আগত। বাংলার ঘরে, বিশেষ করে বৈষ্ণব ঘরানায় দোলযাত্রায় ‘বিদেশিনী’ নিবেদিতা কিভাবে গৃহীত হয়েছিলেন তার একটি অনবদ্য চিত্র পাই বিশিষ্ট লেখিকা সরলাবালা সরকারের (১৮৭৫—১৯৬১) লেখায়। তিনি পিতৃকুলের দিক থেকে ছিেলন বাংলা ভাষায় প্রথম আত্মজীবনী আমার জীবন-এর লেখিকা রাসসুন্দরী দাসীর (১৮০৯—১৮৯৯) নাতনি। মাতৃকুলের দিক থেকে অমৃতবাজার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা এবং নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব শিশিরকুমার ঘোষ ও মতিলাল ঘোষ তাঁর দুই মামা। তিনি নিবেদিতা প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন, কাছ থেকে দেখেছেন নিবেদিতাকে। সেই বিরল অভিজ্ঞতা ধরা আছে তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ হারানো সঙ্গীত-এ। এই গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, ঘোষ পরিবারের সাথে বিশেষ করে শিশিরকুমার ঘোষের সাথে নিবেদিতার খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিল। একবার নিবেদিতা সরলাবালাদেবীর মামার বাড়িতে শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর আবির্ভাব উপল‌ক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। সেদিনের সেই মুহূর্তটি, যা এই গ্রন্থটিতে ধরা আছে, সেটি পাঠকদের কাছে নিবেদন করার মানসেই এই লেখা। ১৩১৩ অথবা ১৩১৪ বঙ্গাব্দের কথা। দোলের দিন শিশিরকুমার ঘোষ শ্রীগৌরপূর্ণিমা উৎসবের জন্য বাগবাজারের আনন্দ চ্যাটার্জি লেনের বাড়িতে বিশাল আয়োজন করেছিলেন। বাড়ির সামনে প্রকাণ্ড মাঠে মণ্ডপ বেঁধে শ্রীগৌরাঙ্গের মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। বর্তমানে অবশ্য সেই বাড়ি এবং মাঠ নেই। নিবেদিতা সেসময় রয়েছেন বোসপাড়ায়। এই উপল‌ক্ষে তাঁকেও উপস্থিত হওয়ার জন্য বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সরলাবালার ন-মামা মতিলাল ঘোষ নিবেদিতা সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত ছিলেন। তিনি বলতেন : “নিবেদিতা নিজেকে এমন করে নিবেদন করে দিয়েছেন যে, তাঁর নিজের আর কিছুই নেই।” সেজমামা শিশিরকুমার ঘোষ একদিন নিবেদিতার সম্বন্ধে বলেছিলেন : “প্রভু কুলীন গ্রামবাসী মালাধর বসুকে প্রকৃত বৈষ্ণবের ল‌ক্ষণ কি তাহা বুঝাইবার জন্য বলিয়াছিলেন, ‘যাহারে দেখিলে মুখে আইসে কৃষ্ণ নাম/ তাহারেই জানিবে তুমি বৈষ্ণব প্রধান।’ নিবেদিতার ভিতর আছে সেই ল‌ক্ষণ। তাঁহাকে দর্শন করিলে অভক্তের মনেও ভগবানের ভাব উদ্রেক হয়।” নিবেদিতা সেদিন নগ্নপদে উৎসব-প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়েছিলেন। “যেন ভাবাবেশে পথে বাহির হইয়াছিলেন।” প্রথমে মণ্ডপে, পরে সরলাবালার ন-মামার হাত ধরে বাড়ির তিনতলার ঠাকুরঘরের সামনে এসে দাঁড়ালেন। এই ঘরে “এক প্রসিদ্ধ ভক্তের অঙ্কিত মহাপ্রভু নিত্যানন্দ ও অদ্বৈতপ্রভুর তৈলচিত্র ছিল।...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in