ব্রহ্ম অমৃতস্বরূপে ও আনন্দস্বরূপে প্রতিভাত হন। স্বামীজীকে যখন প্রশ্ন করা হতো,
উপনিষদে ঈশ্বরের প্রকাশমানতাকে বলা হয়েছে—‘আনন্দরূপমমৃতং যদ্বিভাতি’।১ ব্রহ্ম অমৃতস্বরূপে ও আনন্দস্বরূপে প্রতিভাত হন। স্বামীজীকে যখন প্রশ্ন করা হতো, তিনি কেন এত ঠাট্টা-তামাশা পছন্দ করেন, তখন তিনি দৃপ্তকণ্ঠে জানাতেন—তিনি ঈশ্বরের সন্তান, আনন্দের সন্তান; কেন নিরানন্দে থাকবেন? ভক্তিযোগ-এ সাধনার প্রসঙ্গেও তিনি বলেছেন : “সর্বদা হাসিমুখে প্রফুল্ল থাকিলে কোন স্তবস্তুতি বা প্রার্থনা অপেক্ষা শীঘ্র ঈশ্বরের নিকট যাওয়া যায়। যাহাদের মন সর্বদা বিষণ্ণ ও তমোভাবে আচ্ছন্ন, তাহারা আবার ভালবাসিবে কি করিয়া?… অতএব যে ব্যক্তি সর্বদাই নিজেকে দুঃখিত বোধ করে, সে কখনও ঈশ্বরকে লাভ করিতে পারে না।”২ স্বামীজী ঘোষণা করেছিলেন : “If misery is religion, what is hell? No man has a right to make himself miserable. To do so is a mistake; it is a sin. Every peal of laughter is a prayer sent to God.”৩—যদি দুঃখই ধর্ম হয় তবে নরক কী? কোনো মানুষের নিজেকে দুঃখী করার অধিকার নেই। সেটা অন্যায়, পাপ। হাসির প্রতিটি লহরি ঈশ্বরের উদ্দেশে প্রার্থনা।শ্রীরামকৃষ্ণও ‘শুকনো সাধু’ হওয়া পছন্দ করতেন না। একদিন দক্ষিণেশ্বরে উচ্চতম আধ্যাত্মিক অবস্থার কথা হচ্ছে। সমাধি কী, মনের কোন অবস্থানে সমাধি হয় ইত্যাদি নানা বিষয় শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন। হঠাৎ তাঁর কৌতুককর মন্তব্য—“আমায় একজন বলেছিল, ‘মহাশয়! আমাকে সমাধিটা শিখিয়ে দিতে পারেন?’”৪ চারিদিকে হাসির রোল উঠল। হাসি-তামাশা ও ভজনগান বরানগর মঠজীবনের একটি অঙ্গ ছিল। শ্রীরামকৃষ্ণের মধ্যে তাঁর ত্যাগী সন্তানেরা ভাবসমাধির মুহুর্মুহু আবেশ দেখেছিলেন বলেই আসল-নকল তাঁদের জানা ছিল, তবে তা নিয়ে রসিকতাও করতে ছাড়তেন না। বরানগর মঠে শিবরাত্রির উপবাসের পর জলযোগে রসগোল্লা পেয়ে নরেন্দ্রনাথের রঙ্গপ্রিয়তা প্রকাশ পেল। নরেন্দ্রনাথ “রসগোল্লা মুখে করিয়া একেবারে স্পন্দহীন! চক্ষু নিমেষশূন্য! নরেন্দ্রের অবস্থা দেখিয়া একজন ভক্ত ভান করিয়া তাঁহাকে ধারণ করিলেন—পাছে পড়িয়া যান!“কিয়ৎক্ষণ পরে নরেন্দ্র—(রসগোল্লা মুখে রহিয়াছে)—চোখ চাহিয়া বলিতেছেন, ‘আমি—ভাল—আছি!’”৫ সমাধি নিয়ে শ্রীরামকৃষ্ণের শিষ্যরা যেমন মজা করেছেন, তেমনি অন্যের সমাধির ঢং দেখেও রগড় করেছেন। মঠ তখন আলমবাজারে। একদিন দুপুরে এক শৌখিন ভদ্রলোক এসে হাজির। গায়ে আলপাকার জামা, বুকে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹120/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
