কত স্মৃতি বিস্মরণের ঘূর্ণিতে তলিয়ে গেছে! কত স্মৃতি পুরানো বাড়ির মতো—ভঙ্গুর দশা, হাড়-পাঁজর বেরনো, ধূলিমলিন। আবার অনেক স্মৃতি তুতেনখামেনের মমির মতো আজও স্বর্ণোজ্জ্বল! সেগুলোর সবটুকু মনে আছে। মনে থাকে। আসলে নতুন স্মৃতিকে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিস্মরণের প্রবাহ খুব স্বাভাবিক। তা না হলে মানুষ স্মৃতিকাতরতার আবর্তে পড়ে যাবে। তখন স্মৃতিই হয়ে উঠবে মানসিক সমস্যা৷

কত স্মৃতি বিস্মরণের ঘূর্ণিতে তলিয়ে গেছে! কত স্মৃতি পুরানো বাড়ির মতো—ভঙ্গুর দশা, হাড়-পাঁজর বেরনো, ধূলিমলিন। আবার অনেক স্মৃতি তুতেনখামেনের মমির মতো আজও স্বর্ণোজ্জ্বল! সেগুলোর সবটুকু মনে আছে। মনে থাকে। আসলে নতুন স্মৃতিকে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিস্মরণের প্রবাহ খুব স্বাভাবিক। তা না হলে মানুষ স্মৃতিকাতরতার আবর্তে পড়ে যাবে। তখন স্মৃতিই হয়ে উঠবে মানসিক সমস্যা৷ এই রচনাটি লিখতে গিয়ে মনে হচ্ছে, স্মৃতিভ্রংশ হওয়া কোনো কাজের কাজ নয়। পরতে পরতে মনে থাকা উচিত ছিল। সেইসব মধুর, অপরূপ স্মৃতি কোন পথে হারিয়ে গেল! এক এক সময় ভিতরটা ভারি হয়ে আসে। সংসার-সমুদ্রে সংসারীদের জীবন মাছধরা নৌকার মতো ভাসছে দুলছে ঢেউয়ের আঘাতে কখনো কম্পিত কখনো শঙ্কিত। বয়সের মতো জীবনও মোহানার দিকে এগিয়ে চলেছে, আর পিছন পানে ফিরে এসে কূলে ভিড়বে না। সত্যি কথা বলতে, এই অনিশ্চিত যাত্রায় স্মৃতিটুকুই সম্বল। ভাগ্যিস মহামায়া, মহাদেবী ‘স্মৃতিরূপেণ সংস্থিতা’! ফলে মানুষ সব ভুলে যায় না। যাদের এই দুর্ভাগ্য তাড়া করে, তারা রোগগ্রস্ত হিসাবে চিহ্নিত। স্মৃতি নিয়ে এত কথা লিখতে হলো এজন্য যে, যাঁদের সম্বন্ধে অমৃতনির্ঝর মুহূর্তগুলির কথা বলতে বসেছি, তার সূচনার লগ্নটিকে পঞ্চাশ বছর আগে ফেলে এসেছি। হয়তো অতিক্রান্ত হয়ে গেছে আরো কয়েকটা বছর। সময়ের বিচারে বাহান্ন কী পঞ্চাশ, খুব বেশি পুরানো নয়। তবু স্মৃতি বড় প্রতারক। প্রতারণাই তার প্রিয় খেলা। তাই এই লেখায় কিছু অনিচ্ছাকৃত অপলাপ ঘটে গেলে লেখক ক্ষমাপ্রার্থী। তখন ক্লাস সিক্স বা সেভেনে পড়ি। তেরো বছরের কিশোর। কোনো একটা জরুরি কাজে (এই যে! আর মনে নেই) রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রমের সহ-সচিব স্বামী নিত্যানন্দ আমাকে এবং আরো দু-তিনজন ছাত্রকে নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ। “একটিবার মায়ের বাড়ি ঘুরে আসি, চল। এত কাছে এসে জগজ্জননীকে প্রণাম না করে ফিরে যাব? তা কী হয়!” গাড়ি দাঁড়াল চওড়া গলির ভিতরে একটা হলুদ রঙের বড়সড় বাড়ির সামনে। মহারাজ বললেন: “ওরে তোরা নাম। তোদের মধ্যে কেউ কি আগে কখনো মায়ের বাড়ি এসেছিস?”...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in