রাতের গভীর নিদ্রায় মগ্ন গ্রাম-শহরের লোকজন। আগের দিনের পরিশ্রমের ক্লান্তি। হঠাৎ প্রবল ঝাঁকুনি। দুলে উঠল বাড়ি। জোরে, খুব জোরে। দুলতেই থাকল।

স্থান তুরস্ক। তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩। সময় ভোর ৪টে বেজে ১৭ মিনিট। রাতের গভীর নিদ্রায় মগ্ন গ্রাম-শহরের লোকজন। আগের দিনের পরিশ্রমের ক্লান্তি। হঠাৎ প্রবল ঝাঁকুনি। দুলে উঠল বাড়ি। জোরে, খুব জোরে। দুলতেই থাকল। হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে অথবা ঘুম ভাঙার অবকাশ না দিয়ে কিছু বোঝার আগেই হেলতে দুলতে ভেঙে পড়ল শহরের আকাশচুম্বী আধুনিক স্থাপত্যের বাড়িগুলো। যেন সব তাসের ঘর! মাটি থেকে উঠল ধুলোর ঝড়। ছেয়ে গেল শেষরাতের নক্ষত্রোজ্জ্বল আকাশ। শহরাঞ্চল ও গ্রামের নিচু বাড়িগুলো এ ওর গায়ে হেলে পড়ে ভাঙল। কোনো আর্তস্বর কি বেরিয়েছিল? কেউ জানে না। শোনার মতো কেউ ছিল না তখন। হাজার হাজার মানুষ একমুহূর্তে যে যে-অবস্থায় ছিল ভাঙা বাড়ির দেওয়াল আর কংক্রিটের স্তূপের নিচে চাপা পড়ে রইল। বাদ যায়নি কোনো পশুও। রাস্তা ফেটে চৌচির। দু-ফাঁক হয়ে গেছে। ছিঁড়ে গেল সবরকমের বৈদ্যুতিক সংযোগ। একে শীতকাল, তায় সেখানে সূর্যের আলো আসে ভারতের থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা দেরিতে। গভীর শব্দহীন দৃষ্টিহীন অন্ধকারে নিমজ্জিত হলো দক্ষিণ ও মধ্য তুরস্ক এবং লাগোয়া উত্তর ও পশ্চিম সিরিয়ার এক বিশাল এলাকা। এরকম দোদুল্যমান অবস্থায় পুরো এলাকাটা ছিল ৮০ সেকেন্ড! শুধু তাই নয়, সেদিনই দুপুর ১টা ২৪ মিনিটে আবার একটা তীব্র ঝটকা। আবার দোলা। যেটুকু অবশিষ্ট ছিল তাও শেষ হয়ে গেল। তবু মাটিতে পড়ে থাকা ভাঙাচোরা স্থাপত্যের মাঝে কোনোভাবে এক-একটা ফাঁকে লুকিয়ে ছিল কিছু প্রাণ, কোনো নারী বা পুরুষ অথবা কোনো অসহায় শিশু। ভূমিকম্প। এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কোনোরকম পূর্বাভাস ছাড়াই হঠাৎ কেঁপে ওঠে মাটি। লণ্ডভণ্ড করে দেয় মুহূর্তে সবকিছু। সময় দেয় না অধিকাংশ সময় নিজেকে এবং অন্যকে বাঁচানোর। কতক্ষণই বা স্থায়ী হয় এই ভূ-কম্পন, বড়জোর কয়েক সেকেন্ড। এই সময়টুকুই যথেষ্ট মাটির ওপরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ইমারতগুলোকে ধূলিসাৎ করে দেওয়ার জন্য, যা-কিছু অত্যাধুনিক শহরে স্থাপত্যের গর্ব মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার জন্য, যত কিছু মাটির সাথে যুক্ত প্রযুক্তিনির্ভর সমারোহ—সব ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য। আসলে ভূমির...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in