১৯৫২ সালে বাবার সঙ্গে যখন আমরা লখনৌয়ে, তখন রামকৃষ্ণ মিশন এখনকার আফিনাবাদে

১৯৫২ সালে বাবার সঙ্গে যখন আমরা লখনৌয়ে, তখন রামকৃষ্ণ মিশন এখনকার আফিনাবাদে একটি ছোট বাড়িতে এবং শ্রীশ্রীমায়ের মন্ত্রশিষ্য ও তাঁর বিশেষ সান্নিধ্যধন্য রামময় মহারাজ—স্বামী গৌরীশ্বরানন্দজী তার সেক্রেটারি। সদা হাস্যময় মানুষটি শহরের শুধু বাঙালি নয়, সকলেরই অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। তাঁর সুব্যবস্থায় আমরা লখনৌয়ে তদানীন্তন বেলুড় মঠের প্রেসিডেন্ট স্বামী শঙ্করানন্দজীকে দর্শন করার সুযোগ পাই। রামময় মহারাজ ব্যবস্থা করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্ট মহারাজ লখনৌয়ে থাকাকালীন এক-একটি পরিবার চাইলে এক-একদিন তাঁর জন্য খাবার তৈরি করে দিতে পারবেন। আমার মা-ও তাই করেছিলেন। বিবাহের পরে ১৯৬২ সালে আমার স্বামী লখনৌতে বদলি হলে আবার মিশনে যাতায়াত শুরু করি। রামময় মহারাজ আমায় যে শুধু মনে রেখেছিলেন তাই নয়, আমাদের বাড়িতেও এসেছিলেন। একবার আমাদের শিশুকন্যার জন্মদিন উপল‌ক্ষে মিশনে সামান্য প্রণামি দিয়ে আসি। অবাক হয়ে গেলাম যখন তার পরই পূজনীয় মহারাজ এক মস্ত টিফিন ক্যারিয়ারে আমাদের জন্য প্রচুর প্রসাদ নিয়ে এলেন। ফল-ফুলের চাষ সম্বন্ধে অসাধারণ জ্ঞানের জন্য তিনি সারা শহরে ‘Rose Swami’ নামে পরিচিত ছিলেন। কত লোকের জন্য যে বিভিন্ন ফল-ফুল, বিশেষ করে গোলাপ-চারার কলম করে দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই! আমাদের বাড়িতে বড় বাগানে প্রচুর সজনে ফুলের গাছ ছিল। মহারাজ একবার আমায় বলেন, কয়েকটা মৌমাছির বাক্স আমাদের বাড়িতে রেখে যাবেন; কারণ সজনে ফুলে এত মধু থাকে যে, মৌমাছিরা পেট ভরে খেয়েও প্রচুর মধু চাকে সঞ্চয় করে। লখনৌ ছেড়ে চলে আসার পরও যোগাযোগ ছিল মহারাজের সঙ্গে। আমরা যখন মোগলসরাইতে (১৯৬৭-৬৮), তখন মহারাজ যখনি ‘All India Rose Show’-তে বিচারক হয়ে দিল্লি যেতেন, আমি স্টেশনে দেখা করতে যেতাম। একটু খাবার করে নিয়ে যেতাম। মহারাজ শিশুর মতো খুশি হতেন। ১৯৮৬ সালে আমার দী‌ক্ষা নেওয়ার ইচ্ছা হওয়ায় রামময় মহারাজকে জানাই। তাঁর বিশেষ বন্ধু স্বামী ভূতেশানন্দজী মহারাজ তখন সংঘের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং কাঁকুড়গাছি যোগোদ্যানের অধ্যক্ষ। রামময় মহারাজ আমাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন এবং একটি চিঠিও লিখে দেন। স্বামী ভূতেশানন্দজী কৃপা করে আমাকে আশ্রয় দেন। শেষ বয়সে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in