সে অনেক পুরানো কালের কথা। পুরীর কোনো এক ব্রাহ্মণ এক শবরের বাড়িতে আসে

শবরকথা শবরদের মধ্যে আজও এক জনশ্রুতি শুনি।১ সে অনেক পুরানো কালের কথা। পুরীর কোনো এক ব্রাহ্মণ এক শবরের বাড়িতে আসে অতিথি হয়ে। বিশেষ উদ্দেশেই ব্রাহ্মণের আগমন। কিন্তু সবাইকে তা জানতে দিলে কী আর চলে! তাই অতি যত্নে, অতি সন্তর্পণে ব্রাহ্মণ পা ফেলে একটু একটু করে। তারপর একদিন সে গৃহকন্যার পাণিপ্রার্থনা করে। প্রথমটায় কন্যার পিতা নিমরাজি ছিল, তবে ব্রাহ্মণের আন্তরিক ব্যবহারে খুশি হলে শুভদিনে বিবাহ হয়ে যায়। ব্রাহ্মণ এখন কুটুম্ব। আগন্তুক হলেও তাকে ঘিরে বয়ে বেড়ানো কৌতূহল শবরের সরল প্রাণে আর সয় না। দিনে দিনে সব কিছু যখন স্বাভাবিক হয়ে এসেছে, তখন সুযোগ বুঝে ব্রাহ্মণ শবরদের আরাধ্য দেবতাকে দর্শন করতে চাইল। কন্যার পিতা তখন পড়ল মহা মুশকিলে। একদিকে জামাতার সভক্তি অনুনয়; অন্যদিকে হৃদয়ের দেবতার সামনে ভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্যকে এনে প্রথাভঙ্গের গ্লানি—এই দুয়ের মাঝে পড়ে উপযুক্ত উপায় খুঁজে চলে সে। শেষে ঠিক হয়, ব্রাহ্মণের চোখে কাপড় বেঁধে নিয়ে যাওয়া হবে। ব্রাহ্মণ তো অতি চালাক। সে এই দিনটির অপেক্ষাতেই ছিল। চোখ সে বাঁধল ঠিকই; কিন্তু সঙ্গে এক পুঁটলিতে নিল কার্পাসের বীজ—সারাটি পথ ছড়াতে ছড়াতে চলল। একদিন সবার অলক্ষ্যে সেই চিহ্ন দেওয়া পথ ধরে ব্রাহ্মণ কৌশলে এসে উপস্থিত হলো শবরদের কুলদেবতা কিটুঙের থানে। বড় অদ্ভুত এ দেবতার গড়ন! তার না আছে ঠিক মতো হাত-পা, না আছে নাক-মুখ। কিন্তু তাতে কী! সে-বিগ্রহের এমন আকর্ষণ যে, হাত-পা ছাড়াই দেবতা এসে আলিঙ্গন করতে চান দর্শনার্থীকে। চাকার মতো চোখে চেয়ে চেয়ে দেখেন সবকিছু, অথচ তাতে কারো কোনো দোষ ধরা পড়ে না! তাঁর মধুর আবেদনে ব্রাহ্মণ মোহিত হলো। কিটুং বড় জাগ্রত দেবতা, আবার শবরদেরই মতো ভোলাভালাও। তাই ব্রাহ্মণ যখন উত্তম ভোজ্য, পানীয় ইত্যাদি নিবেদন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুরীতে আসার অনুরোধ জানায়, আগুপিছু কিচ্ছুটি না ভেবে কিটুং অমনি রাজি হয়ে গেলেন শিশুর মতো আনন্দে। তখন লুকিয়ে তাঁকে নিয়ে ব্রাহ্মণ পুরীতে এসে হাজির হয়। জগন্নাথ-মন্দির প্রতিষ্ঠা বিষয়ে ইন্দ্রদ্যুম্ন-বিশ্বাবসু সংক্রান্ত কাহিনি ব্যতীত...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in