কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ কৈবল্যোপনিষৎকে কৃষ্ণযজুর্বেদীয় শাখার অন্তর্গত বলে মনে করলেও সাধারণত এটিকে অথর্ববেদীয় উপনিষদ বলেই মনে করা হয়। বহু অণু-উপনিষদের মধ্যে কৈবল্যোপনিষৎ তার কাব্যিক ধ্বনিমাধুর্য,

উপক্রমণিকা কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ কৈবল্যোপনিষৎকে কৃষ্ণযজুর্বেদীয় শাখার অন্তর্গত বলে মনে করলেও সাধারণত এটিকে অথর্ববেদীয় উপনিষদ বলেই মনে করা হয়। বহু অণু-উপনিষদের মধ্যে কৈবল্যোপনিষৎ তার কাব্যিক ধ্বনিমাধুর্য, তাত্ত্বিক কাঠামোর শৃঙ্খলাবদ্ধ সুনিপুণ নির্মাণ, দার্শনিক গভীরতা তথা আভিজাত্য এবং নির্দেশের স্পষ্টতা ও অবক্রতার জন্য বিশিষ্টতার দাবি রাখে। এই উপনিষদে পুনরুক্তি দোষ প্রায় নেই বললেই চলে এবং এটি জটিল দার্শনিক তত্ত্বে কণ্টকিতও নয়। এই উপনিষদে কোনোরকম ভণিতা ছাড়াই কাজের কথাটি সরাসরি বলা হয়েছে। বেশ কয়েকটি উপনিষদে পৃথক প্রকরণে ভাগ করে যে যে তত্ত্ব পৃথক পৃথক ভাগে পরিবেশিত হয়েছে, এই অণু-উপনিষদে সেসব তত্ত্বের সারসংক্ষেপ একত্রে বিধৃত। সাধ্যবস্তুর সঙ্গে সঙ্গে তা প্রাপ্তির সাধন ও প্রাপ্তির ফলের কথাও সংক্ষেপে উল্লেখ করতে শ্রুতি এখানে কোনো কার্পণ্য করেননি। অন্যান্য উপনিষদের মতো এখানেও দেখা যায় যে, শিষ্য (বা ছাত্র) চরম এবং পরম জ্ঞানপ্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গুরু বা আচার্যের কাছে যাচ্ছেন। এখানে শিষ্য হলেন ঋগ্বেদাচার্য, সাধনচতুষ্টয়সম্পন্ন মহর্ষি আশ্বলায়ন এবং আচার্য হলেন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা স্বয়ং। এই উপনিষদে আচার্য স্পষ্ট করে বলেছেন যে, গৃহস্থাশ্রমে ভোগের মধ্য থেকে কর্ম করে মুক্তিলাভ করা যায় না। এষণাসমূহের ত্যাগ অর্থাৎ সন্ন্যাসই হলো মোক্ষের সাধন। সাধককে নিভৃতে ধ্যানাভ্যাসের মধ্য দিয়ে আত্মসাক্ষাৎকারের জন্য প্রযত্ন করতে হবে। জীবাত্মা ও পরমাত্মার অভিন্নতা দর্শনের সাধনার সিদ্ধিতেই এই উপনিষদের প্রকৃত তাৎপর্য। শান্তিপাঠ ওঁ ভদ্রং কর্ণেভিঃ শৃণুয়াম দেবাভদ্রং পশ্যেমাক্ষভির্যজত্রাঃ।।স্থিরৈরঙ্গৈস্তুষ্টুবাংসস্তনূভি-র্ব্যশেম দেবহিতং যদায়ুঃ।। অন্বয়—[হে] দেবাঃ (দেবগণ অথবা আমার দেহেন্দ্রিয়-মনের অধিপতি দৈবী শক্তিসমূহ, [তোমাদের অনুগ্রহে আমরা যেন]) কর্ণেভিঃ* ([আমাদের] শ্রবণেন্দ্রিয়ের দ্বারা) ভদ্রম্ (কল্যাণ বচন [ব্রহ্ম-প্রতিপাদক বেদান্তবাক্যসমূহ, কল্যাণময়ী ভাগবতী কথাসকল]) শৃণুয়াম (শুনতে যেন সমর্থ হই, আমরা যেন কখনো বধির হয়ে না যাই); [হে] যজত্রাঃ (যজনীয় দেবগণ) [ভাগবতী কথা শ্রবণ করে, ভগবানের ধ্যানে নিরত হয়ে আমরা যেন] অ‌ক্ষভিঃ (চ‌ক্ষুসমূহের দ্বারা) ভদ্রম্ (শোভন বিষয় [পরমেশ্বরকে]) পশ্যেম (দর্শন করতে সমর্থ হই [অন্ধ না হয়ে গিয়ে পরমেশ্বরকে অন্তরে-বাহিরে দর্শন করতে সমর্থ হই]); স্থিরৈঃ (দৃঢ়-অচঞ্চল, সুস্থ-সবল) অঙ্গৈঃ (হস্ত-পদাদি অবয়ববিশিষ্ট) [এবং] তনূভিঃ (শরীরের সঙ্গে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in