সংশয়-বিপর্যয়ের ক্ষেত্র ছাড়া একই বস্তু যার দ্বারা জ্ঞাত হয়, আবার তার দ্বারা যদি সেই বস্তু অবিজ্ঞাতও হয়—তাহলে সেটা বিরুদ্ধ কথা হবে। সংশয় মানে সন্দিগ্ধজ্ঞান—‘এটা হবে কি হবে না?’—এইরূপ জ্ঞান।

।।১৭।। সংশয়-বিপর্যয়ের ক্ষেত্র ছাড়া একই বস্তু যার দ্বারা জ্ঞাত হয়, আবার তার দ্বারা যদি সেই বস্তু অবিজ্ঞাতও হয়—তাহলে সেটা বিরুদ্ধ কথা হবে। সংশয় মানে সন্দিগ্ধজ্ঞান—‘এটা হবে কি হবে না?’—এইরূপ জ্ঞান। দড়িও হতে পারে, আবার সাপও হতে পারে—এইরকম উভয়কল্পাত্মক জ্ঞান। আর বিপরীতজ্ঞান হলো—দড়িকে দড়ি বলে না জেনে সাপ বলে জানা; সেখানে সে জানেও বটে আবার জানে নাও বটে। জানে না মানে স্বরূপেতে জানে না। ‘ন চ ব্রহ্ম সংশয়িতত্বেন জ্ঞেয়ম্‌, বিপরীতত্বেন বা ইতি নিয়ন্তুং শক্যম্‌’—[আবার] এখানে এরকম নিয়মও হতে পারে না যে, ব্রহ্মকে যখন আমি জানব, তখন সংশয়জ্ঞানরূপেই জানব অথবা বিপরীতজ্ঞানরূপেই জানব। কারণ, ‘সংশয়-বিপর্যয়ৌ হি সর্বত্র অনর্থকরত্বেনৈব প্রসিদ্ধৌ’—সংশয়-বিপর্যয়রূপ জ্ঞান সর্বদা অনর্থকর, অনিষ্টকর বলেই প্রসিদ্ধ আছে। অর্থাৎ সংশয়-বিপর্যয়রূপ জ্ঞানে কোনো কল্যাণ হবে না, এর দ্বারা কোনো ফল হবে না। শিষ্যের অসন্ধিগ্ধতা শাঙ্করভাষ্য—এবমাচার্যেণ বিচাল্যমানোঽপি শিষ্যো ন বিচচাল। “অন্যদেব তদ্বিদিতাদথো অবিদিতাদধি” ইত্যাচার্যোক্তাগম-সম্প্রদায়বলাৎ উপপত্ত্যনুভববলাচ্চ, জগর্জ চ ব্রহ্মবিদ্যায়াং দৃঢ়নিশ্চয়তাং দর্শয়ন্নাত্মনঃ। কথমিতি উচ্যতে—যো যঃ কশ্চিৎ নোঽস্মাকং সব্রহ্মচারিণাং মধ্যে তৎ মদুক্তং বচনং তত্ত্বতো বেদ, সঃ তদ্‌ ব্রহ্ম বেদ। কিং পুনস্তদ্বচনমিত্যত আহ—নো ন বেদেতি বেদ চেতি। যদেব “অন্যদেব তদ্‌বিদিতাদথো অবিদিতাদধি” ইত্যুক্তম্‌, তদেব বস্তু অনুমানানুভবাভ্যাং সংযোজ্য নিশ্চিতং বাক্যান্তরেণ ‘নো ন বেদেতি বেদ চ’ ইত্যবোচদাচার্যবুদ্ধি-সংবাদার্থম্‌, মন্দবুদ্ধিগ্রহণব্যপোহার্থঞ্চ। তথাচ গর্জিতমুপপন্নং ভবতি—‘যো নস্তদ্বেদ’ ইতি। ২।২।। ব্যাখ্যা—‘এবমাচার্যেণ বিচাল্যমানোহপি শিষ্যো ন বিচচাল’—এইরূপ আচার্য শিষ্যকে বিভ্রান্ত করলেও শিষ্য বিভ্রান্ত হলেন না। ‘বিচাল্যমান’ মানে বুদ্ধিকে সংশয়িত করে দেওয়া—তাই তো, এটা কি হবে? ‘শিষ্যো ন বিচচাল’—শিষ্য কিন্তু বিচলিত হলেন না। “‘অন্যদেব তদ্বিদিতাদথো অবিদিতাদধি’ ইত্যাচার্যোক্তাগম-সম্প্রদায়বলাৎ উপপত্ত্যনুভববলাচ্চ”—[পরন্তু] ‘ব্রহ্ম বিদিত বস্তুর থেকেও ভিন্ন আবার অবিদিত বস্তুর থেকেও ভিন্ন’—এই আচার্যোক্ত আগমবাক্য; আচার্য কর্তৃক কথিত যে-শাস্ত্র, সেই শাস্ত্র-পরম্পরা [আগমসম্প্রদায় অর্থাৎ আগমশাস্ত্রের সম্প্রদায় পরম্পরা]—তার দ্বারা বলিষ্ঠ হয়ে, সেই বলে বলীয়ান হয়ে এবং ‘উপপত্ত্যনুভববলাচ্চ’—যুক্তি ও অনুভব—তার বলেতেও অর্থাৎ শাস্ত্রবল, তর্কবল এবং অনুভববলে বলীয়ান হয়ে শিষ্য ‘জগর্জ চ’—গর্জন করলেন। কী করে? ‘ব্রহ্মবিদ্যায়াং দৃঢ়নিশ্চয়তাং দর্শয়ন্নাত্মনঃ’—ব্রহ্মবিষয়ে নিজের দৃঢ়নিষ্ঠা দেখিয়ে যে, আমি পরিষ্কার করে বুঝেছি—আমার নিশ্চয়জ্ঞানটা সংশয়জ্ঞান নয়, বিপর্যয়জ্ঞান নয়। নিজের...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in