বারাণসী, অবিমুক্তক্ষেত্র, রুদ্রাবাস, মহাশ্মশান, আনন্দকানন, স্বর্গভূমি—কাশীর কতই নাম! কিন্তু ভক্ত হনুমানের

বারাণসী, অবিমুক্তক্ষেত্র, রুদ্রাবাস, মহাশ্মশান, আনন্দকানন, স্বর্গভূমি—কাশীর কতই নাম! কিন্তু ভক্ত হনুমানের কাছে যেমন ‘রামঃ কমললোচনঃ’, তেমনি ‘কাশী’—এই দুই অক্ষরের ছোট্ট সুখোচ্চাৰ্য নামটিই দেবাদিদেব মহাদেবের সবচেয়ে মিষ্ট লাগে। হরগৌরী নিজেদের সংসার যে-ভূমিতে গড়েছেন সে-ধাম পুণ্য না হয়ে থাকে কী করে! সেই সত্যযুগ থেকে এই পুণ্যধামে দেব, দেবী, যোগিনী প্রমুখ অনেকেরই আগমন। এছাড়াও বিষ্ণুর অবতার বুদ্ধদেব, শিবাবতার শঙ্করাচার্য, কবীর, তুলসীদাস, শ্রীচৈতন্য, ত্রৈলঙ্গস্বামী, ভাস্করানন্দ স্বামী, বিশুদ্ধানন্দ স্বামী, শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, কৃষ্ণানন্দ স্বামী প্রমুখ অনেক দেবাত্মা বা দেবকল্প মহাপুরুষ কাশীধাম দর্শন করে ধন্য হয়েছেন এবং কাশীধামকেও ধন্য করে গেছেন। দুজন জৈন তীর্থঙ্কর—সুপার্শ্ব ও পার্শ্বনাথ এই পুণ্য ভূমিতেই আবির্ভূত হয়েছিলেন। আবার বিদেশ থেকে, সেকালের চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ, একালের মার্কিন পর্যটক রসিকপ্রবর মার্ক টোয়েন, প্রাচ্যের গুণমুগ্ধ ফরাসি লেখক পিয়ের্ লোটি, প্রাচ্য কলার পক্ষপাতী ইংরেজ ই. বি. হেভেল, এমনকী হিন্দুধর্মদ্বেষী খ্রিস্টান মিশনারি পাদরিরাও ‘ভুবনসুন্দরী বারাণসী’র সৌন্দর্য-গাম্ভীর্য দেখে মুগ্ধ না হয়ে থাকতে পারেননি। “সা কাশী ত্রিপুরারিরাজনগরী পায়াদ-পায়াজ্জগৎ।” সেই চিরপ্রিয়, চিরশ্রেয়, চির-আকাঙ্ক্ষিত, চির-আরাধিত কাশী হিন্দুর কাছে চির-পুরাতন, চিরনতুন, ‘সকল তীর্থের রানি’। তীর্থ, মৃত্যু, জীবন, শোক, উৎসব, ঘাট-যাপন—সব নিয়ে এই শহর ভারতীয় সংস্কৃতির মধ্যমণি। কাশীদর্শনে যে-হারে তীর্থযাত্রীদের আগমন, তার চেয়ে বেশি পরিব্রাজক ও পর্যটকদের আনাগোনা। এই পর্যটকদের মধ্যে বাঙালির সংখ্যাও কিছু কম নয়। কাশী বাঙালির হৃদয়ে বসত করে। তাই জীবনে অন্তত একবার কাশীভ্রমণের আশা পোষণ করে না—এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তার এক স্মৃতিচিহ্ন সঙ্গে রাখতে চায়, আর সেটি যদি সেখানকার লোকশিল্পের হয়? কাশীর লোকশিল্প হলো কাঠের পুতুল। কাশী বহু যুগ আগে থেকেই জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, সংগীত, নৃত্য, বস্ত্রশিল্প ও কারুশিল্পের প্রধান কেন্দ্ররূপে গণ্য। সুদীর্ঘকাল ধরে বংশানুক্রমিকভাবে করে আসা দক্ষ শিল্পীদের হাতে তৈরি উজ্জ্বল রঙে আঁকা কাঠের পুতুল ভারতীয় লোকশিল্পের এক অমূল্য সম্পদ। কাশীর এই কাঠের পুতুল ২০১৪ সালে ‘GI Tag’ পায়। রাম খেলোয়ান সিং একজন দক্ষ কারিগর। তাঁর পূর্বপুরুষরা বহুকাল ধরে এই ব্যবসা করে আসছেন। তিনি...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in