ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীতে সুরসৃষ্টিকারী যে-যন্ত্রগুলো আছে তাদের মধ্যে নবীনতম বলা যেতে পারে এসরাজকে। এই যন্ত্রটির উৎপত্তি আনুমানিকভাবে আজ থেকে প্রায় আড়াইশো বছর আগে। ছড়ি দিয়ে বাজানো যায় এমন যে-দুটি যন্ত্রের উল্লেখ প্রাচীন ভারতীয় সংগীতে আমরা পাই, সেগুলো হলো মন্দ্রবাহার এবং তাউস বা ময়ূরীবীণা।

ইতিহাস ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীতে সুরসৃষ্টিকারী যে-যন্ত্রগুলো আছে তাদের মধ্যে নবীনতম বলা যেতে পারে এসরাজকে। এই যন্ত্রটির উৎপত্তি আনুমানিকভাবে আজ থেকে প্রায় আড়াইশো বছর আগে। ছড়ি দিয়ে বাজানো যায় এমন যে-দুটি যন্ত্রের উল্লেখ প্রাচীন ভারতীয় সংগীতে আমরা পাই, সেগুলো হলো মন্দ্রবাহার এবং তাউস বা ময়ূরীবীণা। সারেঙ্গি অনেক প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র হলেও আমাদের বর্তমান আলোচনায় সেটাকে রাখছি না। গঠনগত দিক থেকে বা আকৃতিতে সারেঙ্গির সঙ্গে এসরাজের কোনো মিল নেই। তবে এসরাজের উৎপত্তিতে সারেঙ্গির প্রভাব যে আছে তা অস্বীকার করা যায় না। আজ থেকে আনুমানিক আড়াইশো বছর আগে যে সংগীতের চর্চা বাংলায় হতো তার মূল পীঠস্থান ছিল বিষ্ণুপুর আর কলকাতা। এই সময়ে লখনৌ এবং বেনারস অঞ্চলে টপ্পা ও ঠুংরি গানের প্রচলন ছিল কিন্তু বাংলায় মূলত ধ্রুপদ গানের চর্চাই হতো। এই সময়ে বিষ্ণুপুর থেকে কয়েকজন সংগীতজ্ঞ টপ্পা ও ঠুংরি শেখার উদ্দেশ্যে বেনারস, লখনৌতে গিয়েছিলেন। তার কাছাকাছি সময়েই পাঞ্জাব থেকে এই অঞ্চলে গান শেখার জন্য এসেছিলেন ঈশ্বরী রাজপ্রসাদ নামে এক সংগীতজ্ঞ, সঙ্গে এসেছিলেন ছাত্ররাও। এঁদের মধ্যে প্রধান ছিলেন বিহারিজী এবং লক্ষ্মণ দাসজী। মনে করা হয়, এই দুজনই এসরাজ আবিষ্কার করে বা বানিয়ে তাঁদের গুরু ঈশ্বরী রাজপ্রসাদের নামে নাম রাখেন। ‘ইসরাজ’ থেকে ‘এসরাজ’ কথাটি এসেছে। এছাড়া আরো যে-মতটি প্রচলিত আছে তা হলো—কাশীধামের সংগীতপ্রেমিক ও সারেঙ্গিবাদক নবী বক্স এই যন্ত্রের আবিষ্কার করেছিলেন। একথা রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায় এস্‌রার্‌-তরঙ্গ নামে তাঁর বইতে লিখেছেন। এই বিষয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনায় এখন যাব না। এটি গবেষণার বিষয় হতে পারে। অনেকে মনে করেন, যন্ত্রটি আরব বা পারস্য থেকে এসেছে, কিন্তু সে-সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না। প্রাচীন কোনো গ্রন্থেও এই যন্ত্রের নাম নেই। এসরাজের উৎপত্তি সম্পর্কে এই ধরনের যে-মতগুলি প্রচলিত আছে যেগুলি ক্ষেত্রমোহন গোস্বামী তাঁর আসু-রঞ্জনি তত্ত্ব বইতে ‘সংগীত সার’ অংশে লিখেছেন। বিভিন্ন সংগীতের ইতিহাসগ্রন্থে এসরাজের কোনো উল্লেখ পাই না। এমনকী রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায় এস্‌রার্‌-তরঙ্গ বইতে যে-কথাগুলি বলেছেন তার মধ্যে ঈশ্বরী রাজপ্রসাদের নামই বেশি উল্লিখিত...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in