উদ্বোধন সম্পর্কে প্রথম যে-স্মৃতির কথা মনে পড়ে, তা হলো একটি লেখা—বইটির বাইরে গেরুয়া রঙের প্রচ্ছদপট, তাতে বাগবাজারের ‘শ্রীশ্রীমায়ের বাড়ী’র ছবি ছাপা আর সেই লেখাটির কয়েকটি লাইনের সারমর্ম—“যিনি বারবার ভূপতিত হয়েও আবার উঠে দাঁড়াতে পারেন, তিনিই ঠিকঠিক ধার্মিক।” তারপর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও এবং বহু স্মৃতি মুছে গেলেও এই কথাটি কিছুতেই ভোলা সম্ভব হয়নি৷

উদ্বোধন সম্পর্কে প্রথম যে-স্মৃতির কথা মনে পড়ে, তা হলো একটি লেখা—বইটির বাইরে গেরুয়া রঙের প্রচ্ছদপট, তাতে বাগবাজারের ‘শ্রীশ্রীমায়ের বাড়ী’র ছবি ছাপা আর সেই লেখাটির কয়েকটি লাইনের সারমর্ম—“যিনি বারবার ভূপতিত হয়েও আবার উঠে দাঁড়াতে পারেন, তিনিই ঠিকঠিক ধার্মিক।” তারপর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও এবং বহু স্মৃতি মুছে গেলেও এই কথাটি কিছুতেই ভোলা সম্ভব হয়নি৷ ‘ধার্মিক’ শব্দের এমন চমকপ্রদ মূল্যায়ন আর কোথাও নজরে পড়েনি। এখন মনে হয়, এটাই তো উদ্বোধন-এর কাজ! জীবনের খেই ধরিয়ে দেওয়া। এটি তো সামান্য একটি উদাহরণ। এরকম কত অক্ষয়, প্রেরণাদায়ী ভাবনা মণিমুক্তোর মতো উদ্বোধন ছড়িয়ে চলেছে এতগুলো বছর ধরে সমাজক্ষেত্রের ওপর! প্রজন্মের পর প্রজন্ম সেগুলো সযত্নে তাদের মনে পালন করেছে, পোষণ করেছে। উর্বরা জমি যেমন বীজকে লালন করে, ফসল ফলায়—ঠিক সেই পথ ধরে সমাজজীবন পুষ্ট হয়েছে নীরবে। এই একই ধারাতে উদ্বোধন-এর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান শ্রীরামকৃষ্ণ, শ্রীমা সারদাদেবী, স্বামী বিবেকানন্দ এবং শ্রীরামকৃষ্ণের অন্য পার্ষদদের কথা এবং স্মৃতি ধারণ। যখন মানবসমাজ দুর্বল হয়ে পড়ে, গ্লানিযুক্ত হয়, তখন তার পুষ্টিবিধানের জন্যই অবতারেরা আসেন। তাঁদের কণ্ঠ শুনে, তাঁদের আজ্ঞা পালন করে সমাজ আবার উঠে দাঁড়ায়—নিজের হুঁশ ফিরে পায়। খ্রিস্ট, বুদ্ধ বা এঁদের সহচরদের কথা এত নিখুঁতভাবে ধরে রাখা যায়নি। বর্তমান যুগেও অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও যেটুকু সংরক্ষিত হয়েছে তা বিশেষ করে উদ্বোধন-এর দান। অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় কিছু কিছু সংরক্ষিত হয়েছে সত্য, কিন্তু যেহেতু এই ভাবান্দোলনের উৎস বঙ্গভূমি এবং প্রথম প্রজন্মের প্রত্যক্ষদর্শীরা অধিকাংশই যেহেতু এই ভাষাতেই কথা বলেছেন, সেজন্য এক্ষেত্রে উদ্বোধন-এর ভূমিকা অনন্য। এই ভাবান্দোলনের ওপর লিখিত গবেষণামূলক বইগুলির অন্যতম প্রধান ‘সোর্সবুক’ উদ্বোধন৷ বর্তমানেও উদ্বোধন-এর এই যাত্রা অব্যাহত, অনলসভাবে সে শ্রেষ্ঠ মস্তিষ্কপ্রসূত সাম্প্রতিকতম ভাবনাগুলি বিতরণের পাশাপাশি সযত্নে তার রত্নমঞ্জুষায় তুলে রাখছে ভবিষ্যতের সত্যান্বেষকদের জন্য। সমাজের বুকে কোনো ব্যক্তি বা কোনো প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর প্রাসঙ্গিক থাকে তার অবদানের ওপর। যে ‘ইউজফুল' নয়, সে আস্তে আস্তে সমাজে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। দেহের পুষ্টির জন্য...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in