ভারতের ধর্ম-সংস্কৃতির ইতিহাস যথেষ্ট সমৃদ্ধ। শক্তিপীঠের আলোচনা সেই ঐতিহ্যের ব্যাপকতাকেই
ভারতের ধর্ম-সংস্কৃতির ইতিহাস যথেষ্ট সমৃদ্ধ। শক্তিপীঠের আলোচনা সেই ঐতিহ্যের ব্যাপকতাকেই স্মরণ করায়। বিশ্বাস ও গভীর শ্রদ্ধাবোধ থেকেই মানুষের মন সতত প্রণত থাকে এই পীঠস্থানগুলিতে। এই পীঠগুলির মধ্যে একটি হলো ত্রিস্রোতা মহাপীঠ। এই মহাপীঠ সম্পর্কে দেবীভাগবত, হেবজ্রতন্ত্র, সাধনমালা, রুদ্রযামল, অষ্টাদশ পীঠ, প্রাণতোষিণীতন্ত্র, কুব্জিকাতন্ত্র-এ কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও বৃহন্নীলতন্ত্র, তন্ত্রচূড়ামণি, পীঠনির্ণয়তন্ত্র, অন্নদামঙ্গল, জ্ঞানার্ণবতন্ত্র, শাক্তানন্দ তরঙ্গিণী, শিবচরিত-এ এই পীঠের উল্লেখ রয়েছে। পীঠনির্ণয়তন্ত্র অনুসারে এটি ষোড়শতম মহাপীঠ। সেখানে বলা হয়েছে : “ত্রিস্রোতায়াং বামপদে ভ্রামরী ভৈরবেশ্বরঃ।”১ অর্থাৎ দেবীর বাম পা পতিত হয়েছিল ত্রিস্রোতায়। লোকমতে, দেবীর নাম এখানে বিভিন্ন। কখনো দেবীর নাম ‘চণ্ডিকা’ ও ভৈরব ‘সদানন্দ’। আবার ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল-এর মতে দেবীর নাম ‘অমরী’, ভৈরব ‘অমর’। কারোর মতে দেবী ‘ভ্রামরী’ এবং ভৈরব হলেন ‘ঈশ্বর’ বা ‘জল্পেশ’। তবে স্থানীয়দের কাছে দেবী ‘সিদ্ধেশ্বরী’ নামেই অধিক পরিচিত। কালিকাপুরাণ-এ এই দেবীর উপস্থিতির কথা জানা যায় জল্পেশধামের কাছে। নামের মতোই দেবীর শ্রীঅঙ্গ ঘিরেও মতান্তর রয়েছে। শিবচরিত অনুসারে, দেবীর জানু পতিত হয়েছিল এই ত্রিস্রোতায়। উপপীঠ গ্রন্থ অনুসারে এটি ২১তম উপপীঠ ও দেবীর পদাংশ পতিত হয়েছিল এখানে। অন্নদামঙ্গল-এ উল্লিখিত তিরোতা এবং ত্রিস্রোতা একই জায়গা কি না সেসম্পর্কেও ভিন্ন মত রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায় অবস্থিত এই মহাপীঠ। এখানকার করতোয়া, জঠদা ও তিস্তা নদীর তীরেই গড়ে উঠেছে দেবীর মন্দির। উত্তরবঙ্গের তিস্তা নদীর পাড়ের শালবাড়ি গ্রামই এই মহাপীঠের অবস্থান বলে অনেকে মনে করেন। আবার মতান্তরে ময়নাগুড়ি থানার অন্তর্গত গাড়তলি জল্পীশ গ্রামের জল্পেশ্বর-মন্দিরেই দেবীর পীঠস্থান। পূর্বা সেনগুপ্ত একান্ন পীঠ গ্রন্থে লিখেছেন : “লোকপ্রবাদ অনুসারে এই গ্রামে বিখ্যাত জল্পেশ্বরের মন্দিরই পীঠস্থান।”২ জল্পেশধাম এক পুণ্যতীর্থ। শৈবক্ষেত্র হিসাবে তার খ্যাতি। এই জল্পেশদেবের খ্যাতিলাভের একটি সুন্দর বর্ণনা জানতে পারা যায় স্কন্দপুরাণ-এর কাহিনি থেকে। গল্পের শুরু হয় জল্প নামে এক রাজার কথা থেকে। তাঁর পাঁচ পুত্র ছিল—সুবাহু, শত্রুমর্দন, জয়, বিজয় ও বিক্রান্ত। বৃদ্ধবয়সে রাজা বাণপ্রস্থে গমনের কথা ভেবে রাজ্যকে পাঁচ ভাগে ভাগ করলেন এবং পাঁচ পুত্রের হাতে তুলে দিলেন। রাজার গৃহত্যাগের পর মন্ত্রীদের কুপরামর্শে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
