হিমগিরি

প্রকৃতির বিশালতা অন্তর্লোকে ব্যাপ্তির প্রতিধ্বনি তোলে। হেমন্তের মজে যাওয়া বিকেল জাগতিক নশ্বরতায় চেয়ে থাকে উন্মনা। আবার রৌদ্রস্নাত শীতের সোনালি সকাল প্রাণের উষ্ণতায় ভরপুর। বাহ্য নিসর্গের প্রতিফলনেই হৃদয়তন্ত্রীর ওঠানামা। অসীম কল্পলোকে যে-মনের সাবলীল গতায়াত, তার ক্ষমতা সীমিত নয়; সে অনন্তকে ধারণা করতে পারে। হিমালয়ের অঙ্গে বিপুলতার বিস্ময়-বিধৃতি মনের সেই অনন্ত শক্তিকে সহজেই জাগরিত করে। পর্বতের মৌন তাপসরূপে হিমলেপের মহাশ্বেত গাম্ভীর্য নগাধিরাজকে ঋষিত্বের মহিমায় সুস্থিত করেছে। সে তার বাধাহীন বিস্তারে প্রত্যেককে অঙ্গীকৃত করে রাখে। তার বিশালতায় সকল প্রাণবিন্দু আপন আপন ক্ষুদ্র সত্তাকে মিশিয়ে দিয়ে অশেষের সন্ধান পেতে চায়। হিমগিরি তাই অনন্তের জলছবি। কঠোর শৈত্য বুকে নিয়ে তার দুর্মর বৈরাগ্য; আবার শীতলতায় তার প্রাঞ্জল জীবনের অযুত হাতছানি।