শ্রীরামকৃষ্ণের এবারের লীলা গোপনলীলা—অনাড়ম্বর লীলা। তিনি ধরায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন বাংলার এক নিভৃত পল্লীর গোপন অঞ্চলে। হুগলী জেলার তৎকালীন এক অখ্যাত গ্রাম—কামারপুকুরে। দ‌ক্ষিণেশ্বরে সিদ্ধিলাভের পর তাঁর এমনি অবস্থা—ভক্ত সঙ্গে বিলাস করার জন্য মথুরবাবুদের কুঠির ছাদের ওপরে গিয়ে ডেকে বলতেন—“ওরে তোরা কে কোথায় আছিস আয়, আমি যে একলা থাকতে পাচ্ছি না।” সে আহ্বান গিয়ে পৌঁছল বাংলার কয়েকটি অনাঘ্রাত কুসুমসম নির্মল চরিত্র যুবকের অন্তরে। শ্রীরামকৃষ্ণের আহ্বান মন্ত্র তাঁদের হৃদয় তন্ত্রে ধৃত হল। এ নিত্যকালের ডাক, যে ডাকে সাড়া দিয়েছিল রাখাল বালক আর গোপবাল্যগণ। সে আহ্বানে এগিয়ে এসেছিল র‌ক্ষপুরীর মনুুষ্যেতর প্রাণী আর অরণ্যবাসী বানরগণ। সে আকর্ষণে এগিয়ে এল মরুবাসী সাধারণ মানুষ। আর অপরবারে সাড়া দিয়েছিল […]

শ্রীরামকৃষ্ণের এবারের লীলা গোপনলীলা—অনাড়ম্বর লীলা। তিনি ধরায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন বাংলার এক নিভৃত পল্লীর গোপন অঞ্চলে। হুগলী জেলার তৎকালীন এক অখ্যাত গ্রাম—কামারপুকুরে। দ‌ক্ষিণেশ্বরে সিদ্ধিলাভের পর তাঁর এমনি অবস্থা—ভক্ত সঙ্গে বিলাস করার জন্য মথুরবাবুদের কুঠির ছাদের ওপরে গিয়ে ডেকে বলতেন—“ওরে তোরা কে কোথায় আছিস আয়, আমি যে একলা থাকতে পাচ্ছি না।” সে আহ্বান গিয়ে পৌঁছল বাংলার কয়েকটি অনাঘ্রাত কুসুমসম নির্মল চরিত্র যুবকের অন্তরে। শ্রীরামকৃষ্ণের আহ্বান মন্ত্র তাঁদের হৃদয় তন্ত্রে ধৃত হল। এ নিত্যকালের ডাক, যে ডাকে সাড়া দিয়েছিল রাখাল বালক আর গোপবাল্যগণ। সে আহ্বানে এগিয়ে এসেছিল র‌ক্ষপুরীর মনুুষ্যেতর প্রাণী আর অরণ্যবাসী বানরগণ। সে আকর্ষণে এগিয়ে এল মরুবাসী সাধারণ মানুষ। আর অপরবারে সাড়া দিয়েছিল দরিদ্র মেষপালগণ। শ্রীরামকৃষ্ণ যখন গদাধর চট্টোপাধ্যায় নামে আঠার বৎসরের যুবক তখনই তিনি তাঁর লীলাসহচরদের সন্ধানে যেন চঞ্চল হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে কলকাতায় এবং কলকাতার আশেপাশে বহুস্থানে তাঁর চিহ্নিত সহচরদের জন্য তিনি ব্যাকুলভাবে অনুসন্ধান করে তাদের পেয়েছিলেন। এমনি ভাবে তিনি একবার আটপুরেও এসেছিলেন। সেটা একশ আট বছর আগের ঘটনা। ১৮৫৪ খৃষ্টাব্দ বাংলা ১২৬১ সালে আটপুরের সমৃদ্ধ মিত্র পরিবারে তিনি কৃপা করে অবস্থানও করেছিলেন। ধরা দেননি বলে সেদিন কেউ তাঁকে চিনতে পারেনি। তিনি হয়ত তাঁর অনাগত সহচর বাবুরামের সন্ধান নিয়েছিলেন এ ভাগ্যবান পল্লীর অঞ্চলে। এ পল্লীর বুকেই “আত্মনঃ মো‌ক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ” মন্ত্রে নরদেহ উৎসর্গের সংকল্প গ্রহণ করেছিলেন নয়জন রামকৃষ্ণ সন্তান। শ্রীরামকৃষ্ণের পদধূলিতে পবিত্র পল্লীতে এই আটপুরে তাঁর শুভাগমনের সাত বৎসর পরে ১২৬৮ সালে জন্ম নিলেন বাবুরাম ঘোষ। পরবর্তীকালে স্বামী প্রেমানন্দ প্রেমঘন মূর্তি; শ্রীরামকৃষ্ণের একান্ত সেবক। আটপুরের মিত্র পরিবার বিত্তবান সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশ। সুপ্রসিদ্ধ কৃষ্ণরাম মিেত্রর বংশধর কালীপ্রসন্নের কালে শ্রীরামকৃষ্ণের আগমন। তাইতো পরবর্তীকালে শ্রীরামকৃষ্ণ বাবুরামকে বলেছিলেন—“তোদের কেলো ভোলের বাড়ীতে আমার যাওয়া হয়েছিল রে।” —আটপুরের তারাপদ ঘোষ হলেন বাবুরামের পিতা আর মিত্র বংশের মাতঙ্গিনী দেবী হলেন তাঁর স্নেহময়ী জননী। বিবাহসূত্রে এই দুই পরিবারের মিলন। ঘোষ পরিবার মিত্র পরিবারের কাছেই বাস করতে থাকেন। ক্রমে ঘোষ পরিবারেরও...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in