১৯৬১-৬২ সালে ও ১৯৬৩ সালের প্রথমার্ধে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে পড়ার সময়
১৯৬১-৬২ সালে ও ১৯৬৩ সালের প্রথমার্ধে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে পড়ার সময় বন্ধু জ্ঞানব্রত ঘোষাল ও আমি কলেজের ছুটিতে প্রায়শই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়াতাম। সেইমতো একদিন বিকালে আমরা স্বামী অখণ্ডানন্দজীর স্থাপিত সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে পৌঁছে গেলাম। মূল মন্দির দোতলায়। মন্দিরচূড়ায় বড় হরফে লেখা—‘জয় রামকৃষ্ণ’ নিচ থেকে পরিষ্কার দেখা যায়। ওপরে গিয়ে ঠাকুরপ্রণাম করে নিচে নামতেই একজন ভদ্রলোক বললেন, প্রেমেশানন্দ মহারাজের প্রণাম এখন চলছে—আমরা সেখানে যেতে পারি। আমরা িগয়ে তাঁকে প্রণাম করতে তিনি আমাদের বসতে বললেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘর ফাঁকা হয়ে গেলে আমাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলেন। অল্পক্ষণেই তাঁর সান্নিধ্যে আমরা মুগ্ধ হয়ে গেলাম। বিদায় নেওয়ার সময় তিনি আবার আসতে বললেন। এরপর আমরা মাঝে মাঝেই মহারাজের কাছে যেতাম আর মহারাজ আমাদের এমন প্রশ্রয় দিতেন, মনে হতো আমরা যেন তিন বন্ধুতে গল্প করছি! মহারাজ বলতেন : “গার্হস্থ সংসারে সত্যিকারের সার কিছু নেই। বৈরাগ্য না হলে মানুষ সঠিক আনন্দের সন্ধান পায় না।” এখন ভাবি, আমাদের সময় হয়নি, তাই মহারাজের কথার মর্ম তখন সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারিনি। একদিনের কথা বিশেষভাবে মনে আছে—আমি অনর্গল কথা বলে যাচ্ছি আর মহারাজ মুখে মৃদু হাসি নিয়ে শুনে যাচ্ছেন। জ্ঞানব্রত আমার পাশে বসে। এমন সময় বহরমপুরের আমাদের পরিচিত ডাক্তার সৌরীন্দ্রমোহন পাঠক আরেক ভদ্রলোকের সঙ্গে মহারাজের কাছে এলেন; এসেই আমাকে ধমক দিয়ে বললেন : “তোমরা এসেছ এরকম বড় সাধুর কাছে, কোথায় উনি বলবেন আর তোমরা শুনবে—তা নয়, তুমি বকে যাচ্ছ আর উনি শ্রোতা!” মহারাজ হেসে উঠে বললেন : “না না, ও ভালই বলছে।” ডাক্তার পাঠক স্বামী অখণ্ডানন্দজীর দীক্ষিত। এরপর যখন সারগাছি গিয়েছি, তাঁর উপদেশমতো মহারাজের কথাই বেশি শুনেছি, নিজেরা বলেছি কম। পরবর্তিকালে কর্মসূত্রে আমাকে অনেক জায়গায় ঘুরতে হয়েছে। শেষে স্থিত হলাম বেলুড় মঠের অনতিদূরে বালিতে আমাদের নতুন বাড়িতে। মঠে যাতায়াতের দরুন যে-সাধুদের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা হলো, স্বামী সুপ্রভানন্দ তাঁদের অন্যতম। উনি যখন সারগাছি আশ্রমের অধ্যক্ষ ছিলেন, সেই সময় ২০০৯ সালের শীতকালে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
