‘সামাজিক বাস্তুতন্ত্র’, এককথায়, বাস্তুতন্ত্রের এক নতুন সংযোজন। জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ
‘সামাজিক বাস্তুতন্ত্র’, এককথায়, বাস্তুতন্ত্রের এক নতুন সংযোজন। জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে, একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কোনো একটা নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলের জীব ও জড় উপাদানের সাথে আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য উৎপন্ন উপাদানের যে বিনিময় ঘটে, তাকে বাস্তুতন্ত্র বলে। অর্থাৎ বাস্তুতন্ত্র হলো একটি সামগ্রিক ক্রিয়া-পদ্ধতি, যার দ্বারা যেকোনো অঞ্চলের উদ্ভিদ, প্রাণী, জড় প্রভৃতি সকলের মধ্যে একটা নিবিড় সম্পর্কের বন্ধন গড়ে ওঠে। একইভাবে সামাজিক বাস্তুতন্ত্রও সমাজবদ্ধ সমস্ত কিছুকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটি অলিখিত ব্যবস্থাপনা। মানুষ, জীবজন্তু, আকাশ-বাতাস, রাজনীতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি প্রভৃতি সকল বিষয়কে একটা ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ রাখাই সামাজিক বাস্তুতন্ত্র। বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহর মতে, বাস্তুতন্ত্র সমাজবিজ্ঞানের যেকোনো শাখায় প্রয়োগ করা যেতে পারে, বিশেষ করে সামাজিক ক্ষেত্রে। সমাজের উন্নয়ন, বিবর্তন ও অভিযোজনমূলক গবেষণার ক্ষেত্রে সফল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সম্ভব সামাজিক বাস্তুতন্ত্রের মাধ্যমে।১ গত শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে সামাজিক ও পরিবেশগত দর্শনের ধারাকে বাস্তব দিক থেকে বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সামাজিক বাস্তুতন্ত্র নামে এই ভাবধারার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বাস্তুতন্ত্র বলতে জীবকুল ও পরিবেশকেই বোঝায়, কিন্তু সামাজিক বাস্তুতন্ত্র এমন একটি দর্শন, যেখানে মানুষ এবং মানুষের সাথে নিবিড় সম্পর্কিত পরিবেশের কথা উঠে আসে। এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—এই দর্শন আমাদের সচেতন করে তোলে এবং তার নিজস্ব প্রতিফলন ঘটিয়ে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনের কথা বলে। এটি একটি সুসংগত পরিকাঠামো, যা বর্তমান সামাজিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশ-বিরোধী প্রবণতার তীব্র সমালোচক; সেইসঙ্গে সমাজের কাছে পরিবেশের বাস্তুতান্ত্রিক পরিকাঠামো পুনর্গঠনের নৈতিক আবেদন জানায়। পরিবেশগত ইতিহাসের প্রেক্ষিতে মানুষের বিশেষত দুর্বল, প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নের ভাবটি বোঝাতে সামাজিক বাস্তুতন্ত্রের ব্যবহার করা হচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা সামাজিক বাস্তুতন্ত্রের বেশ কিছু মৌলিক শ্রেণিবিভাজনের কথা বলেছেন। যেমন, ১) অর্থনীতি—যার মধ্যে শক্তি ও উৎপাদনের সম্পর্ক, পণ্য পরিষেবা বণ্টন ও বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে। ২) রাজনীতি বা ক্ষমতার সম্পর্ক—যেখানে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান, আইন এবং রাষ্ট্রের মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্কের কথা আলোচিত হয়েছে। ৩) সামাজিক কাঠামো—যেখানে পরিবার, আত্মীয়তা, জাতি এবং সম্প্রদায়ের কথা...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in