বাগবাজারে মায়ের বাড়ীতে একদিন শ্রীশ্রীমা বিছানায় শুয়ে ভক্ত মহিলাদের সঙ্গে কথা বলছেন। একটি ভক্ত মেয়ে বলে উঠল : “আজ কত ছেলেমেয়ে ‘মা মা’ বলে এসে আপনাকে এত বিরক্ত করছে! আমরাও তো আপনার পেটে হইনি, তা বলে কি আমরা আপনার ছেলেমেয়ে নই?”
বাগবাজারে মায়ের বাড়ীতে একদিন শ্রীশ্রীমা বিছানায় শুয়ে ভক্ত মহিলাদের সঙ্গে কথা বলছেন। একটি ভক্ত মেয়ে বলে উঠল : “আজ কত ছেলেমেয়ে ‘মা মা’ বলে এসে আপনাকে এত বিরক্ত করছে! আমরাও তো আপনার পেটে হইনি, তা বলে কি আমরা আপনার ছেলেমেয়ে নই?” একথা শুনেই শ্রীশ্রীমা উঠে বসে তপ্তস্বরে বলেন : “কী বললে, আমার পেটে হওনি? তবে কার পেটে হয়েছ? আমার ছেলেমেয়ে নও? তবে কার ছেলেমেয়ে? আমি ছাড়া মা আর কেউ আছে নাকি?” ভক্ত মেয়েটি নিজের ভুল বুঝতে পেরে কাঁদতে থাকে, মায়ের চরণ ছুঁয়ে বারবার ক্ষমা চায়। মা স্মিতবদনে তাকে বলেন : “দেখ মা, সবাই কি সহজে বুঝতে পারে?… ভগবানের অবতারদের কজন চিনতে পারে, কজন বুঝতে পারে? যখন তাঁরা চলে যান তখন লোকে ক্রমশঃ বোঝে।”১ সাবিত্রীদেবী বাস্তবিক তাই, শ্রীশ্রীমায়ের দেহাবসানের বহু কাল পর তিনি ক্রমশ অবগুণ্ঠনের আড়াল থেকে আত্মপ্রকাশ করেছেন। মানব ক্রমশ বুঝতে পারছে শ্রীশ্রীমায়ের রূপ ধরে কে অবতীর্ণ হয়েছিলেন এই ধরাধামে, বুঝতে পারছে শ্রীশ্রীচণ্ডীর মহাবাণীর তাৎপর্য—‘একৈবাহং জগত্যত্র দ্বিতীয়া কা মমাপরা’, তিনি ভিন্ন দ্বিতীয় কোনো শক্তি নেই এই ত্রিভুবনে।২ দৈত্যরাজ শুম্ভ দেখল—ব্রহ্মাণী, বৈষ্ণবী, মাহেশ্বরী প্রমুখ অষ্টমাতৃকা দেবী চণ্ডীর মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছেন। ‘সর্বদেবদেবীস্বরূপিণী’ শ্রীশ্রীমায়ের জীবনে এর বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাঁর সাধারণ-অসাধারণ সমস্ত কর্মের পিছনে রয়েছে গভীর তাৎপর্য। যেমন—তিনি বৃন্দাবন থেকে হরিদ্বার ও জয়পুর হয়ে একবার পুষ্করে আসেন এবং সাবিত্রী পাহাড়ে আরোহণ করে বেশ কিছুক্ষণ ধ্যানস্থ হয়ে থাকেন। সময়টা ১৮৮৭ সালের জুলাই কিংবা অগস্ট মাস হবে।৩ পায়ে বাতের বেদনা থাকলেও তিনি হেঁটেই উঠেছিলেন প্রায় ২০০০ ফুট উঁচু পাহাড়চূড়ায়। প্রথমে তিনি ব্রহ্মসরোবরে স্নান এবং ব্রহ্মার মন্দিরে প্রণাম করে সাবিত্রী পাহাড়ে আরোহণ করেন। গোলাপ-মায়ের সূত্রে জানা যাচ্ছে, শ্রীশ্রীমা এখানে সাবিত্রীদেবীর পূজাও করেছিলেন। তিনি কোনো তীর্থে গেলে কমপক্ষে তিন রাত্রি থাকতেনই। এখানে এক ধর্মশালায় শ্রীশ্রীমা রাত্রিবাস করেছিলেন বলে জানিয়েছেন গোলাপ-মা। এখান থেকে তিনি ফিরে যান বৃন্দাবনে।৪ সৃষ্টিশক্তি সাবিত্রীদেবীর অধিষ্ঠানক্ষেত্রে জগৎপ্রসবিনী সারদাদেবীর আগমন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, সন্দেহ নেই। মূল মন্দিরে সাবিত্রীদেবীর...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in