সাপ! এক ছোবলেই ছবি করতে তার জুড়ি মেলা ভার! অনেকের কাছে আতঙ্ক, ভয় আর উত্তেজনার নামান্তর বিষধর সাপ। জলে স্থলে গাছপালায় সর্বত্রই সাপের অবাধ গতায়াত। যুগ যুগ ধরে অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর আঘাতের তুলনায় সর্পাঘাতে মানুষের মৃত্যু হয়েছে বেশি।

সাপ! এক ছোবলেই ছবি করতে তার জুড়ি মেলা ভার! অনেকের কাছে আতঙ্ক, ভয় আর উত্তেজনার নামান্তর বিষধর সাপ। জলে স্থলে গাছপালায় সর্বত্রই সাপের অবাধ গতায়াত। যুগ যুগ ধরে অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর আঘাতের তুলনায় সর্পাঘাতে মানুষের মৃত্যু হয়েছে বেশি। সেই কারণে প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ সাপকে ভয়ে ভক্তি করে এসেছে। জীবন্ত সর্প উপাসনার পাশাপাশি সাপ দেবতারূপে আজও পূজিত হচ্ছে। নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-মালভূমি অধ্যুষিত বঙ্গভূমির জলবায়ু গ্রীষ্মপ্রধান। এই ধরনের পরিবেশ বিষধর সাপের আঁতুড়ঘর। বাংলায় বিষধর সাপের প্রধানত তিনটি প্রজাতির আধিক্য—কোবরা বা গোখরো, বোড়া এবং চিতি। বোড়ার মধ্যে চন্দ্রবোড়া আর চিতির মধ্যে ডোমনা বা কালাচের কামড় মারাত্মক প্রাণঘাতী। কথায় আছে—‘কামড়ালে ডোমনা/ ডেকে আনগে বামনা’। গোখরো মূলত ফণাধারী খড়িশ আর কেউটে সাপ। এই দুটি প্রজাতির সাপ নিয়েই বাংলা তথা ভারতবর্ষের সর্প-সংস্কৃতির সিংহভাগ গড়ে উঠেছে। সিন্ধুসভ্যতার স্মারক ভগ্ন টেরাকোটার পাত্রে অঙ্কিত প্রত্ননিদর্শনেও কোবরা-জাতীয় সাপের ছবি দেখা যায়। সাপ এমনিতে শান্ত, নিরীহ, নির্বোধ, মাংসাশী প্রাণী। একমাত্র নিজের বিপদ বুঝতে পারলেই সে হয়ে ওঠে ভয়ংকর। গোখরো নিয়ে মানুষের বিচিত্র লোকবিশ্বাস, লোকশ্রুতি, লোকগাথা, লোক-উৎসব, লোকশিল্প, লোকসংগীত প্রচলিত আছে অখণ্ড বাংলা জুড়ে—যা অন্য কোনো প্রাণীর কপালে জোটেনি। গোখরো সাপের অধিকাংশ জৈবিক বৈশিষ্ট্য সাংস্কৃতিক উপাদানে পরিণত হয়েছে। যেমন—গোখরো বা কেউটে সাপের ফণা। ফণা আসলে সাপের প্রসারিত বক্ষদেশ। রেগে গিয়ে খাড়া হয়ে গোখরো সাপ যখন ফণা তোলে তখন অনেকের কাছে সে-দৃশ্য যথেষ্ট ভীতিপ্রদ। ফণার মাথায় গোরুর খুর বা গোল চশমার মতো ছাপ বা চক্র তার ভয়ংকর সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তোলে। সাপের ফণা যেমন মূর্তি বা ছলনে পরিণত হয়েছে তেমনি হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ধর্ম ও সংস্কৃতিতে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছে। জৈন তীর্থংকর সুপার্শ্বনাথ বা পার্শ্বনাথ, হিন্দুদের শিশুকৃষ্ণ বা ধ্যানস্থ বুদ্ধদেব—সকলের সঙ্গে যোগ রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্বিপাক প্রতিরোধকারী নাগরাজের ফণা বা সর্পছত্র। সর্পছত্রে এক, তিন, পাঁচ, সাত বা নয়টি মাথার সম্মিলিত রূপ দেখা যায় বিবিধ ভাস্কর্য-শিল্পে। সাপ সাধারণত কুণ্ডলী পাকিয়ে থাকে। সর্পকুণ্ডলীর শয্যায় ভগবান বিষ্ণু বা...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in