শ্রীমদ্ভাগবত-এ ভক্তির নয়টি প্রকার বলা হয়েছে :
“শ্রবণং কীর্তনং বিষ্ণোঃ স্মরণং পাদসেবনম্।
অর্চনং বন্দনং দাস্যং সখ্যমাত্মনিবেদনম্॥”১
শ্রীমদ্ভাগবত-এ ভক্তির নয়টি প্রকার বলা হয়েছে : “শ্রবণং কীর্তনং বিষ্ণোঃ স্মরণং পাদসেবনম্।অর্চনং বন্দনং দাস্যং সখ্যমাত্মনিবেদনম্॥”১ ভক্তিপ্রসঙ্গে দেবর্ষি নারদ বলছেন : ‘কথাদিষু ইতি গর্গঃ’২—গর্গ মুনি ভগবৎকথা শ্রবণ ও কীর্তনকেই ভক্তি বলছেন। তাই দেখা যায় যে, কোনো ব্রত, উপবাস, পূজা ও জপকর্মের অন্তে সাধক ইষ্টদেবের স্মরণার্থ স্তবপাঠ, মাহাত্ম্যকীর্তন, সংগীত ইত্যাদি করে থাকেন। বিভিন্ন দেবদেবীর স্তবস্তুতিপাঠ কমবেশি সকল ভক্ত সর্বত্র করে থাকেন। বিশেষ উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্য অনুষ্ঠিত পূজাদির ক্ষেেত্র সেই সেই দেবদেবীর মাহাত্ম্যকথা পাঠ করতে দেখা যায়—যেমন সত্যনারায়ণের পাঁচালি, লক্ষ্মীর পাঁচালি, শিবরাত্রি ব্রতকথা, জন্মাষ্টমী ব্রতকথা প্রভৃতি। শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা দার্শনিক তত্ত্বপূর্ণ শ্রীভগবানের মুখনিঃসৃত ও তাঁর হৃদয়স্বরূপ (‘গীতা মে হৃদয়ং পার্থ’)৩ হলেও জন্মাষ্টমী, গীতাজয়ন্তী, শ্রাদ্ধবাসর ইত্যাদি কয়েকটি স্থলে তার পাঠ প্রচলিত। কিছু পুরাণগ্রন্থ—যেমন প্রায়শ্চিত্তাদি ক্ষেত্রে বিহারাদি পশ্চিমাঞ্চলে গরুড়পুরাণ পাঠ হয়ে থাকে। আবার তীর্থক্ষেত্রে কাশীখণ্ড প্রভৃতির বিধিপূর্বক পাঠ ও শ্রবণের বিধান আছে। কিন্তু মার্কণ্ডেয়পুরাণ-এর অন্তর্গত ‘শ্রীশ্রীচণ্ডী’ বা ‘দেবীমাহাত্ম্য’ বা ‘সপ্তশতী-চণ্ডী’ পাঠ বিবিধ উপলক্ষে সর্বত্র বিশেষ প্রচলিত। শ্রীশ্রীচণ্ডীর দ্বাদশ অধ্যায়ে চণ্ডীমাহাত্ম্য বর্ণনায় বলা হয়েছে : “তস্মান্মমৈতন্মাহাত্ম্যং পঠিতব্যং সমাহিতৈঃ।শ্রোতব্যঞ্চ সদা ভক্ত্যা পরং স্বস্ত্যয়নং হি তৎ॥”৪ —অতএব আমার এই মাহাত্ম্য সমাহিতচিত্তে নিত্য ভক্তিপূর্বক পাঠ বা শ্রবণ করা কর্তব্য। কারণ, তা অতিশয় মঙ্গলজনক। এখানে ‘স্বস্ত্যয়নং’ শব্দের ব্যাখ্যায় টীকাকার নাগোজীভট্ট বলেছেন : ‘স্বস্তি কল্যাণং তস্য অয়নং মার্গঃ’৫—যে-উপায় দ্বারা স্বস্তি বা কল্যাণ লাভ হয় তাকে স্বস্ত্যয়ন বলে। শ্রীশ্রীচণ্ডী পাঠ ও শ্রবণ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ স্বস্ত্যয়ন, কারণ এর দ্বারা সাধকের সর্বাভীষ্ট সিদ্ধ হয়। একাগ্রচিত্তে চণ্ডীপাঠের ফলে সকাম সাধক ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সুখলাভ করেন এবং মুমুক্ষ ব্যক্তি পরম নিঃশ্রেয়স বা মুক্তিলাভ করে ধন্য হন। দেবীভাগবত-এ দেবীমাহাত্ম্য শ্রবণে অশ্বমেধযজ্ঞের ফলপ্রাপ্তির কথা বলা হয়েছে : “কো হি দেব্য গুণান্ শৃণ্বংস্তৃপ্তিং যাস্যতি শুদ্ধধীঃ।পদে পদেঽশ্বমেধস্য ফলমক্ষয্যমশ্নুতে॥”৬ ভগবৎকথা শ্রবণে যে সাধকের চিত্তে ক্রমশ ভগবদ্ভক্তির উদয় হয়, সেবিষয়ে পরমভাগবত মহারাজ পরীক্ষিৎ বলেছেন : “শৃণ্বতঃ শ্রদ্ধয়া নিত্যং গৃণতশ্চ স্বচেষ্টিতম্।নাতিদীর্ঘেণ কালেন ভগবান্ বিশতে হৃদি॥”৭ দেবীমাহাত্ম্য বা শ্রীশ্রীচণ্ডীপাঠের মাহাত্ম্য সম্বন্ধে স্বয়ং ভগবতী বলছেন : “এভিঃ স্তবৈশ্চ...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in