শ্রীরামকৃষ্ণ একবার জানতে চেয়েছিলেন—শ্রীচৈতন্যের সংকীর্তন কেমন? সেই সময় তাঁর একটি

[পূর্বানুবৃত্তি : বৈশাখ সংখ্যার পর]।।২।।তিনশ্রীচৈতন্য-ভক্তিতে শ্রীরামকৃষ্ণ শ্রীরামকৃষ্ণ একবার জানতে চেয়েছিলেন—শ্রীচৈতন্যের সংকীর্তন কেমন? সেই সময় তাঁর একটি দিব্যদর্শন হয়। তাঁর দৃষ্টিপথে উদ্ভাসিত হয়—বিপুল জনতা, হরিনামে উদ্দাম উন্মত্ততা। “আর সেই উন্মাদ-তরঙ্গের ভিতর উন্মাদ শ্রীগৌরাঙ্গের উন্মাদনী আকর্ষণ! সেই অপার জনসঙ্ঘ ধীরে ধীরে দক্ষিণেশ্বরের উদ্যানের পঞ্চবটীর দিক হইতে ঠাকুরের ঘরের সম্মুখ দিয়া অগ্রে চলিয়া যাইতে লাগিল।” এই অসীম জনসংঘের মধ্যে কয়েকটি মুখ তাঁর স্মৃতিপটে আঁকা হয়ে গিয়েছিল, যাঁদের মধ্যে ‘ভক্তিজ্যোতিঃপূর্ণ স্নিগ্ধোজ্জ্বল’ বলরাম বসু ও কথামৃতকার মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত অর্থাৎ ‘শ্রীম’—এই দুজনে ছিলেন।২৭ সেই স্মৃতির রেশ ধরে ২৪ সেপ্টেম্বর ১৮৮৫ এক দৃশ্য ফুটে ওঠে কথামৃতের পাতায়। শ্রীরামকৃষ্ণের ঘরে দেওয়ালে টাঙানো গৌর-নিতাইয়ের ছবি একখানা বেশি ছিল; গৌর-নিতাই সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে নবদ্বীপে সংকীর্তন করছেন—এই ছবি। ছবিখানি শ্রীরামকৃষ্ণ মহেন্দ্রনাথকে উপহার দেন, যা আজও শ্রীমর ঠাকুরবাড়িতে শোভা পাচ্ছে। আরেকটি দর্শনকথা পুঁথিকার জানিয়েছেন। ভৈরবী শ্রীরামকৃষ্ণকে চৈতন্যদেবের অবতার বলেছেন; অথচ মথুরবাবু বলেছিলেন—দশজন ছাড়া অবতার নেই। তাই শ্রীরামকৃষ্ণের মনের সন্দেহ হয়, শ্রীগৌরাঙ্গ অবতার কি না। পরবর্তিকালে তাঁর সন্দেহের কথা বিশদে বলেছেন : “আমারও তখন তখন ঐ রকম মনে হতো রে, ভাবতুম পুরাণ ভাগবত কোথাও কোন নামগন্ধ নেই—চৈতন্য আবার অবতার! ন্যাড়া-নেড়ীরা টেনে বুনে একটা বানিয়েচে আর কি!—কিছুতেই ও কথা বিশ্বাস হতো না।”২৮ একদিন তিনি গঙ্গাতীরে বসে সেই কথাই চিন্তা করছেন, হঠাৎ শুনতে পেলেন কীর্তনের মহারোল। গঙ্গা থেকে উঠে এল এক মাতোয়ারা কীর্তনের দল—“গায়ক বাদক যত কার নাহি হুঁশ।/ নাচে গায় মাঝে দুটি সুন্দর পুরুষ।।”২৯ তাঁরা তাঁকে ঘিরে কীর্তন করে আবার গঙ্গাতেই মিলিয়ে গেলেন। গৌরলীলার কথা বলতে বলতে ভাবে বিভোর হয়ে উঠতেন শ্রীরামকৃষ্ণ। ভক্তদের ‘হরিনামের হাটবাজার’ দেখাতে গৌর-নিতাইয়ের লীলাভূমি পানিহাটীতে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শ্রীচৈতন্য ও নিত্যানন্দের ভাবে সেসময় শ্রীরামকৃষ্ণের অঙ্গকান্তি, হাবভাব, এমনকী দেহের গঠনও অন্যতর আকার নিয়েছিল। এর আগে ১৮৮৩ সালে পানিহাটীর চিঁড়ার মহোৎসব থেকে ফেরার পথে বেলঘরিয়ায় মতিলাল শীলের ঠাকুরবাড়িতে থেমেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। নিতাই-গৌর বিগ্রহের সামনে তিনি ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম করেন। আগেও তিনি একবার নৌকাতে দক্ষিণেশ্বর ফেরার সময়...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in