যখন কোনো ভক্তসমাগমে দীর্ঘ সময় ধরে ঈশ্বর-প্রসঙ্গ হয় তখন প্রায় প্রত্যেকের মন আনন্দে পরিপূর্ণ

যখন কোনো ভক্তসমাগমে দীর্ঘ সময় ধরে ঈশ্বর-প্রসঙ্গ হয় তখন প্রায় প্রত্যেকের মন আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, ভারী সুন্দর একটি ভাব আমাদের মধ্যে তৈরি হয়। কিন্তু দিনের শেষে সেই সঙ্গ শেষ হলে ঘরে ফিরে আবার রোজকার সাংসারিক বিভিন্ন সমস্যা যখন সামলাতে হয়, তখন মনের সেই আনন্দলহরি কোথায় যেন হারিয়ে যায়! কেবল একটি দুরাশা পড়ে থাকে—এই আনন্দের ভাবটি যদি ধরে রাখা যেত, এমনকী চিরস্থায়ী হতে পারত! মনে পড়ে, একসময় গঙ্গোত্রীতে এক পাঞ্জাবি অদ্বৈতবাদী সাধুর কাছে কিছুদিন পাঠ নিয়েছিলাম। প্রবহমাণ গঙ্গার ধারে তাঁর ছোট্ট কুটিরটিতে বসে তিনি আমাদের কয়েকজন সন্ন্যাসীকে পড়াতেন। একদিন পড়াতে পড়াতে প্রসঙ্গক্রমে তিনি একটি প্রশ্ন উত্থাপন করলেন—নিরন্তর সাধনা কেমন করে করা যায়? তারপর গঙ্গাকে দেখিয়ে বললেন : “ঐ যে দেখছ গঙ্গা বয়ে চলেছে ঝড়ের মতো, আমাদের সাধন-ভজনও ঐরকম হওয়া প্রয়োজন। ঐভাবেই ঈশ্বরচিন্তা চলবে, নামজপ চলবে, ভাবের তরঙ্গ চলবে।” এই যে নিরন্তর ভাবের কথা আমরা বলি, এটি কী উপায়ে নিজের মধ্যে আনা সম্ভব? আমরা প্রতিনিয়ত দেখি, নিরন্তর ভাব তো দূরস্থান, আমরা কেবলই সুখ ও দুঃখের ঢেউয়ে বারংবার উঠি আর পড়ি। মহাভারতের শান্তিপর্বে বলা হচ্ছে—যে অজ্ঞানী বা মূঢ়, কেবলমাত্র মুহুর্মুহু সুখে উৎফুল্ল হয়ে এবং দুঃখে কাতর হয়েই তার দিন মাস বছর কেটে যায়; একমাত্র জ্ঞানীই পারেন সুখ-দুঃখের অতীতে গিয়ে নিস্পৃহ একটি ভাবের অধিকারী হতে। সেই ভাব আমরা লাভ করব কীভাবে? একটি সংক্ষিপ্ত বিচারের মধ্য দিয়ে বিষয়টি ভাল করে বুঝে নিতে পারি। এই বিচারটি মন দিয়ে খেয়াল করলে সন্ধান পাওয়া যাবে এমন একটি আধ্যাত্মিক ভাবের, যা সারাক্ষণ আমাদের সঙ্গেই আছে; শুধু একবার তাকে চিনতে পারলেই সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। বিচারটি এরকম—আমরা প্রত্যেকেই চেতন, এ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। আর আমাদের প্রত্যেকের সামনে আছে জড়জগৎ। যখন জড়জগৎ বা জড়বস্তু আমাদের চেতনের সংস্পর্শে আসে, তখন একটি অনুভূতি হয়। আমরা যাকিছু দেখছি, শুনছি—সবেতেই একটি জড়পদার্থ চেতনের সংস্পর্শে আসছে। তাই, দ্রষ্টব্য বস্তু দেখামাত্র রূপের অনুভূতি হয়, কোনো...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in