কাশীর বাঙালিটোলার মদনপুরা অঞ্চলে থাকতেন বিখ্যাত সেতার-বাদক

কাশীর বাঙালিটোলার মদনপুরা অঞ্চলে থাকতেন বিখ্যাত সেতার-বাদক মহেশচন্দ্র সরকার। শ্রীরামকৃষ্ণ ১৮৬৮ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে যখন মথুরবাবুর সঙ্গে দেওঘর, বৃন্দাবন, কাশী তীর্থদর্শন করতে গিয়েছিলেন, সেসময় মহেশচন্দ্র সরকারের সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁকে বীণাবাদন শোনানোর। কাশীতে থাকাকালীন শ্রীরামকৃষ্ণ একবার মথুরবাবুর সঙ্গে বৃন্দাবনধামে যাত্রা করেন। শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলাস্থল দেখে তিনি বিহ্বল হয়ে পড়েন। সেসময় তাঁর বীণাবাদন শোনার খুব ইচ্ছা হয়। বৃন্দাবনে সেসময়ে কোনো বীণকার না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। কাশীতে ফিরে মহেশচন্দ্র সরকার নামক একজন অভিজ্ঞ বীণকারের সন্ধান পাওয়া যায়। তাঁর বাড়িতে (বর্তমান ঠিকানা ডি-৩১/৯, মদনপুরা) মথুরবাবুর ব্যবস্থাপনায় একদিন বিকালে হৃদয়রামের সঙ্গে ঠাকুর উপস্থিত হন। মহেশচন্দ্র বীণা বাজাতে শুরু করেন। বীণার মধুর ঝংকার শোনামাত্র শ্রীরামকৃষ্ণ ভাবাবিষ্ট হন। লীলাপ্রসঙ্গকার স্বামী সারদানন্দজী জানিয়েছেন, অর্ধবাহ্য অবস্থায় ফিরে এসে শ্রীরামকৃষ্ণ মা জগদম্বার কাছে প্রার্থনা করেন : “মা, আমায় হুঁশ দাও, আমি ভাল করিয়া বীণা শুনিব।” এই প্রার্থনার পর তিনি বাহ্যভূমিতে অবস্থান করতে স‌ক্ষম হয়েছিলেন। সদানন্দে বীণার সুরে সুর মিলিয়ে গানও গেয়েছিলেন, সাধারণের প‌ক্ষে যা খুবই কঠিন। বিকাল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সেখানে কাটিয়ে গৃহস্বামীর অনুরোধে সামান্য জলযোগ করে তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন। এর পর থেকে মহেশবাবু প্রতিদিন ঠাকুরকে দর্শন করতে আসতেন। ঠাকুর বলেছেন, বীণা বাজাতে বাজাতে মহেশচন্দ্র একেবারে মত্ত হয়ে উঠতেন। জানা যায় যে, মহেশচন্দ্র অনুরুদ্ধ হয়েও অন্যত্র গিয়ে বীণা বাজাতেন না। এমনকী রামনগরের মহারাজা ঈশ্বরীপ্রসাদ নারায়ণ সিংহের আমন্ত্রণও গ্রহণ করেননি মা সরস্বতীর আবাহন যথোপযুক্ত না হওয়ায়। মহেশচন্দ্র সরকারের পৈতৃক ভিটে কলকাতার বৌবাজার অঞ্চলে। তাঁরা ধার্মিক ও ধনী পরিবার। মহেশচন্দ্রের পিতামহ বলরাম সরকার অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে কোম্পানির অফিসের কুঠির দেওয়ান হিসাবে পাটনায় থাকতেন। শেষজীবনে কাশীবাসের ইচ্ছায় কনিষ্ঠ পুত্র রামচন্দ্রকে নিয়ে নৌকাযোগে কাশীতে আসেন। ১২১৭ বঙ্গাব্দে (১৮১১ সালে) তিনি মদনপুরায় ভূসম্পত্তি ক্রয় করেন এবং বাড়িতে রামেশ্বর শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র শিবচন্দ্র অবশ্য কলকাতাতেই থাকতেন। মহেশচন্দ্র সরকারের জন্ম ১৮১৮ সালে। তিনি ছোটবেলায় কাশীর জয়নারায়ণ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তবে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in