শ্রীমা সারদাদেবী বলেছেন : “জ্ঞান হলে ঈশ্বর-টীশ্বর সব উড়ে যায়।… শেষে দেখে, মা আমার জগৎ জুড়ে! সব এক হয়ে দাঁড়ায়।”১ অন্যদিকে শ্রীরামকৃষ্ণ
শ্রীমা সারদাদেবী বলেছেন : “জ্ঞান হলে ঈশ্বর-টীশ্বর সব উড়ে যায়।… শেষে দেখে, মা আমার জগৎ জুড়ে! সব এক হয়ে দাঁড়ায়।”১ অন্যদিকে শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন— “মাতৃভাব—সাধনের শেষ কথা।”২ বস্তুতপক্ষে এই ‘মা’ স্বজাতীয়, বিজাতীয়, স্বগতভেদ-শূন্যা একমাত্র সদ্বস্তু। জ্ঞান হলে ‘ক্ষুদ্র আমি’ লোপ পায়, ফলত সেই ‘মা’ তখন ‘বৃহৎ আমি’ অবস্থায় উত্তীর্ণা হন। শ্রীরামকৃষ্ণ-জীবনের মাতৃসাধনার পরম সিদ্ধি বোধ করি সেখানেই নিহিত। আধুনিক যুগে নারীমুুক্তির প্রেক্ষিতে যখন আমরা শ্রীমা সারদাদেবীর ভূমিকার কথা স্মরণ করি, তখন সেই ভাবনা আমাদের চিন্তার স্রোতকে আলোড়িত করে। শ্রীমায়ের জীবনে আমরা লাভ করি উৎকেন্দ্রিকতার মধ্যে স্থিরত্বের আশ্বাস, যা আমাদের জীবনযন্ত্রণা থেকে শুধু পরিত্রাণই দেয় না, একইসঙ্গে দান করে শান্তির সুনিবিড় ছায়া। বর্তমান যুগে সামাজিক জীবনে মানুষের সমস্যার সীমা-পরিসীমা নেই। তথাকথিত সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে জীবন হয়তো গতিময় হয়েছে, কিন্তু আমরা পরস্পর পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। এই বিচ্ছিন্নতা থেকে আমাদের মনে সৃষ্টি হচ্ছে নৈরাশ্য এবং নিঃসঙ্গতা। এমন অবক্ষয় থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারেন বহুলাংশে নারীসমাজ। কারণ, নারীরা মায়ের জাত। তাঁরা স্বাভাবিকভাবেই নিঃস্বার্থ ভালবাসা দিয়ে মানবজীবনে পূর্ণতা দান করতে পারেন। ক্ষমাশীলতা, সহনশীলতা, পবিত্রতা ও সেবার মধ্য দিয়ে ভারতীয় নারীর ঐতিহ্য শ্রীমা সারদাদেবীর মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা যে-নারীসমাজকে প্রত্যক্ষ করি তাঁরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতা ও প্রগতিশীল মানসিকতাসম্পন্না। তাঁদের জীবনে পরদার আড়াল নেই। প্রাচীন চিন্তাধারা থেকে সরে এসে তাঁরা প্রায় সব ক্ষেত্রেই পুরুষের মতো যোগ্যতার অধিকারিণী। ফলে অনেক সময় আধুনিক নারীসমাজ পুরুষের প্রতিপক্ষ হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠেন। নারীসমাজের অর্থনৈতিক উপার্জন অনেক সময় দাম্পত্যজীবনে অশান্তির ছায়া ফেলে। একই ছাদের তলায় বসবাস করে কেউ কারো আপনজন হয়ে উঠতে পারে না। ঘরে-বাইরে ও কর্মস্থলে উত্তেজনা প্রশমিত হয় না। প্রেমহীন জীবন তাই সমাজকে আত্মকেন্দ্রিক করে তোলে। বর্তমান অবস্থার পরিেপ্রক্ষিতে আমরা যদি শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রীমা সারদাদেবীর যুগ্মজীবনের দিকে দৃষ্টিপাত করি, তাহলে তাঁদের দাম্পত্যজীবনের মাধুর্য আমরা উপলব্ধি করতে পারব। তাঁদের জীবনে আমরা প্রত্যক্ষ করি ত্যাগের...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
