স্বামী বিবেকানন্দ একদিন তাঁহার একজন শিষ্যের সঙ্গে গঙ্গাতীরে বেড়াইতেছিলেন। নিমতলা শ্মশান ঘাটের নিকটে আসিয়া শিষ্য বলিল,
স্বামী বিবেকানন্দ একদিন তাঁহার একজন শিষ্যের সঙ্গে গঙ্গাতীরে বেড়াইতেছিলেন। নিমতলা শ্মশান ঘাটের নিকটে আসিয়া শিষ্য বলিল, “মহাশয় আমাকে শিবের স্বরূপ বুঝাইয়া দিতে হইবে।” স্বামিজী তদুত্তরে বলিয়াছিলেন, “দেখ্, আমি যখন হিমালয়ে একাকী ভ্রমণ কর্তুম, তখন দেখ্তুম বড় বড় বৃষের পিঠে কাঠের বোঝা চাপিয়ে পাহাড়ীরা পাহাড় থেকে কাঠ নাবিয়ে আন্ছে। দেখে আমার মনে হত এই অগ্নিগর্ভ কাষ্ঠই শিবস্থানীয়; অগ্নিই শিবমূর্ত্তি। বৃষের পৃষ্ঠে ইন্ধনের অবস্থান; তাই শিব বৃষবাহন। আবার কাঠগুলি জ্বলে গেলে ভস্ম হয়ে যায়। তাই শিবের ভস্ম বিভূতি। কৃষ্ণ ধূমব্যাপ্ত অগ্নিশিখাই শিবের জটাস্থানীয়।” স্বামিজীর এই অদ্ভুত ব্যাখ্যা শুনিয়া শিষ্য ব্যাকুল হইয়া বলিয়াছিলেন, মহাশয় তবে কি “সত্যি শিব” নাই। তাহা শুনিয়া স্বামিজী নিজের শরীর দেখাইয়া বলিয়াছিলেন, “এই দেখ্ না, তোর কাছেই রয়েছেন, ঘটে ঘটে রয়েছেন! আমি আগে তোকে প্রচলিত শিবমূর্ত্তি কি করে ক্রমে ক্রমে প্রথম মানবমনে আবির্ভূত হয়েছিল সেই ঐতিহাসিক তত্ত্বই বল্ছিলাম। ঐ প্রকারে শিবমূর্ত্তি মানবমনে ধীরে ধীরে উপাস্যরূপে গৃহীত হইলেও তাহাতে ভক্তির হানি হইবার কোনও কারণ নাই। কারণ ঈশ্বর ত ইচ্ছা করিলে যেখানে সেখানে যাতে তাতে প্রকাশিত হয়ে মানবহৃদয়ের পূজা গ্রহণ করিতে পারেন ও করেন।” (উদ্বোধন, ১৬শ বর্ষ, ২য় সংখ্যা)
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in