শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন ও বাণীকে অবলম্বন করে মানবের জীবনীশক্তি অগ্রসর হতে থাকে

শ্রীরামকৃষ্ণগীতাস্বামী পূর্ণানন্দপ্রকাশক : দেবাশিস ভট্টাচার্য৩৮, বিধান সরণীকলকাতা-৭০০০০৬৩৩০.০০ শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন ও বাণীকে অবলম্বন করে মানবের জীবনীশক্তি অগ্রসর হতে থাকে নবসৃষ্টি ও নির্মিতির পথে। শক্তির এই যাত্রা প্রবাহিত হয় অন্তরঙ্গ থেকে বহিরঙ্গে। অনন্তের সেই চিরায়ত স্বর আন্দোলিত করে সাধারণ জীবনকে। সেই গভীর স্বরের আকুলতা মনকে শান্তি, প্রাণকে শক্তি দিয়ে চলে, জীবনকে আলোর ঝরনাধারায় সঞ্জীবিত করে। অনন্তের কুহেলিকা উন্মোচন করে সাধকের লেখনীতে বাঙ্ময় রূপ পরিগ্রহ করেন শ্রীরামকৃষ্ণ। সহজ ভাষার ব্যবহারে মানুষের সঙ্গে সংযোগস্থাপন শ্রীরামকৃষ্ণের সহজাত। প্রাত্যহিক জীবনের অনুষঙ্গে যখন তাঁর বাণী মূর্ত হয়ে ওঠে তখন তা তত্ত্বে ভারাক্রান্ত হয় না, বরং মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনের এক অমূল্য দিশা হয়ে ওঠে। শ্রীরামকৃষ্ণের বাণীর এই সহজ সরল প্রকাশ যেসকল গ্রন্থে হয়েছে, সেগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত। আরেকটি বিখ্যাত গ্রন্থ হলো স্বামী ব্রহ্মানন্দজীর সংকলিত শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ-উপদেশ গ্রন্থটি। হতাশায় শূন্য জীবনে এই গ্রন্থ মনে এক প্রশান্তির জন্ম দেয়। এই মহতী ভাবকল্প থেকেই লেখক শ্রীমদ্ভগবদ্‌গীতার মতো সংস্কৃতে শ্রীরামকৃষ্ণগীতা গ্রন্থটি প্রস্তুত করতে শুরু করেন। এবিষয়ে তাঁর মূল্যায়নটি বড় ভাল লাগে। তিনি বলছেন : “মাষ্টারমশাইয়ের বর্ণিত শ্রীরামকৃষ্ণকথামৃতের শৈলীটি যেন উপনিষদেরই মতো। সুন্দর, সাবলীল প্রাণবন্ত বর্ণনার ফাঁকে ফাঁকে ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের এক একটি উপদেশ—যেন এক রমণীয় অরণ্যে বিচরণ করতে করতে মাঝে মাঝে অতুলনীয় সৌন্দর্য্য ও সুগন্ধযুক্ত পুষ্পগুচ্ছ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। কিন্তু পরম পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীমহারাজের শ্রীরামকৃষ্ণ উপদেশের সংকলনটি যেন সেই নন্দনকাননের পুষ্পরাজি আহরণ করে একটি মনোরম, চিত্তাকর্ষক পুষ্পমাল্য গ্রথিত করে আমাদের জন্য সংর‌ক্ষিত করে রাখা হয়েছে—অবিকল শ্রীমদ্ ভগবদ্গীতার মতই।” এক দীর্ঘ সময়কাল ধরে ধীরে ধীরে স্বামী ব্রহ্মানন্দ-কৃত শ্রীরামকৃষ্ণ-বাণীর সংস্কৃত শ্লোকে রূপায়ণ শেষ করেন লেখক। বিষয়-ভাবকে যথাসম্ভব অক্ষুণ্ণ রেখে স্বামী পূর্ণানন্দ এই অপূর্ব অনুবাদকর্মটি সম্পন্ন করেছেন। সংস্কৃত শ্লোকের সঙ্গে রয়েছে অন্বয় ও বঙ্গানুবাদ। অধ্যায়গুলির নামকরণ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ-উপদেশ গ্রন্থের অনুসারেই করা হয়েছে। যেমন—আত্মজ্ঞান, ঈশ্বর, মায়া, অবতার, জীবের অবস্থাভেদ, গুরু, সংসারে থেকে সাধনা, সাধনার অধিকারী ও অন্তরায়, উত্তম ভক্ত, ব্যাকুলতা, ভক্তিভাব, ভগবৎকৃপা, কর্মফল, সর্বধর্মসমন্বয়, যুগধর্ম প্রভৃতি—যেগুলির সূচনা হয়েছে ‘শ্রীরামকৃষ্ণ উবাচ’ দিয়ে।...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in