পঞ্চেন্দ্রিয়ের দ্বারা যাহা কিছু স্পর্শ করিতেছি, মনের দ্বারা যাহা কিছু চিন্তা বা কল্পনা দ্বারা

পঞ্চেন্দ্রিয়ের দ্বারা যাহা কিছু স্পর্শ করিতেছি, মনের দ্বারা যাহা কিছু চিন্তা বা কল্পনা দ্বারা যাহা কিছু অনুমান ও গঠন করিতেছি, সকলই শক্তিসহায়ে, সকলই শক্তিরাজ্যের অধিকারভুক্ত। বেদমুখে দেবী বলিতেছেন : “ময়া সোঽন্নমত্তি যো বিপশ্যতি/ যঃ প্রাণিতি যঃ ঈং শৃণোত্যুক্তম্।/ অমন্তবো মাং ত উপ‌ক্ষিয়ন্তি/ শ্রুধি শ্রুত শ্রদ্ধিবং তে বদামি।।/… অহং রুদ্রায় ধনুরাতনোমি/ ব্রহ্মদ্বিষে শরবে হন্তবা উ।/ অহং জনায় সমদং কৃণোম্যহং/ দ্যাবাপৃথিবী আবিবেশ।।” (ঋগ্-দেবীসূক্ত)—অর্থাৎ, আমার দ্বারাই লোকে জীবিত রহিয়াছে, অন্নগ্রহণ এবং শ্রবণাদি করিতেছে। আমাকে যে অবহেলা করে সে বিনষ্ট হয়। তুমি শ্রদ্ধাবান, এইজন্য তোমাকে এসকল বলিতেছি। ব্রহ্মশক্তির হিংসক অসুরদিগের বধের নিমিত্ত ধনুর্ধারী রুদ্রের বাহুতে আমিই শক্তিরূপে অবস্থিতা ছিলাম। আমিই লোকর‌ক্ষার জন্য যুদ্ধকার্যে নিযুক্তা হই। আমিই আকাশ এবং পৃথিবীর মধ্যে প্রবিষ্টা হইয়া রহিয়াছি। শক্তিরাজ্যের পূর্বোক্ত অদ্ভুত বিস্তৃতি যিনি একবার উপলব্ধি করিয়াছেন, তিনি বুঝিয়াছেন যে, শক্তিপূজাতেই জগৎ চিরকাল ব্যাপৃত। শক্তি-আরাধনা ভিন্ন সংসারে অন্য কোনোরূপ উপাসনাই কখনো হয় নাই বা হইবে না। জড়, চেতন সকলেই যুগযুগান্তর ধরিয়া আজীবন শক্তি-আরাধনায় ব্যস্ত থাকিয়াও পূজা সাঙ্গ করিতে পারিতেছে না। পারিবে কি কোনো কালে? যদি পারে, সেও শক্তি সহায়ে— সৈষা প্রসন্না বরদা নৃণাং ভবতি মুক্তয়ে। প্রসিদ্ধি আছে, শক্তিপূজার ফল হাতে হাতে পাওয়া যায়, বিশেষত কলিতে; অন্য দেবতা সব নিদ্রিত; শক্তিপূজা-সম্বন্ধীয় তন্ত্রসমূহ ভিন্ন অন্য শাস্ত্রসমূহের নির্বিষ ভুজগের ন্যায় বৃথাস্ফালন। কথাটা সম্পূর্ণ না হউক, কতক সত্য বটে। কারণ, প্রত্যক্ষ দেখিতেছি, মানুষ জড় বা মনোরাজ্যে যাহা কিছু অধিকারলাভ করিয়াছে, সব শক্তি-আরাধনার ফলে। —স্বামী সারদানন্দ

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in