অধ্যাপক অচিন্ত্য বিশ্বাসের চার দশকের তথ্য সন্ধান, সঞ্চয়, পঞ্জীকরণ আর পুঁথিনির্ভর সম্পাদনার ফসল লোচনদাসের শ্রীচৈতন্যমঙ্গল ও পদাবলী সমগ্র গ্রন্থটি।

অধ্যাপক অচিন্ত্য বিশ্বাসের চার দশকের তথ্য সন্ধান, সঞ্চয়, পঞ্জীকরণ আর পুঁথিনির্ভর সম্পাদনার ফসল লোচনদাসের শ্রীচৈতন্যমঙ্গল ও পদাবলী সমগ্র গ্রন্থটি। বর্তমান গ্রন্থে লোচনদাসের ৭৪টি নতুন পদের সংযোজনের পাশাপাশি চৈতন্যমঙ্গল কাব্যটিও গ্রন্থকার সম্পাদনা করেছেন। বাংলা ভাষায় বৃন্দাবনদাসের চৈতন্যভাগবত ও কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত কাব্যের তুলনায় লোচনদাসের চৈতন্যমঙ্গল সম্পূর্ণ পৃথক কাব্য। লোচনদাস মূলত কাব্যটি গান করার উপযোগী করে রচনা করেছিলেন, যেজন্য প্রত্যেক পালার সূচনায় ধুয়া ও রাগ-রাগিণীর উল্লেখ রয়েছে। এর পাশাপাশি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিগত ফারাকও রয়েছে। চৈতন্যদেব যখন পূর্ণাঙ্গ অবতাররূপে স্বীকৃত হন তখন শ্রীখণ্ড, ফুলিয়া প্রভৃতি গ্রামের কায়স্থ ও বৈদ্য সমাজ গড়ে তোলেন ‘গৌরপারম্যবাদ’। তাঁদের ভাষ্যে রাধাকৃষ্ণের যুগলাবতার অপেক্ষা গৌরাঙ্গ বা চৈতন্যদেব গোপীজনবল্লভ শ্রীকৃষ্ণের রূপান্তর। ডঃ হিতেশ রঞ্জন সান্যালের মতে —“গৌর নাগরবাদের এতই প্রসার হয়েছিল যে, এই মত অনুসারে চৈতন্যদেবের জীবন ও সাধনার ব্যাখ্যা প্রয়োজন পড়ে। এই কারণে শ্রীখণ্ড পাটের শিষ্য লোচনদাস চৈতন্যমঙ্গল প্রণয়ন করেন।” গৌরপারম্যবাদের ভাবনা বৃন্দাবনের ষড় গোস্বামীর তত্ত্বভাবনার সঙ্গে মেলে না, সেজন্য লোচনদাসের ভাব ও মতাদর্শ বৈষ্ণব সমাজের মূল ধারা মেনে নিতে পারেনি। তবে লোচনদাসের এই কাব্য একসময় খুবই জনপ্রিয় ছিল, যে-কারণে তাঁর কাব্যে প্রচুর প্রক্ষেপ দেখে গেছে। জনপ্রিয়তার জন্য তাঁর প্রাপ্ত পুঁথির সংখ্যাও প্রচুর। ছাপার যুগেও এই পুঁথির প্রকাশ লক্ষ্য করা গেছে, তাই সাহিত্য খণ্ডটির বিপুল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্য থেকেই সম্পাদক মহোদয় আদর্শ পাঠ নির্মাণের সমূহ প্রচেষ্টা করেছেন, যার ফলে সহৃদয় পাঠকগণ মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ধূসর আলো-অাঁধারির অনেক জীবননাট্য নিশ্চিতরূপে দেখতে পাবেন।    লোচনদাসের শ্রীচৈতন্যমঙ্গল ও পদাবলী সমগ্র সম্পা : অচিন্ত্য বিশ্বাস, নিউ বইপত্র ৪৫০.০০

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in