শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জীবন ছিল সংগীতময়। ভাবের দ্যোতনা, তদনুসারী বাণী ও সুরের সম্মিলনে সংগীত তাঁর ভাবময়
শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জীবন ছিল সংগীতময়। ভাবের দ্যোতনা, তদনুসারী বাণী ও সুরের সম্মিলনে সংগীত তাঁর ভাবময় জীবনের সূচকটিকে সর্বদা ঈশ্বরাভিমুখী করে রেখেছিল। তিনি ব্রহ্মানন্দ-লাভের উপায় হিসাবে ভজনানন্দের ওপর বেশি জোর দিয়েছেন। বলেছেন : “ঈশ্বরের নামগুণগান করে যে আনন্দ তার নাম ভজনানন্দ। আর ভগবান দর্শনের যে আনন্দ তার নাম ব্রহ্মানন্দ।” “ভজন করতে করতে তাঁর যখন কৃপা হয়, তখন তিনি দর্শন দেন—তখন ব্রহ্মানন্দ।”১ শ্রীরামকৃষ্ণের সংগীতপ্রিয়তা তাঁর অন্তরঙ্গ পার্ষদ ও শিষ্যবর্গের মধ্যে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। তাঁরাও ভজন-কীর্তনকে সাধনার অঙ্গরূপে গ্রহণ করেন। তাই রামকৃষ্ণ সংঘের দিনচর্যায় নিয়মিত সংগীতের যেমন উপস্থিতি, তেমনি সংঘের প্রত্যেকটি উত্সব-অনুষ্ঠানের প্রধান অঙ্গ হিসাবে জড়িয়ে রয়েছে ভক্তিসংগীত। দেবদেবীর ভজন-কীর্তন ও স্তবস্তুতির সঙ্গে অষ্টোত্তরশতনাম-সংকীর্তনও সংঘের সংগীতপরম্পরায় একটি উল্লেখযোগ্য স্থান করে নেয়। শ্রীরামকৃষ্ণের মানসপুত্র স্বামী ব্রহ্মানন্দজীর আগ্রহাতিশয্যে সংঘে প্রথম শ্রীশ্রীরামনাম-সংকীর্তনের প্রচলন; এবং পরে শ্রীশ্রীশিবনাম-সংকীর্তনের প্রচলনেও তাঁরই অবদান পরিলক্ষিত হয়। স্বামী ব্রহ্মানন্দজীর ‘শিব অক্ষরমালা স্তোত্রম্’ শ্রবণ—মাদ্রাজ (অধুনা চেন্নাই) রামকৃষ্ণ মঠের তত্কালীন অধ্যক্ষ স্বামী শর্বানন্দের কাতর প্রার্থনায় স্বামী ব্রহ্মানন্দজী সেখানে নবনির্মিত ছাত্রাবাসের দ্বারোদ্ঘাটন করতে ১৯২১ সালের ১৮ এপ্রিল ভুবনেশ্বর থেকে গুরুভ্রাতা স্বামী শিবানন্দজী ও অন্যদের সঙ্গে নিয়ে রওনা দেন মাদ্রাজের পথে। ওয়ালটেয়ারে (বর্তমানে বিশাখাপত্তনম) কয়েকদিন বিশ্রামান্তে ২৫ এপ্রিল মাদ্রাজ পৌঁছান। ১০ মে তিনি ছাত্রগণের জন্য নবনির্মিত বিরাট অট্টালিকার দ্বারোদ্ঘাটন সমারোহ সমাপ্ত করে ১৩ জুন সন্ধ্যাবেলা গুরুভ্রাতা সমভিব্যাহারে কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোর (বেঙ্গালুরু) আশ্রমের উদ্দেশে যাত্রা করেন। পরদিন সকালে তাঁরা আশ্রমে পৌঁছান এবং চার মাস সেখানে অবস্থান করেন। স্বামী ব্রহ্মানন্দজীর এই শেষবার দাক্ষিণাত্য ভ্রমণ।২ ইতিপূর্বে ১৯০৯ সালের প্রারম্ভে ব্যাঙ্গালোরে নতুন জমিতে নির্মিত রামকৃষ্ণ আশ্রমের দ্বারোদ্ঘাটন করতে এসে স্বামী ব্রহ্মানন্দজী ভক্তদের কণ্ঠে ‘নাম রামায়ণম্’ শুনে খুব প্রসন্ন হয়েছিলেন এবং স্বামী বিবেকানন্দের ইচ্ছার কথা স্মরণ করে বাংলার ঘরে ঘরে ত্যাগ, ভক্তি ও জ্ঞানের আদর্শমূর্তি শ্রীমহাবীরের পূজা ও রামনাম-সংকীর্তনের প্রচলন করতে সচেষ্ট হন। ফলস্বরূপ সংঘের সর্বত্র শ্রীশ্রীরামনাম-সংকীর্তনের প্রচার ও প্রসার ঘটে। এইবারে ব্যাঙ্গালোরে অবস্থানকালে স্বামী ব্রহ্মানন্দজী ও স্বামী শিবানন্দজী কয়েকজন ভক্তের কণ্ঠে শিবনামকীর্তন...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
