শ্রীরামকৃষ্ণের সমকালীন জননেতা কৃষ্ণদাস পালকে শ্রীরামকৃষ্ণ জিজ্ঞাসা করেছিলেন : “মানুষের কি কর্তব্য?”
শ্রীরামকৃষ্ণের সমকালীন জননেতা কৃষ্ণদাস পালকে শ্রীরামকৃষ্ণ জিজ্ঞাসা করেছিলেন : “মানুষের কি কর্তব্য?” উত্তরে কৃষ্ণদাস পাল বলেছিলেন : “জগতের উপকার করব।” শ্রীরামকৃষ্ণ মৃদু ভর্ৎসনা করে বলেছিলেন : “হ্যাঁগা তুমি কে? আর কি উপকার করবে? আর জগৎ কতটুকু গা, যে তুমি উপকার করবে?”১ বাস্তবিক, জগতের উপকার করতে পারেন একমাত্র ভগবান। তবে আমরা কী করতে পারি? আমরা ‘শিবজ্ঞানে জীবের সেবা’ করতে পারি। একদিন শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে বৈষ্ণব ধর্মমতের কথা আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছিলেন : মানুষের কর্তব্য হচ্ছে ‘নামে রুচি, জীবে দয়া, বৈষ্ণব-পূজন’। ‘নামে রুচি’ ও ‘বৈষ্ণব-পূজন’ শব্দবন্ধ স্বাভাবিকভাবে উচ্চারিত হলেও ‘জীবে দয়া’ শব্দবন্ধ উচ্চারণের সময় শ্রীরামকৃষ্ণের ভাবান্তর হলো। স্বল্পকাল পরে তিনি বললেন : “জীবে দয়া?… কীটাণুকীট তুই জীবকে দয়া করবি? দয়া করবার তুই কে? না, না, জীবে দয়া নয়। শিবজ্ঞানে জীবের সেবা।”২ সেব্য সম্পর্কে শ্রীরামকৃষ্ণ আরো একবার বলেছিলেন : “এরা সব শিব, এরা সব নারায়ণ। এই নারায়ণবুদ্ধিতে, এই শিববুদ্ধিতে এদের সেবা করতে হবে।”৩ ভারত পরিক্রমার শেষপর্বে স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯২ সালের শেষ সপ্তাহে কন্যাকুমারীতে ভারতের শেষ শিলাখণ্ডে বসে ধ্যানমগ্ন হলেন। তিনি অনুভব করলেন—যতদিন পর্যন্ত না ভারতের জনগণের উন্নতি হবে ততদিন কিছুই হতে পারে না। কিন্তু সেই উন্নতি হবে ধর্মের ভিতর দিয়ে, ধর্মকে বাদ দিয়ে নয়। তারপর অদ্বৈতবেদান্তের বার্তা বহন করে তিনি পাশ্চাত্যে গমন করলেন। বিবেকানন্দ পাশ্চাত্যে আধ্যাত্মিকতার অভাব এবং অন্যদিকে ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষকে আকণ্ঠ দারিদ্রে ডুবে থাকতে দেখেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন পাশ্চাত্যের সঙ্গে প্রাচ্য তথা ভারতবর্ষের শ্রদ্ধাপূর্ণ বিনিময়। ভারত পাশ্চাত্যকে আধ্যাত্মিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ করবে, অন্যদিকে পাশ্চাত্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভারতের সাধারণ মানুষের ঐহিক উন্নতিবিধানে সহায়ক হবে। বিবেকানন্দের মাধ্যমে একদিকে যেমন পাশ্চাত্যে আধ্যাত্মিকতার বীজ উপ্ত হয়েছিল, তেমনই তাঁর চেষ্টায় ভারতের উন্নতির বীজও রোপিত হয়েছিল। ১৮৯৭ সালের ১ মে কলকাতার বলরাম বসুর বাড়িতে (বর্তমানে বলরাম মন্দির) রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যে বার্তা তাঁর অনুগামীদের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন তা বস্তুতপক্ষে অভিনব। বিবেকানন্দ চেয়েছিলেন, যার যা অভাব আছে, যে ক্ষেত্রে হোক না কেন—বিদ্যার অভাব,...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in