জপাট গিয়ে এড়োয়ালীর রায়চৌধুরীরা আজ নিতান্তই সাধারণ মানুষের স্তরে নেমে এসেছেন,
[পূর্বানুবৃত্তি : পৌষ ১৪২৯ সংখ্যার পর] ।।৪।। রাজপাট গিয়ে এড়োয়ালীর রায়চৌধুরীরা আজ নিতান্তই সাধারণ মানুষের স্তরে নেমে এসেছেন, কিন্তু অতীতে সম্পত্তি ভাগাভাগির পরেও যে তাঁদের অর্থকৌলীন্য ভালই বজায় ছিল তা বোঝা যায় তিন তরফের পুজোর সংখ্যা থেকে। ছয় আনির পুেজা হয় চারটি, বড় পাঁচ আনিরও চারটি এবং ছোট পাঁচ আনির তিনটি। একটি পুজো হয় দুই পাঁচ আনির যৌথ দায়িেত্ব, অর্থাৎ সেই পুজোটিতে এক বছর বড় পাঁচ আনির পালা পড়ে আর পরের বছর ছোট পাঁচ আনির। এছাড়াও আছে দৌহিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় বংশের একটি পুজো। এখানেই প্রশ্ন জাগে, একই গ্রামে এক এক তরফের এতগুলো করে পুজো কেন? উত্তরটা সম্ভবত এই যে, অতীতে প্রত্যেক তরফের মধ্যে আবার যখন সম্পত্তি ভাগ হতো তখন সেই নতুন শরিক একটা নতুন কালীঘর প্রতিষ্ঠা করে নিজের মান এবং পুজোর সংখ্যাবৃদ্ধি করত। অর্থাৎ নতুন শরিকের নতুন পুজোর মধ্যে তার আর্থিক সংগতির একটা নিরুচ্চার ঘোষণাও লুকিয়ে থাকত। কালক্রমে, মনে হয়, আর্থিক অবস্থার অবনতির ফলে এই প্রবণতা বন্ধ হয়। বর্তমানে রায়চৌধুরীদের তিন তরফ মিলিয়ে বারোটি এবং দৌহিত্র পরিবারের পুজো ধরে কালীর মোট সংখ্যা তেরো। এই তেরোটি কালীর প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ‘ঘর’ বা মন্দির আছে। ছয় খড়গ্রামে আমাদের জন্য দুটো গোরু বা মোষের গাড়ি অপেক্ষা করত। তার ছইয়ের (ওখানকার ভাষায় ‘টপর’) মধ্যে মোটা গদির মতো করে খড় বিছিয়ে তার ওপরে শতরঞ্চি পাতা থাকত। পানা আর ধনা নামে দুই ভাই গাড়ি নিয়ে আসত। তাদের ভাল নাম ছিল প্রাণকেষ্ট আর ধনঞ্জয়। কাহারপাড়ায় বাড়ি, জমিদারবাবুদের জমি দিয়ে বসানো প্রজা। এককালে এই কাহাররা বাবুদের পালকি বইত, দু-মন বোঝা মাথায় নিয়ে তাঁদের গোযানের পিছন পিছন পনেরো-বিশ মাইল হেঁটে যেত, আবার সময়ে-অসময়ে লাঠিও ধরত। পানা-ধনা ছিল আমাদের খুব ভাবের লোক। মাকে তারা ‘বাবুদিদি’ বলত, আর আমাদের শোনাত বাদশাহি সড়ক, আখড়াইয়ের দিঘি কিংবা দাদাপিরের মাজারের নানান গল্প। গ্রামের শুরু চাতোর থেকে। সম্ভবত ‘চত্বর’ শব্দটা লোকমুখে চাতোর হয়েছে। একটা বিরাট চত্বর, সপ্তাহে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in