রথযাত্রা প্রাথমিকভাবে ওড়িশা, বিশেষ করে পুরী অঞ্চলের প্রধান উৎসব হিসাবে স্বীকৃত হলেও কমবেশি সারা ভারত জুড়েই এর প্রচলন রয়েছে। বিষ্ণুর উপাসক তথা বৈষ্ণবদের ধর্মতত্ত্ব অনুসারে জগন্নাথদেবই স্বয়ং বিষ্ণু এবং বলরাম হলেন বিষ্ণুর অবতার।
“রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম,ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি,মূর্তি ভাবে আমি দেব—হাসে অন্তর্যামী।”(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ‘ভক্তিভাজন’, কণিকা) প্রাক্কথন রথযাত্রা প্রাথমিকভাবে ওড়িশা, বিশেষ করে পুরী অঞ্চলের প্রধান উৎসব হিসাবে স্বীকৃত হলেও কমবেশি সারা ভারত জুড়েই এর প্রচলন রয়েছে। বিষ্ণুর উপাসক তথা বৈষ্ণবদের ধর্মতত্ত্ব অনুসারে জগন্নাথদেবই স্বয়ং বিষ্ণু এবং বলরাম হলেন বিষ্ণুর অবতার। গীতগোবিন্দম্-এ বিষ্ণুর দশ অবতার বর্ণনায় তাই বলরামকে অবতার হিসাবে দেখানো হয়েছে। আবার শ্রীমদ্ভাগবত-এ বলা হয়েছে, কৃষ্ণের ছোট বোন হলেন সুভদ্রা (তিনি আবার মহাভারতের তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনের স্ত্রীও বটে) পুরীর সমুদ্রগর্জনে ভীত হয়ে দুই দাদা জগন্নাথ ও বলরামের মাঝে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ভাগবতের ঐ বর্ণনা অনুসারেই তৈরি হয়েছিল পুরীর মন্দিরের মূর্তিত্রয় এবং তাঁদের নিয়েই আষাঢ় মাসে অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। হিন্দুধর্মের আর পাঁচটা উৎসবের মতো রথযাত্রাতেও আর্য ও অনার্য সংস্কৃতির মিশ্রণ ঘটেছে। শাস্ত্রগ্রন্থ ও কিংবদন্তি অনুসারে বলা হয়ে থাকে, কৃষ্ণের দেহাবসানের পরে তাঁর দেহ সৎকারের সময়ে সমুদ্রের ঢেউয়ে চিতা নিভে অর্ধদগ্ধ অস্থি ও কাঠগুলি ভেসে যায়। আদিম শবর জাতির নেতা বিশ্বাবসু সেগুলি সংগ্রহ করে গভীর অরণ্যে এনে পুজো করতেন। সেই সংবাদ জেনে পুরী অঞ্চলের রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ঐ অর্ধদগ্ধ অস্থি-কাষ্ঠ জঙ্গল থেকে অপহরণ করেন। পরে বিষ্ণুর আদেশে বিশ্বকর্মা এক রুদ্ধদ্বার কক্ষে নিমকাঠ এবং ঐ অস্থি-কাষ্ঠ দিয়ে নীলমাধবের মূর্তি নির্মাণ আরম্ভ করেন। তবে শর্ত ছিল, মূর্তির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঐ ঘরে প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু দেরি হচ্ছে দেখে রাজা অধৈর্য হয়ে ঐ কক্ষে প্রবেশ করলে বিশ্বকর্মা মূর্তির হাত-পা না তৈরি করেই চলে যান। সেই অর্ধসমাপ্ত মূর্তিত্রয় জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরাম পূজিত হয়ে আসছেন বহু যুগ ধরে।জগন্নাথের প্রধান উৎসব রথযাত্রা। কিংবদন্তি অনুসারে, আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে জগন্নাথদেব রথে চড়ে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের পত্নী গুণ্ডিচার বাড়ি যান এবং সাত দিন পরে সেখান থেকে আবার নিজের মন্দিরে ফিরে আসেন। স্থানীয়ভাবে এই যাত্রা ‘মাসির বাড়ি যাওয়া’ নামে পরিচিত।...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in