“শ্রীরামকৃষ্ণ আজ রামচন্দ্রের নূতন বাগান দেখিতে যাইতেছেন। ২৬শে ডিসেম্বর, ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ,

“শ্রীরামকৃষ্ণ আজ রামচন্দ্রের নূতন বাগান দেখিতে যাইতেছেন। ২৬শে ডিসেম্বর, ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ, (বুধবার, ১২ই পৌষ, কৃষ্ণা দ্বাদশী)। “রাম ঠাকুরকে সাক্ষাৎ অবতারজ্ঞানে পূজা করেন। দক্ষিণেশ্বরে প্রায় মাঝে মাঝে আসেন ও ঠাকুরকে দর্শন ও পূজা করিয়া যান। সুরেন্দ্রের বাগানের কাছে তিনি নূতন বাগান করিয়াছেন। তাই শ্রীরামকৃষ্ণ দেখিতে যাইতেছেন। “গাড়িতে মণিলাল মল্লিক, মাস্টার ও আরও দুই-একটি ভক্ত আছেন। মণিলাল মল্লিক ব্রাহ্মসমাজভুক্ত। ব্রাহ্মভক্তেরা অবতার মানেন না।”এই পর্যন্ত বর্ণনা দিয়ে মাস্টারমশাই শ্রীরামকৃষ্ণ-ব্যাখ্যাত অবতারতত্ত্বের অবতারণা করেছেন গাড়ির মধ্যেই। “শ্রীরামকৃষ্ণ (মণিলালের প্রতি)—তাঁকে ধ্যান করতে হলে, প্রথমে উপাধিশূন্য তাঁকে ধ্যান করবার চেষ্টা করা উচিত। তিনি নিরুপাধি, বাক্যমনের অতীত। কিন্তু এ-ধ্যানে সিদ্ধ হওয়া বড় কঠিন। “তিনি মানুষে অবতীর্ণ হন, তখন ধ্যানের খুব সুবিধা। মানুষের ভিতর নারায়ণ। দেহটি আবরণ, যেন লণ্ঠনের ভিতর আলো জ্বলছে। অথবা সার্সীর ভিতর বহুমূল্য জিনিস দেখছি।” যাঁর বাগান দেখতে যাচ্ছেন তাঁর স্থির সিদ্ধান্ত—শ্রীরামকৃষ্ণ অবতার। আর মণিলালের অবতারে বিশ্বাস নেই। তাঁর জন্য স্বয়ং অবতার অবতারপ্রসঙ্গ করছেন, যাতে তাঁর হৃদয়ে চেতনা জাগ্রত হয়। বাক্যমনাতীত থেকে বাক্যমনোগোচর ঈশ্বরে মণি মল্লিকের ধ্যান হয়। দেখতে দেখতে রামের বাগানে গাড়ির প্রবেশ। তারপরেই মাস্টারমশাইয়ের অনবদ্য বর্ণনা শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতিটি পদক্ষেপের—“গাড়ি হইতে অবতরণ করিয়া বাগানে পৌঁছিয়া রাম ও ভক্তগণের সঙ্গে প্রথমে তুলসী-কানন দর্শন করিতে ঠাকুর যাইতেছেন। “তুলসী-কানন দেখিয়া ঠাকুর দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া বলিতেছেন, ‘বাঃ! বেশ জায়গা, এখানে বেশ ঈশ্বরচিন্তা হয়।’ “ঠাকুর এইবার সরোবরের দক্ষিণের ঘরে আসিয়া বসিলেন। রামচন্দ্র থালায় করিয়া বেদানা, কমলালেবু ও কিঞ্চিৎ মিষ্টান্ন আনিয়া ঠাকুরের কাছে দিলেন। ঠাকুর ভক্তসঙ্গে আনন্দ করিতে করিতে ফলাদি খাইতেছেন। “কিয়ৎক্ষণ পরে সমস্ত বাগান পরিক্রমা করিতেছেন।”১ শ্রীরামকৃষ্ণ যে-তুলসীকানন দর্শন করে মন্তব্য করেছিলেন, ঠিক ঐ পূত স্থানে শ্রীরামকৃষ্ণের পরম পবিত্র পূতাস্থি সমাহিত করা হয়েছিল শুভ জন্মাষ্টমীতে—২৩ অগস্ট ১৮৮৬। পরবর্তিকালে ঐ পুণ্যস্থানে স্থাপিত হয়েছিল শ্রীরামকৃষ্ণের মন্দির। প্রথমে গর্ভমন্দির, পরে চারিদিকে খোলা আর্চযুক্ত ছোট নাটমন্দির (বর্তমানে নেই)। এই নাটমন্দিরের শুভ উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং অবতারবরিষ্ঠসঙ্গিনী সর্বদেবদেবীস্বরূপিণী শ্রীমা সারদাদেবী। শুভ দিনটি ছিল ১৯০১ সাল, শুভ জন্মাষ্টমী।...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in